সাক্ষাৎকার

ডিআইইউ শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ৫ কোটি টাকার অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ডেভেলপমেন্ট ফান্ড

প্রকাশ: অক্টোবর ৩০, ২০২৩

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাসুম ইকবাল। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ব্যবসা ও উদ্যোক্তা অনুষদের ডিন। সম্প্রতি ইনোভেশন অ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের সুযোগ-সুবিধাসহ কর্মক্ষেত্রের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে

অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের শুরুটা কীভাবে?

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মো. সবুর খানের আইডিয়া থেকেই এ বিভাগের যাত্রা। তিনি যখন ঢাকা চেম্বারের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন দুই হাজার উদ্যোক্তা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল তারই ধারাবাহিকতায় এটি। আমরা সব ফ্যাকাল্টি সদস্য মিলে একটি সিলেবাস তৈরি করে ইউজিসিকে জমা দেই। ইউজিসি এ সিলেবাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শহীদ উদ্দিন আহমেদের কাছে রিভিউয়ের জন্য পাঠায়, তিনি ছিলেন অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপের ওপর বাংলাদেশের সম্ভবত প্রথম পিএইচডিধারী। তার পরামর্শে রিভিউ করে ইউজিসি থেকে অনুমোদন পাই। অধ্যাপক শহীদ উদ্দিন আহমেদের হাত ধরে এ বিভাগের যাত্রা। 

শিক্ষার্থীদের জন্য কী কী সুযোগ-সুবিধা রয়েছে?

ড্যাফোডিল একমাত্র ইউনিভার্সিটি যেখানে একটি ইনোভেশন ল্যাব রয়েছে। কিছুদিন পর পরই আমরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করি। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়ও অংশ নেয়। বিভিন্ন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শিখতে পারে তাদের আইডিয়া কতটা যুগোপযোগী। একাডেমিশিয়ান, সফল উদ্যোক্তা, শিল্প বিশেষজ্ঞরা বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকেন, ফলে শিক্ষার্থীরা নিজেদের যাচাই করতে পারে। যদি তারা ভালো আইডিয়া পায় সেক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটি থেকে নিজস্ব ফান্ড দেয়া হয়। বিভাগের ৫ কোটি টাকার একটি অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইডিএফ) রয়েছে। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের অর্থায়ন করা হয়। বিভিন্ন বিনিয়োগকারীদেরও আমরা আমন্ত্রণ জানাই। ড্যাফোডিল ফ্যামিলির বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল রয়েছে, সেখান থেকেও ফান্ড পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিজনেস শুরু করার জন্য ওয়ার্কিং স্পেস দরকার হয়, আমাদের এখানে কো-ওয়ার্কিং স্পেশ রয়েছে, সেখানে কাজ করতে পারে শিক্ষার্থীরা। বিজনেস আইডিয়াকে আরো পলিশ করার জন্য বিজনেস ইনকিউবেটর রয়েছে। ড্যাফোডিল একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে মার্কেটিং ল্যাব রয়েছে। মার্কেটিং প্ল্যান কেমন হবে, ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল কেমন হবে, পণ্যের দাম কেমন হবে—এসব নিয়ে কাজ করতে পারে তারা। আমরা উদীয়মান মার্কেটিং প্র্যাকটিশনারদের নিয়ে আসি, যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের কাছ থেকে মার্কেটিং কৌশল শিখে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যেতে পারে।

নতুন বিষয় হিসেবে কর্মক্ষেত্রে এ বিভাগের গ্র্যাজুয়েটদের চাহিদা কেমন?

আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ ইকোসিস্টেম গড়ে তুলেছি। একজন উদ্যোক্তার আইডিয়া থেকে বাণিজ্যিকীকরণ করতে যতগুলো ধাপ আছে সবগুলোতেই আমরা সহযোগিতা করে থাকি। এখান থেকে যারা গ্র্যাজুয়েট হয় তাদের দুটি সুবিধা। একটি উদ্যোক্তা হিসেবে নিজস্ব ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছে, আরেকটি হলো বিভিন্ন করপোরেট কোম্পানিতেও চাকরির সুযোগ পাচ্ছে। এ বিভাগের গ্র্যাজুয়েটরা যেমন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করতে পেরেছে, তেমনি দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। তরুণ শীর্ষ করদাতাদের মধ্যেও আমাদের এ বিভাগের গ্র্যাজুয়েটরা রয়েছে। এ বিভাগের কোর্সগুলোতে বিজনেসের অধিকাংশ কোর্স রয়েছে, আবার অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিষয়েও কোর্স রয়েছে, ফলে বিজনেসের শিক্ষার্থীদের তুলনায় অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের শিক্ষার্থীরা একটু বেশি দক্ষতা সম্পন্ন। কর্মক্ষেত্রেও চাহিদা রয়েছে। 

প্রতি বছর বিভিন্ন কম্পিটিশন হয়। নতুন নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগের ধারণা প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থান লাভ করে পুরস্কার পাচ্ছে কিন্তু এই আইডিয়াগুলো স্টার্টআপ হিসবে বাজারে আসছে না। কেন এমন হচ্ছে?

শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কম্পিটিশনে উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে আসছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত পণ্য হিসেবে বাজারে নিয়ে আসতে না পারার কারণ হলো সিদ্ধান্তে স্থির থাকতে না পারা। আরো একটি কারণ হলো ফান্ডিং। ব্যবসা শুরুর আগে পুঁজির প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য এ সমস্যা হয়তো একটু কম, কারণ তারা সব ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকে। লজিস্টিক সাপোর্ট দেয়া হয়। ব্যবসা শুরুর আগে হোঁচট খাওয়ার সম্ভাবনা থাকবেই, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের কাজের প্রতি আস্থাশীল থাকা এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যাওয়া। কোনো স্টার্টআপই রাতারাতি সফল হয় না। উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তার জন্য ব্যাংকগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫