ইউআইইউর গবেষণা ইনস্টিটিউট

আমাদের লক্ষ্য সোশ্যাল ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল সমস্যার সমাধান বের করা

প্রকাশ: অক্টোবর ২৩, ২০২৩

ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, ইউআইইউ ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ, ইনোভেশন, ইনকিউবেশন অ্যান্ড কমার্শিয়ালাইজেশন (আইআরআইআইসি)। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর পিএইচডি অর্জন করেন যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। অধ্যাপনা করছেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) বাংলাদেশে।

ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ, ইনোভেশন, ইনকিউবেশন অ্যান্ড কমার্শিয়ালাইজেশনের শুরুটা কেমন ছিল?

বিদেশের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে প্রফেসরদের একটি ল্যাব থাকে। ওই ল্যাবে প্রফেসররা সোশ্যাল বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল নানা সমস্যা এবং এর সমাধান নিয়ে গবেষণা করেন। সেখান থেকে তারা বিভিন্ন প্রডাক্ট বা সার্ভিস তৈরি করেন। যেগুলো পরে কোম্পানি হিসেবে তৈরি হয়। গুগলের জন্ম স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির রিসার্চ ল্যাবে। আমাদের দেশে এ কালচার কিন্তু নেই। সেই চিন্তা থেকে‌ই এ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা। 

নতুন চালু হওয়া ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাবের সুবিধাভোগী কারা হবেন? 

ইনোভেশনের কোনো বাউন্ডারি নেই। আমাদের ইনোভেশন হাব সবার জন্য উন্মুক্ত। যেকোনো মানুষ তার আইডিয়া নিয়ে আমাদের কাছে এলে আমরা সেটি যাচাই করে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দেব। শুধু একটা জিনিসই লাগবে, তার কাজটি বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে হবে, বাংলাদেশের মানুষের জন্য হতে হবে। কারণ আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আমাদের নিজেদের সমস্যার সমাধান বের করা। নিজেদের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটানো এবং নিজেদের প্রয়োজন মেটানোর পর সেটি অন্য দেশে রফতানি করা। সেই দিক বিবেচনায় যেকোনো মানুষ, যেকোনো ব্যাকগ্রাউন্ডের হোক কোনো সমস্যা নেই। আমাদের ইনস্টিটিউটে এসে গবেষণা করতে পারবেন। 

কাজটি কীভাবে শুরু করবেন?

আমরা জাতীয় পর্যায়ে কিছু প্রতিযোগিতা করব, ইনোভেটিভ আইডিয়াগুলো খুঁজে বের করব। সেখান থেকে যাদের ভালো মনে করব, তাদের আমাদের এখানে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দেব। তাদের আমরা মেন্টরশিপ, রিসোর্স, ফান্ডিংসহ সব ধরনের সুবিধা প্রদান করব। কাজটি সরকারের আইসিটি ডিভিশনের সঙ্গে যৌথভাবে করা হবে। এর মাধ্যমে আমরা একটি ইনোভেটিভ ইকোসিস্টেম তৈরি করতে পারব।

দেশের কোনো খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে কি? 

আমাদের এসডিজির ১৭টি খাতের মধ্যে কয়েকটি খাত দেশের সবচেয়ে বড় ইস্যু। কিন্তু আমরা কোনোটিকে ছোট করে দেখছি না। কারণ যারা গবেষণা করবে, তাদের আগ্রহের একটা বিষয় আছে। কার কোথায় আগ্রহ জন্মে সেটি বলা মুশকিল। তাই আমরা তরুণদের কাজে লাগিয়ে স্থানীয় সমস্যার, স্থানীয় সমাধান বের করে আনবো। ফলে আমাদের ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি তৈরি হবে। যেটি আমরা বিদেশেও রফতানি করতে পারব। আমাদের দেশ থেকে অনেক পণ্য রফতানি হলেও উল্লেখ করার মতো বুদ্ধিবৃত্তিক কিছু রফতানি হচ্ছে না। আমরা যদি এ জায়গায় জোর দিই, নিজেরা নতুন কিছু আবিষ্কার করতে পারি, যেটির ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি হিসেবে ভ্যালু থাকবে তাহলে সেটিও রফতানি করা সম্ভব।

আগামী দশ বছরে ইনস্টিটিউট থেকে আপনার প্রত্যাশা কী?

২০৩০ সালের মধ্যে অন্তত ১০টি পেটেন্ট তৈরি করব। যেগুলো ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি হিসেবে রফতানি করা যাবে। একই সঙ্গে দশটি সমস্যা চিহ্নিত করে সেখান থেকে সমাধান বের করা এবং দশটি পণ্য তৈরি করে সেগুলো রফতানি করার উপযোগী করে তুলব। এগুলোর প্রতিটি অন্তত মিলিয়ন ডলার কোম্পানি হিসেবে আবির্ভাব ঘটবে। আমরা সবগুলোই করব স্থানীয় সমস্যার সমাধান হিসেবে। এর সঙ্গে মানবসম্পদ তৈরি করব। এখান থেকে অন্তত ১০০ শিক্ষার্থীকে বিদেশে পাঠিয়ে পিএইচডি করিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই। এরই মধ্যে আমি গত আট বছরে ৫০ জনকে বিদেশে পাঠিয়েছি, তারা পিএইচডি করছেন। একজন এরই মধ্যে পিএইচডি শেষ করে ফিরে এসে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করছেন। তিনি সেখানে একটি ইনোভেশন হাব করার চেষ্টা করছেন। এভাবে যদি ১০০টি ল্যাব করতে পারি, ইনোভেশন হাব করতে পারি তাহলে অন্তত ১০ কোটি মানুষকে সরাসরি উপকৃত করতে পারব। এটি যখন করতে পারব তখন আমি নিজেকে সফল মনে করব।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫