দেশের বাজারে ভালো চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় রসুনের আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছেন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা। চাহিদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ বাড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে দামও কমেছে কেজিতে ২০-৩০ টাকা। এদিকে আমদানি বাড়ায় সরকারের রাজস্ব আহরণও বেড়েছে।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারিতে বন্দর দিয়ে ১২টি ট্রাকে ২৯৩ টন রসুন আমদানি হয়েছিল। ফেব্রুয়ারিতে আমদানি হয় ১২টি ট্রাকে ২৯২ টন। মার্চে বন্দর দিয়ে কোনো আমদানি হয়নি। এপ্রিলে বন্দর দিয়ে আটটি ট্রাকে ২১৯ টন আমদানি হয়। ২৫ মে পর্যন্ত ১৬ কর্মদিবসে বন্দর দিয়ে ৩৬টি ট্রাকে ১ হাজার ৩০ টন রসুন আমদানি হয়েছে। ভারত থেকে প্রতি টন রসুন প্রকারভেদে ৪০০-৭০০ ডলার মূল্যে আমদানি করা হচ্ছে, যা কাস্টমসে ১ হাজার ৪১০ ডলার মূল্য ধরে শুল্কায়ন করা হচ্ছে। এতে কেজিপ্রতি রসুন আমদানিতে প্রায় ১১ টাকা শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে।
বর্তমানে বন্দরে ছোট আকারের রসুন ৬৫ টাকা, মাঝারি আকারের ৮০-৮৫ টাকা আর বড় আকারের ১০৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগের চেয়ে ২০-৩০ টাকা বেশি।
হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব দোকানেই রসুনের ভালো সরবরাহ আছে। দুয়েকটি দোকানে আমদানীকৃত ভারতীয় রসুনের পাশাপাশি দেশীয় রসুনও লক্ষ করা গেছে। আমদানীকৃত ভারতীয় রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা দরে, যা এক সপ্তাহ আগে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া দেশীয় রসুন ১২০-১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ২০-৩০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হয়েছিল।
হিলি বাজারের রসুন বিক্রেতা শাকিল খান বলেন, ‘মৌসুম শেষ হওয়ায় বাজারে দেশী রসুনের সরবরাহ কমে গিয়েছিল। ফলে দাম ছিল বেশি। তবে সম্প্রতি দিনাজপুর ও নাটোর অঞ্চলের রসুন বাজারে আসতে শুরু করেছে। এতে বাজারে দেশী রসুনের সরবরাহ আগের তুলনায় খানিকটা বেড়েছে। চাহিদা থাকায় বন্দর দিয়েও বেশ কিছুদিন ধরে ভারত থেকে রসুন আমদানি অব্যাহত। বর্তমানে পণ্যটির ভালো সরবরাহ থাকায় দাম কমতির দিকে। বন্দর থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে মাঝারি আকারের রসুন কিনে আনছি। পরিবহন খরচ মিলিয়ে ৯০-১০০ টাকা বিক্রি করছি।’ এমন সরবরাহ থাকলে সামনের দিনে রসুনের দাম বাড়বে না বলেও মনে করছেন তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের রসুন আমদানিকারক হারুন উর রশীদ বলেন, ‘দেশের বাজারে রসুনের চাহিদা মেটাতে ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত থেকে আমদানি করছেন ব্যবসায়ীরা। ভারতের বিহার অঞ্চল থেকে এসব রসুন আমদানি করা হচ্ছে। জানুয়ারি থেকে বন্দর দিয়ে ভারতের রসুন আমদানি করা হচ্ছে।’
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘রসুনের আমদানি আগের তুলনায় খানিকটা বেড়েছে। নিয়মিত এক-দুই ট্রাক রসুন আমদানি হচ্ছে প্রতিদিন। কোনো কোনো দিন পাঁচ ট্রাকও হচ্ছে। এতে সরকারের রাজস্ব আহরণ বেড়েছে।’