চিপের মূল্য নিয়ে প্রতিযোগিতা

কমতে পারে ফাইভজি স্মার্টফোনের দাম

প্রকাশ: মে ১৩, ২০২৩

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড-১৯ মহামারী পরবর্তী সময়ে গ্রাহক পর্যায়ে কম্পিউটার থেকে  শুরু করে ইলেকট্রনিক পণ্যের চাহিদা অনেক কমেছে। এ কারণে চিপ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোও বাজার ধরতে সেমিকন্ডাক্টরের দাম কমানোর প্রতিযোগিতায় রয়েছে। ফলে ভারতের বাজারে স্মার্টফোন ক্রেতারা সুবিধা পেতে পারে। বাজার বিশ্লেষকদের তথ্যানুযায়ী, সামগ্রিকভাবে ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধে ফাইভজি ডিভাইসের দাম ১০ হাজার রুপির নিচে নেমে আসতে পারে। খবর ইটি টেলিকম।

তাইওয়ানের মিডিয়াটেক ও যুক্তরাষ্ট্রের কোয়ালকমের মধ্যে এ দ্বৈরথ চলমান। স্বাধীন সেমিকন্ডাক্টর বিশ্লেষক শ্রাবণ কুন্দোজ্জলা বলেন, ‘‌চিপ উৎপাদনকারী ব্র্যান্ডগুলোর ধারণা বর্তমানে গ্রাহক থেকে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর চাহিদায় যে মন্দা ভাব রয়েছে, সেপ্টেম্বরের পর তা স্বাভাবিক হবে। যে কারণে চীনের অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট মেকাররা মিডরেঞ্জে আরো একাধিক চিপ বাজারজাত করবে।’

তিনি জানান, সরবরাহ চেইনে যে সংকট চলমান সেটি স্বাভাবিক হলে চিপসেট উৎপাদনকারীরা পণ্যের দাম কমাতে পারবে ও তা বাজার হিস্যা বাড়াতে সহায়তা করবে।

কুন্দোজ্জলার তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে ভারতে ৪৫ শতাংশ বাজার হিস্যা মিডিয়াটেকের নিয়ন্ত্রণে ছিল। যেখানে কোয়ালকমের বাজার হিস্যা ২৫ শতাংশ। তবে প্রিমিয়াম সেগমেন্টে বেশি পণ্য থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিটির রাজস্ব বেশি। দুটি কোম্পানিই দামের দিক থেকে আরো প্রতিযোগিতা তৈরি হবে বলে জানিয়েছে। তবে কোন পণ্যগুলোয় এর প্রভাব পড়বে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

আয় প্রতিবেদন প্রকাশের সময় মিডিয়াটেকের প্রধান নির্বাহী রিক সাই জানান, কোম্পানি চিপের দামের ক্ষেত্রে তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যে রয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কিছু এন্ট্রি লেভেলের স্মার্টফোনের জন্য এ প্রতিযোগিতা বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘‌প্রতিযোগিতা চলমান থাকলেও মিডিয়াটেক খুব বেশি দাম কমাবে না। কেননা এর মাধ্যমে বাজার হিস্যায়ও কোনো উন্নতি হচ্ছে না ও চাহিদাও বাড়ছে না।’ কুন্দোজ্জলার আশা, দুটি কোম্পানিই সামনে আরো আকর্ষণীয় দামে ভালো চিপ বাজারজাত করবে। বর্তমানে কোম্পানিগুলো ফাইভজি রেডিও ও ব্যান্ড কমানোর মাধ্যমে ফাইভজি চিপসেট তৈরির খরচ কমানোর চেষ্টা করছে।

বর্তমানে চিপ তৈরিতে যে ওয়াফার ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর দাম এখনো নাগালের বাইরে। ফলে রেডিওসহ অন্যান্য ফিচার কমানোর মাধ্যমেই কোম্পানিগুলোকে চিপ উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। এতে ফোরজি ও ফাইভজি চিপের মূল্যে যে পার্থক্য রয়েছে, তা অনেকাংশই কমে আসবে। 

বাজার বিশ্লেষকরা জানান, বর্তমানে ফোরজি চিপের দাম ১০ ডলারের নিচে থাকলেও ফাইভজি চিপ ২০ ডলারের বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ চেইনের সংকট দূর হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হলে ফাইভজি চিপের দাম ১৮ ডলারের নিচে নেমে আসবে বলে ধারণা করছেন তারা। ফলে বিভিন্ন কোম্পানি ১২০ ডলারের নিচে ফাইভজি স্মার্টফোন তৈরি ও বাজারজাত করতে পারবে।

কুন্দোজ্জলা বলেন, ‘‌লোয়ার মিড ও এন্ট্রি লেভেল সেগমেন্টে ফাইভজি এখনো সেভাবে পৌঁছায়নি। যে কারণে কোম্পানিগুলোর মনোযোগ এখন এদিকেই। এখানে কিছু ক্ষেত্রে ফাইভজি চিপের দাম কমানোর সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে ব্যান্ড কমানোর মাধ্যমে ভারতে যেসব চিপ প্রবেশ করতে যাচ্ছে সেগুলো।’

কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের বিশ্লেষক পার্ভ শর্মা জানান, ফাউন্ড্রি খরচ এখনো নাগালের বাইরে। চিপ বাজারজাতে মূল্যের যে প্রতিযোগিতার আশা করা হচ্ছে, সেটি তৈরিতে এখনো অনেক সময় লাগবে।

আইডিসির নাভকেন্দার সিং জানান, চিপসেটের দাম নিয়ে যদি প্রতিযোগিতা শুরুও হয়ে থাকে, স্মার্টফোন উৎপাদনকারীরা সহসাই গ্রাহকদের এর সুফল ভোগ করতে দেবে না।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫