তৃতীয় প্রান্তিকে থাইল্যান্ডের প্রবৃদ্ধি কমেছে

প্রকাশ: নভেম্বর ২১, ২০২৩

বণিক বার্তা ডেস্ক

তৃতীয় প্রান্তিকে থাইল্যান্ডের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অপ্রত্যাশিতভাবে কমেছে। দেশটির নতুন সরকারের ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের হ্যান্ডআউট (নগদ সহায়তা) প্রোগ্রাম এ শ্লথগতির পেছনে ভূমিকা রেখেছে। খবর ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে।

ন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল (এনইএসডিসি) গতকাল জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকে তিন মাসে থাইল্যান্ডের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) এক বছর আগের তুলনায় ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে, যা ব্লুমবার্গ সমীক্ষায় দেখানো ২ দশমিক ২ শতাংশের মাঝারি পূর্বাভাস এবং দ্বিতীয় প্রান্তিকের ১ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির চেয়ে কম।

প্রান্তিকওয়ারি থাইল্যান্ডের অর্থনীতি দশমিক ৮ শতাংশ প্রসারিত হয়েছে। যদিও পূর্বাভাস ছিল ১ দশমিক ৩ শতাংশ। এছাড়া চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে দেশটির অর্থনীতির উন্নতি হয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ।

নেতিবাচক এমন চিত্র এনইএসডিসিকে ২০২৩ সালে জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস ২ দশমিক ৫ শতাংশে স্থির করতে প্ররোচিত করেছে। আগে এ পূর্বাভাস ছিল ২ দশমিক ৫ থেকে ৩ শতাংশ।

এনইএসডিসি প্রধান দানুচা পিচায়ানন এক বিফ্রিংয়ে বলেন, ‘সরকারের উচিত ‌আসন্ন ঝুঁকি মোকাবেলার প্রস্তুতি হিসেবে পর্যাপ্ত আর্থিক সংস্থান তৈরি করা। এমনকি পর্যটন খাতের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য।’

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ থাইল্যান্ড। দেশটির অর্থনীতির অন্যতম উৎস পর্যটন খাত। চলমান রফতানি ও সরকারি ব্যয়ের মন্দার মধ্যেও প্রতিবেশী অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে দেশটি।

হতাশাজনক অভ্যন্তরীণ অবস্থার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সরকার একটি বড় পরিকল্পনার দিকে অগ্রসর হতে চাইছে। যদিও কিছু জ্যেষ্ঠ ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ এর বিরোধিতা করছেন। স্রেথা প্রশাসন দেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এক দশক ধরে এটি গড়ে ২ শতাংশের নিচে।

নিম্ন প্রবৃদ্ধির চক্র থেকে অর্থনীতিকে বের করে আনতে প্রধানমন্ত্রী স্রেথার কৌশলের কেন্দ্রবিন্দু হলো একটি ‘‌ডিজিটাল ওয়ালেট প্রোগ্রাম’ চালু করা। এর মাধ্যমে ১৬ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রায় পাঁচ কোটি থাই নাগরিক আগামী বছরের মে মাস থেকে ২৮৫ ডলার এককালীন নগদ অর্থ সহায়তা পাবে। ঋণের মাধ্যমে এ অর্থায়নের ব্যবস্থা করা হবে। যদিও এটি রাজস্ব ঘাটতি বাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া উদ্যোগটি থাইল্যান্ডের বিরোধী দলগুলোর মধ্যেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

দানুচার আশা, থাইল্যান্ডের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগামী বছর ২ দশমিক ৭ থেকে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত হতে পারে। এক্ষেত্রে রফতানি, ব্যক্তিগত বিনিয়োগ, ব্যক্তিগত ব্যয় ও পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধার প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে। এ পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে হ্যান্ডআউট প্রোগ্রামের বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হয়নি।

এনইএসডিসির মতে, সরকার চলতি বছর পর্যটন খাতে ২ কোটি ৮০ লাখ বিদেশী পর্যটকের আগমন এবং সেখান থেকে ১ লাখ ৩ হাজার কোটি বাত (থাই মুদ্রা) রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। পরের বছর এ খাতে ৩ কোটি ৫০ লাখ বিদেশী পর্যটকের আগমন এবং ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি বাত রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা উচিত।

দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি বছর সুদহার বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার নিচে থাকা সত্ত্বেও ঋণ নেয়ার খরচ এক দশকের সর্বোচ্চ করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষের দিকে মূল সুদহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ব্যাংক অব থাইল্যান্ড।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫