মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে রেহমান সোবহান

অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাসের উপায় খুঁজে বের করতে গবেষণা করতে হবে

প্রকাশ: নভেম্বর ০৬, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়া অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাসের উপায় খুঁজে বের করতে গবেষণার তাগিদ দিয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান।  তিনি বলেন, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস নিয়ে গবেষণা করতে হবে।   জন্য গ্রহণযোগ্য বৈজ্ঞানিক উপায় খুঁজে বের করতে হবে। বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সূচকগুলো অন্যান্য অনেক দেশের চাইতে ভালো। তবে দুই দেশেরই সূচকগুলোর নিম্নমুখী প্রবণতা রয়েছে।

সোমবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান। স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর . ইশরাত হোসেন লিখিত  ‘ডেভলপমেন্ট পাথওয়ে: ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ১৯৪৭-২০২২’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অধ্যাপক সোবহান বলেন, আমি মনে করি, আমাদের খানা আয়-ব্যয়ের জরিপে কিছু ঘাটতি থেকে যায়। আমাদের সমাজের উচ্চবিত্তের খানা আয়-ব্যয় জরিপের জন্য জরিপকারীরা তাদের পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। যেভাবে আপনি জমিদারের বাড়িতে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে পারেন না৷  যারা উচু শ্রেণীর ব্যয় নির্বাহ করে, তাদের তথ্য খুব সহজে পাওয়া যায় না। গুলশান এলাকায় বসবাসকারীদের বাড়িতে বিবিএসের তথ্য সংগ্রহকারী প্রবেশ করতে পারেন না বলেই আমি মনে করি৷ তাছাড়া সম্পদের বড় একটি অংশ বাংলাদেশে রাখা হচ্ছে না৷ এর অর্থ হচ্ছে, আমাদের সামনে যে নম্বরগুলো রাখা হচ্ছে সেগুলো এক সম্পূর্ণ অর্থহীন।

তিনি বলেন, আমলাতন্ত্রের ধারাবাহিকতার জন্য স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষমতার যোগসূত্র কাজ করে৷ সেখানে রাজনীতি, বাণিজ্য এবং আমলাতন্ত্রের মধ্যে আঁতাত কাজ করে।

স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর . ইশরাত হোসেন বলেন, বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তাদের আমলাতান্ত্রিক উপনিবেশিক মানসিকতা পরিবর্তন না করতে পারলে এখানকার জনজীবনে অগ্রসরমানতা নিয়ে আসা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান মন্দ শাসন, দুর্বল প্রতিষ্ঠান এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার জন্য ভুক্তিভোগী হচ্ছে। তিন রাষ্ট্রের আমলাতন্ত্র এখনো পর্যন্ত উপনিবেশিক মানসিকতা বহন করে চলেছে৷ তারা নিজেদের জনগণের সেবক মনে করার বদলে মালিক মনে করে। যেকোনো দেশের অগ্রগতির মূল স্তম্ভ সুশাসন এবং প্রতিষ্ঠান তৈরি। তাদের মানসিকতা, মনোভাব এবং কাজের ধরণ পরিবর্তন করা সম্ভব না হলে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিবর্তন সম্ভব হবে না।

পিআরআইর চেয়ারম্যান . জায়েদি সাত্তার বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়ন সফলতার মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে৷  সুশাসন নিয়ে প্রশ্ন আছে, মানবিক দুর্যোগ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা আছে৷ তারপরও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর . ফরাসউদ্দীন আহমেদ বলেন, ভারত এবং পাকিস্তান যাত্রার শুরু থেকে ছিলো উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করে লিস্ট ডেভলপড কান্ট্রি হিসেবে। সেখান থেকে বাংলাদেশ এখনে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়। পাকিস্তানে হয় নিম্নবিত্ত, নয়তো মধ্যবিত্ত। সেখানে কোনো মধ্যবিত্ত ছিলো না। কিন্তু বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণী তৈরী শুরু থেকে ছিল, এখনো আছে।

এসময় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর . সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক বাণিজ্য সচিব সোহেল চৌধুরী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা . ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ প্রমুখ।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫