পপুলেশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ সায়েন্সেস

একই প্রোগ্রামের যমজ ভাই যমজ বোনের গল্প

প্রকাশ: ডিসেম্বর ০৪, ২০২৩

এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন জমজ ভাই-বোন। তবে দুই ভিন্ন পরিবারের যমজ ভাই-যমজ বোন একই সঙ্গে পড়াশোনা করছেন এমন ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না। এমন বিরল ঘটনাই দেখা গেল ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সোশ্যাল রিলেশনস বিভাগের পপুলেশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ সায়েন্সেস (পিপিএইচএস) প্রোগ্রামে। পৃথক দুটি পরিবারের যমজ ভাই ও বোন বলেছেন এই প্রোগ্রাম বেছে নেয়ার কারণসহ তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা।

দেশে সিএসই, আইটি, বিবিএর মতো সাবজেক্টগুলোর প্রতি শিক্ষার্থীদের ঝোঁক সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে পপুলেশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ সায়েন্সেস নামে ভিন্ন একটি সাবজেক্ট চোখে পড়ল। ইন্টারনেট ঘেঁটে জানতে পারি দেশে-বিদেশে এর চাহিদা ব্যাপক। এ বিষয়ে পড়ে ক্যারিয়ার গড়ার সঙ্গে মানুষের সেবাও নিশ্চিত করা যায়। একটি সুস্থ সম্প্রদায় গড়তেও ভূমিকা রাখা যায়। আগ্রহ আরো বেড়ে গেল। জানতে পারি এই বিভাগে পড়াশোনা করে বেসরকারি সেবা খাত, এনজিও, ইউএন অর্গানাইজেশন, রিসার্চ অর্গানাইজেশন, এম্বাসি, মিডিয়া এমনকি ব্যাংক সেক্টরেও কাজ করা সম্ভব। অবশেষে একটাই জব সেক্টর টার্গেট করে ভর্তি হয়ে গেলাম এ বিষয়ে। বাংলাদেশেই একমাত্র  ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে রয়েছে জনসংখ্যা এবং জনস্বাস্থ্যের সমন্বয়ে পিপিএইচএস সাবজেক্ট। সাশ্রয়ী মূল্যের টিউশন ফির পাশাপাশি অন্যান্য স্কলারশিপ সুযোগ-সুবিধা বিশ্লেষণ করে বেছে নিই ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি। শুরুতে ভাবতাম কীভাবে ইউনিভার্সিটি জীবন পার করব কিন্তু যখন থেকে আমি ক্লাস শুরু করি অভিজ্ঞতার ঝুলি বেশ রোমাঞ্চকর। পড়াশোনার পাশাপাশি রয়েছে এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস, খেলাধুলার পাশাপাশি রয়েছে ক্যারিয়ার গঠনের নানা প্লাটফর্ম। 

ইয়াসিন আহাদ

একটি সিদ্ধান্ত মানুষের জীবন বদলে দেয়। আমি বিশ্বাস করি, এ সিদ্ধান্ত আমার ভবিষ্যৎ জীবন বদলে দেবে। আমার ইচ্ছা ছিল বিজ্ঞানে পড়াশোনার। কিন্তু সেটা হয়ে ওঠেনি, মানবিকের শিক্ষার্থী ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির খোঁজ নিতে গিয়ে নতুন এক সাবজেক্ট পেলাম যেটা অনেকটা সায়েন্স রিলেটেড সাবজেক্ট। বিস্তারিত জানার পর এই সাবজেক্টে পড়ার আগ্রহ আরো বেড়ে যায়। অন্যান্য পাবলিক, প্রাইভেট ভার্সিটিতে শুধু পাবলিক হেলথ বা পপুলেশন সায়েন্স সাবজেক্ট আছে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রথম ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে পপুলেশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ নিয়ে একসঙ্গে পড়ার সুযোগ। এখন হয়তো বাংলাদেশে এ সাবজেক্ট এত জনপ্রিয় না। কিন্তু আমি মনে করি, ভবিষ্যতে এটি একটি চাহিদাপূর্ণ সাবজেক্ট হবে। এছাড়া দেশের সরকারও এ খাতে গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা অনেক বেশি এবং আমরা অতিরিক্ত জনসংখ্যার জন্য অনেক সংকটের সম্মুখীন। জনস্বাস্থ্যে দেশের অগ্রগতির জন্য এ বিষয়টি উদ্ভাবনী ভূমিকা রাখতে পারে। অন্যান্য দেশে এ সাবজেক্টের অনেক গুরুত্ব দেয়া হয় এবং এই সাবজেক্টের গ্র্যাজুয়েটদের চাহিদাও অনেক বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফের  মতো আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করা আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। তাই এ বিষয়টি নিয়ে পড়া। 

ইয়াসিন আরাফ

শুরু থেকেই ভাবনা ছিল আমি এমন একটি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করব, গ্র্যাজুয়েশন শেষে যেন মনে না হয় কী পড়েছি? কেন পড়েছি? পপুলেশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ সায়েন্সেসের বিশেষত্ব হলো এই প্রোগ্রামের সব কোর্স টপিক আমরা নিজের জীবনে প্রয়োগ করতে পারি। ঠিক একইভাবে আমাদের লক্ষ্য জনসাধারণের জন্য কাজ করা। একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা জনসংখ্যা। আর এ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পাবলিক হেলথে ভূমিকা অপরিসীম। প্রোগ্রামটি নতুন হলেও কর্মক্ষেত্রে এর অনেক চাহিদা রয়েছে দেশে-বিদেশে। বাংলাদেশে এনজিও থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি অনেক চাকরির সুযোগ রয়েছে এ বিষয়ে গ্র্যাজুয়েটদের। আমার স্বপ্ন স্নাতক শেষ করে নিজেকে একজন মহামারী-বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার।

দিশা মণ্ডল

এইচএসসি পরীক্ষা শেষে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি আমার পছন্দের বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন করব। আমার এ সিদ্ধান্তে মা-বাবার পূর্ণ সমর্থন ছিল। ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি, আমার বাবা একজন ডাক্তার হিসেবে কীভাবে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন। সেখান থেকেই আমি অনুভব করেছি মানুষের জীবনে সুস্বাস্থ্যই বড় সম্পদ। একজন সুস্থ মানুষই একজন সুখী মানুষ। একজন রোগী চিকিৎসার মাধ্যমে হয়তো সুস্থ হতে পারে, তবে যদি তার রোগই না হয় তাহলে তার থেকে ভালো আর কী হতে পারে! প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ শ্রেয়। এ চিন্তাধারা থেকেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি পাবলিক হেলথ নিয়ে পড়ার। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে পপুলেশন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ সায়েন্সেস প্রোগ্রামে ভর্তি হই। অনেকে মনে করেন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়া অনেক ব্যয়বহুল। এ ইউনিভার্সিটিতে মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য মেরিট স্কলারশিপসহ আরো বিভিন্ন স্কলারশিপের সুব্যবস্থা রয়েছে, যার মাধ্যমে একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে অর্থ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। আমি এখন পর্যন্ত ভালো সিজিপিএ নিয়ে মেরিট স্কলারশিপে পড়ছি। ভবিষ্যতে আমি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় কাজ করতে চাই।

রিয়া মন্ডল


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫