ক্যাম্পাসে ভ্লগিং

ব্যঙ্গ করেই সমাজের অসংগতি তুলে ধরেন ‘‌মনা’

প্রকাশ: জুলাই ১০, ২০২৩

ইমাম ইমু

শামীম আহমেদ। পড়াশোনা করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে। তাকে কেউ চেনেন ‘‌বদ বচন’ নামে, কেউ ‘‌মনা’ নামে। ২০২০ সালের জুলাইয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে নানা বিষয়ে আধেয় বানানো শুরু করেন শামীম। শুরুতে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় সমসাময়িক ও সামাজিক নানা অসংগতি নিয়ে ভিডিও তৈরি করেন তিনি। তার নানা ভঙ্গি আর মজার ছলে ব্যঙ্গ করে কথা বলার মাধ্যমে নিগূঢ় বার্তা দেন প্রতিটি ভিডিওতে৷। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অল্প সময়ে বেশ সাড়া ফেলেছেন তিনি। অর্জন করেছেন ইউটিউবের সিলভার বাটন৷। ফেসবুকে তার প্রতিটি ভিডিও লাখ লাখ মানুষ দেখছে৷। এরই মধ্যে তিনি কনটেন্ট ক্রিয়েটর থেকে হয়ে উঠেছেন ছোট পর্দার অভিনেতা। 

গত দুই বছরে কাজ করেছেন ২০-এর অধিক নাটকে। সম্প্রতি তার অভিনীত হঠাৎ বৃষ্টি, কাটুস কুটুস কোরবানি, নোয়াখাইল্লাহ পোলা ও বদনাম নাটক রিলিজ হয়েছে। শামীমের অভিনয়ে বরাবরই মুগ্ধ যুবসমাজ। তার কথা বলার ভঙ্গি, ঢঙ পছন্দ অনেকের। তাকে অনুসরণ করে অনেকে ফেসবুকভিত্তিক অনেক ভিডিও বানাতে দেখা গেছে।৷ তার ভিডিও পছন্দ করে অনেকে নানা রকম মন্তব্যও করছে তার ভিডিওতে।

শামীম নোয়াখালীর ভাষায় কনটেন্ট বানালেও তার জন্মস্থান খাগড়াছড়িতে। ছোটবেলা থেকেই বড় হয়েছেন সেখানে। ছোটবেলা থেকে নানা ভাষার প্রতি তার অন্য রকম আগ্রহ ছিল৷। শুনে শুনেই শিখে নিয়েছেন আদিবাসীদের ভাষা৷। অনর্গল বলতেও পারেন সেটা। এছাড়া নোয়াখালী, বরিশাল, সিলেট, রাজশাহী ও পাবনা অঞ্চলের ভাষাসহ প্রায় ১০টি আঞ্চলিক ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারেন শামীম।৷ নাটক দেখে কিংবা বন্ধুবান্ধবের থেকে শুনে শুনেই এসব ভাষা আয়ত্ত করেছেন তিনি।

শামীম আহমেদ ২০১১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ভর্তি হয়েছিলেন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরের বছর দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিয়ে নিজের আগ্রহের বিভাগে ভর্তি হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে। সেখান থেকেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন।৷কনটেন্ট ক্রিয়েটর থেকে অভিনেতা কীভাবে হলেন এবং এ যাত্রার কথা জানতে চাইলে শামীম আহমেদ বলেন, ‘আসলে আমি নিজেকে কনটেন্ট ক্রিয়েটর দাবি করি না। এ পরিভাষাটা পছন্দ করি না। কারণ আমি মনে করি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটা কারো একার না৷। এটা বিশাল একটি জায়গা। এখানে সবার কথা বলার অধিকার আছে।৷ যে কারো ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা আছে।’ 

‘‌বদ বচন’ নামের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমি কটু কথায়, বাঁকা কথায় বা ব্যঙ্গ করে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলি৷ এজন্য বদ শব্দটা দেয়া। আর বচন মানে তো কথা।৷ আমি মনে করি আমি স্বাধীন। আমার কথা বলার অধিকার আছে৷ আর আমি যেহেতু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, পাবলিকের প্রতি একটা দায়বদ্ধতা আছে৷। জনসাধারণের পক্ষ হয়ে কথা বলার আমার ঋণ আছে। সেই চিন্তা থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমি আমার আবেগ, অনুভূতি, পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা প্রকাশ করি। সেটা হয়তো মানুষের ভালো লেগেছে। কারো চিন্তার সঙ্গে মিলে গেছে। তারা হয়তো মনে করেছে আমার কথাগুলোই তাদের কথা। 

শুরুর দিকে আমি যখন একের পর এক ভিডিওগুলো আপলোড করি, আমার অনেক কাছের মানুষ সেটা পছন্দ করেনি।৷ অনেকে হাসিঠাট্টা করেছে,৷ কিন্তু আমি কারো দিকে তাকাইনি, দমে যাইনি। আমি ভিডিও বানিয়ে গেছি।৷এরপর যখন আমার ভিডিওগুলো প্রচুর রিচ হতে লাগল তখন অনেক প্রস্তাব আসে তাদের হয়ে কথা বলার জন্য বা তাদের পণ্য প্রমোট করার জন্য। আমি সেটা করিনি। জনসাধারণ বা যুবসমাজ আমাকে যেহেতু আমার স্বকীয়তা বা সামাজিক প্রভাবক হিসেবে দেখে। আমি মনে করেছি তারা আমার থেকে সেটা কখনই আশা করে না। আমি ভিন্ন উপায় খুঁজে নিয়েছি। আমি ব্যবসা করেছি। আমি মনে করেছি এটাই সঠিক উপায়৷।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫