সিপিডির প্রতিবেদন

জ্বালানি আমদানিতে বিপিসি ও পেট্রোবাংলার বকেয়া ৯৭ কোটি ডলার

প্রকাশ: নভেম্বর ১৭, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

জ্বালানি তেল ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে সরবরাহকারীদের কাছে ৯৭ কোটি ডলার বকেয়া পড়েছে বাংলাদেশের। রাষ্ট্রায়ত্ত আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ও পেট্রোবাংলার কাছে এ অর্থ পাবে বিদেশী তেল-গ্যাস সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো। এর মধ্যে বিপিসির কাছে সরবরাহকারীদের বকেয়া ৬৭ কোটি ডলার ও পেট্রোবাংলার কাছে এলএনজি সরবরাহকারীদের বকেয়া পড়েছে ৩০ কোটি ডলার।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল এ তথ্য জানানো হয়। ‘কারেন্টস অব চেঞ্জ: কোয়ার্টারলি ব্রিফ অব দ্য পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি সেক্টর অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করা হয়। 

সংস্থাটি তিন মাস পরপর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কার্যক্রম ও পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছে। গতকাল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম কোয়ার্টারের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এটি উপস্থাপন করেন সিপিডির রিসার্চ অ্যাসোসিয়েটস হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তি।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘আমদানি প্রবণতার কারণে পেট্রোবাংলা ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের বকেয়া বাড়ছে। পেট্রোবাংলা ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের কাছে ছয় মাসের জন্য ৫০ কোটি ডলার সিন্ডিকেট ঋণ নিচ্ছে। সিন্ডিকেট ঋণ সাময়িক সময়ের জন্য স্বস্তি মনে হলেও বিপদ বাড়াবে। কারণ তখন সুদও দিতে হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘দেশীয় জ্বালানি উত্তোলনে গুরুত্ব না দিয়ে আমদানিতে জোর দেয়ায় আজকের এ সংকট। পুরনো গ্যাস কূপের সংস্কার যথাসময়ে হলে এ সংকট হতো না। যত দ্রুত সম্ভব আমদানি কমানোর উদ্যোগ নেয়া জরুরি। 

পাশাপাশি বিকল্প জ্বালানির দিকে যেতে হবে। তাহলে ডলার সংকট দূর হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে সিপিডির এ গবেষণা পরিচালক বলেন, ‘বিদ্যুৎ কেন্দ্র একসময় উদ্বৃত্ত ছিল, এখন বাহুল্য হয়ে গেছে। ৫১ শতাংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বেকার পড়ে থাকছে, যা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। পাশাপাশি পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তি নবায়ন করা উচিত হবে না।’

সংস্থাটির প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এলএনজি আমদানির নীতি সিদ্ধান্তে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কাতারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি আমদানির চুক্তি করা হয়েছে। আরো দুটি ভাসমান টার্মিনাল স্থাপনের চুক্তি করা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ সরবরাহসংক্রান্ত বিষয়ে বলা হয়, বিদ্যুতের সবচেয়ে কম ব্যবহার হচ্ছে ময়মনসিংহ ও রংপুর অঞ্চলে। তবে গত তিন মাসে এসব অঞ্চলেই বেশি লোডশেডিং দেয়া হয়েছে। লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু উৎপাদন ঘাটতি নয়, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণেও লোডশেডিং বেড়েছে। গত জুনে সঞ্চালন সমস্যার কারণে প্রায় ২ হাজার ৪১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল। আগস্টে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল ৫ হাজার ১৬ ঘণ্টা।

অনুষ্ঠানে সঞ্চালন খাতের অগ্রগতি, বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ উৎপাদনে মেগাওয়াটপ্রতি ব্যয়, ২০৩০ ও ২০৫০ সাল নাগাদ দেশের জ্বালানি চাহিদা ও উৎপাদন খরচসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫