স্বাস্থ্য বীমা দুর্ঘটনা, অসুস্থতা বা আঘাতের কারণে খরচ হওয়া চিকিৎসা ব্যয়ের বিপরীতে কাভারেজ দেয়। বীমা কেন জরুরি এবং স্বাস্থ্য বীমার নানান দিক নিয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জালালুল আজিম। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছে ফারিন জাহান সিগমা
কেন সবার স্বাস্থ্য বীমা থাকা উচিত?
মানুষের জীবন অর্থাৎ Life । এটাতে if অর্থাৎ যদি আছে। মানুষের জীবনে বেশকিছু যদি আছে। এ যদিগুলো থেকে উত্তরণের পথ হলো বীমা। আরো পরিষ্কার করে বললে, আমি যদি অ্যাকসিডেন্ট করি বা আমি যদি মারা যাই তাহলে আমার পরিবারের কী হবে। আমি অসুস্থ বা আমার অ্যাক্সিডেন্ট হলে আমার এ অসুস্থতার খরচ কীভাবে আসবে। এ যদিগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় বীমায় আছে। এ অসুস্থ হওয়া কিন্তু মানুষের বয়স বা ফিগার এগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত না। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে ডেঙ্গু নিয়ে সমস্যায় আছি। ডেঙ্গু শিশু থেকে বয়স্ক লোকদের হতে পারে। আক্রান্ত হলে এখন হাসপাতালে গিয়ে যে খরচ, তার সঞ্চয় কিন্তু আমরা রাখি না। এ অবস্থায় না পড়ার জন্য সবার স্বাস্থ্য বীমা থাকা প্রয়োজন। অসুখ ছাড়াও পথেঘাটে দুর্ঘটনা ঘটছে। মানুষ গুরুতর আহত হয়। এই যে বিপৎকালীন টাকার ইন্স্যুরেন্সটা, এটা স্বাস্থ্য বীমার মাধ্যমে করা সম্ভব। এজন্যই আমি মনে করি প্রত্যেকের স্বাস্থ্য বীমা থাকা দরকার।
এখন বড় ধরনের চিকিৎসার খরচ অনেক পরিবারের জন্য বহন করা কঠিন হয়ে যায়। প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের স্বাস্থ্য বীমা গ্রহীতাকে কতটা সুরক্ষিত রাখে? আপনাদের দেয়া সুবিধা সম্পর্কে যদি সংক্ষেপে আমাদের কিছু বলেন।
একজন মানুষ অসুস্থ হয়ে গেলে তার চিকিৎসার খরচের ব্যবস্থা বেশির ভাগ পরিবার আগে থেকে করে না। ঘটনাক্রমে আমাদের হাসপাতালে যেতে হয়। মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত বা তার নিচে যারা আছে তাদের জন্য এটা কিন্তু অনেক বড় বিপদ হয়ে আসে। অনেকেই নিজেদের সম্পদ বিক্রি করে দেয়। যদি স্বাস্থ্য বীমা থাকে তাহলে তাদের আর এ সমস্যায় পড়তে হয় না। আমরা প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সে যে স্বাস্থ্য বীমাটা চালু করেছি তার মধ্যে একটা পরিকল্পনা হলো বার্ষিক ১০ লাখ টাকা। আরেকটা প্ল্যান হলো বার্ষিক ৫ লাখ টাকা। এটাতে আমরা বার্ষিক যে সুবিধা দেব, সেখানে সে যেকোনো কারণে হাসপাতালে ভর্তি হোক, হাসপাতালের যে বার্ষিক খরচ তা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি দেবে। হাসপাতালে ভর্তি থেকে চেক আউট পর্যন্ত সব খরচ আমরা বহন করব। আমরা বাংলাদেশের ১০০টা হাসপাতালের সঙ্গে ক্যাশলেস সুবিধা দিয়ে থাকি। অর্থাৎ আপনাকে টাকা নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া লাগবে না ।
স্বাস্থ্য বীমা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের সচেতনতা কেমন? আপনারা কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
একেবারেই সচেতন না। কভিডের সময় প্রচুর বিজ্ঞাপন আমরা দিয়েছি। বিশেষ করে টার্গেট কাস্টমারদের কাছে আমরা চিঠিপত্র দিয়েছি। ফেসবুকের মাধ্যমে আমরা অনলাইন মার্কেটিংও করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা তেমন সাড়া পাচ্ছি না।
আগের তুলনায় কি বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও পরিবর্তন হচ্ছে?
পরিবর্তন হচ্ছে, তবে খুব ধীরগতিতে। লক্ষ করার মতো পরিবর্তন না । কারণ মানুষের সচেতনতার অভাব আছে। পাশাপাশি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির প্রতি মানুষের আস্থার অভাব আছে। যার কারণে আমরা এখনো ভালো মার্কেট তৈরি করতে পারিনি। কিন্তু অবশ্যই সামনের দিকে ভালো অবস্থান তৈরি করতে পারব বলে আশা রাখছি।
পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য সামনে আপনাদের কী ধরনের পরিকল্পনা আছে?
এখন যে হাসপাতালের প্ল্যানটা, এটা খুব বেসিক প্ল্যান। অর্থাৎ হাসপাতালে গেলেই টাকা পাবেন, না হলে পাবেন না। সেক্ষেত্রে আরো কিছু বাড়তি সুবিধা দিয়ে আমরা আরো কিছু পরিকল্পনা আনার চেষ্টা করছি। যেমন আপনি হাসপাতালে ভর্তি নাই কিন্তু আপনি ডাক্তার দেখাবেন, সেক্ষেত্রে আমরা সুবিধা দেব। এছাড়া নারীদের মেটার্নিটি নিয়ে আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা সেটিও আনার চেষ্টা করব।
যারা এখনো স্বাস্থ্য বীমা করেননি তাদের উদ্দেশে কিছু বলবেন কি?
তাদের
উদ্দেশে আমার একটাই কথা আপনারা স্বাস্থ্য বীমা করুন। অন্যান্য খরচ সামান্য কমিয়ে আনলেই কিন্তু আমরা বীমা করতে পারি। আমাদের আগে সচেতন হওয়া উচিত। আমরা সচেতন হলে প্রিমিয়াম ম্যানেজ করা কোনো ব্যাপার না। আমি মনে করি বিপদের জন্য আমাদের সবার একটা বিকল্প ব্যবস্থা আমাদের রাখা উচিত। কারণ আমরা কেউ জানি না আমরা কে
কখন এ যদির ভেতরে
পড়ে যাব।মা