গর্ভবতী নারীদের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে অন্যতম সাধারণ সমস্যা হলো অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা। গর্ভাবস্থায় শরীরে ক্যালরির সঙ্গে লৌহ বা আয়রনের চাহিদা বাড়তে থাকে। চাহিদা অনুযায়ী আয়রনের অভাব পূরণ না হলে শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়।
গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতার লক্ষণ:
গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতার কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে। সেগুলো হলো:
ক্লান্তি ভাব ও দুর্বলতা
মাথা ঘোরা
শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হওয়া
দ্রুত বা অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন
বুকে ব্যথা
হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া
ঠোঁটের কোণে ক্ষত
জিহ্বায় ঘা
মানসিক অবসন্নতা ও খিটখিটে মেজাজ
গর্ভকালীন রক্তশূন্যতায় যেসব ক্ষতি হয়:
রক্ত কম থাকলে মা ও শিশুর পুষ্টি কম হয়। গর্ভবতী অবস্থায় ও ডেলিভারির সময় নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। মা ও বাচ্চা উভয়ের মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়। গর্ভকালীন রক্তস্বল্পতার কারণে শিশুর বৃদ্ধিও কম হতে পারে। কারণ রক্তই মায়ের শরীর থেকে শিশুর কাছে পুষ্টি পৌঁছে দেয়। তাই মায়ের রক্তস্বল্পতায় শিশু পুষ্টি কম পেতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মায়ের রক্তস্বল্পতা সংশ্লিষ্ট রোগ সরাসরি শিশুর শরীর ও ব্রেইনের বৃদ্ধি ও বিকাশকে ব্যাহত করে। অনেক সময় রক্তস্বল্পতার কিছু নির্দিষ্ট কারণের সঙ্গে শিশুর নার্ভ বা স্নায়ুর বিকাশগত সমস্যা হতে পারে। রক্ত কম থাকলে মা ও শিশুর পুষ্টি কম হয়। এ সময় মা ও শিশু উভয়ের মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়।
প্রতিকার:
গর্ভধারণের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
রক্তে হিমোগ্লোবিন শতকরা ১০ গ্রামের কম থাকলে চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে।
কলিজা, মাংস, ডিম, সবুজ শাকসবজি, মটরশুঁটি, শিম, কলা, পেয়ারা, আনারের মতো আমিষ, ভিটামিন ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে।
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট খেতে হবে।
কোনো সংক্রমণ থাকলে দ্রুত চিকিত্সা করাতে হবে। গর্ভকালীন সময়ে নিয়মিত চেকআপ ও শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতি তিন মাসে অন্তত একবার করে হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করাতে হবে।