সৌদি আরবে বাস দুর্ঘটনা

আট বাংলাদেশীসহ ২২ ওমরাহ যাত্রী নিহত

প্রকাশ: মার্চ ২৯, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

সৌদি আরবে ওমরাহ যাত্রী বহনকারী একটি বাস উল্টে কমপক্ষে ২২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ২৯ জন। স্থানীয় সময় গত সোমবার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আসির প্রদেশ আবহা শহরের সংযোগ সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে আটজনই বাংলাদেশী বলে নিশ্চিত করেছে সৌদির বাংলাদেশ দূতাবাস। ঘটনায় আরো অন্তত ১৮ বাংলাদেশী আহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই চট্টগ্রাম অঞ্চলের বাসিন্দা।

মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আট বাংলাদেশীর পরিচয় জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়ে একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। নিহতরা হলেন নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার শাহীদুল ইসলাম, কুমিল্লার মুরাদনগরের মামুন মিয়া রাসেল মোল্লা, নোয়াখালীর মো. হেলাল, লক্ষ্মীপুরের সবুজ হোসাইন, কক্সবাজারের মহেশখালীর মোহাম্মদ আসিফ, গাজীপুরের টঙ্গীর মো. ইমাম হোসাইন রনি এবং চাঁদপুরের রুকু মিয়া।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আরো জানানো হয়, এখন পর্যন্ত সাত থেকে নয়জন বাংলাদেশী ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন। এর মধ্যে চারজনের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তারা হলেন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার গিয়াস উদ্দিন, কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর শেফায়েত উল্লাহ, যশোরের নাজমুল হাসান রনি। শেফায়েত উল্লাহ নিহত মোহাম্মদ আসিফের খালাতো ভাই বলে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রেক কাজ না করায় আসির প্রদেশের একটি সেতুর ওপর উল্টে গিয়ে বাসটিতে আগুন ধরে যায়। খবর পেয়ে সৌদি আরবের সিভিল ডিফেন্স রেড ক্রিসেন্টের উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তত্পরতা চালায়। হতাহতদের দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালগুলোতে পাঠায়। ওই ব্যক্তিরা সেই বাসে করে ওমরাহ পালন করতে মক্কায় যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।

একটি সূত্র জানায়, আগুনে পোড়া খাদে পড়ে যাওয়ার কারণে মৃতদেহগুলোর চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। ফলে মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। রমজানে বহু মানুষ ওমরাহ করতে মক্কায় যাচ্ছেন এবং হজের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। এমন সময়েই আসির প্রদেশে ঘটল দুর্ঘটনা।

এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশের কনস্যুলেটের প্রথম সচিব (শ্রম) মো. আরিফুজ্জামানসহ দুজন কর্মকর্তা। বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আরিফুজ্জামান জানান, বাসে মোট যাত্রী ছিলেন ৪৭ জন। তাদের মধ্যে ৩৫ জনই বাংলাদেশী। দুর্ঘটনায় মোট ২২ যাত্রী নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আটজন বাংলাদেশী বলে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিষয়ে সহায়তার জন্য সৌদির বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে হতাহতদের পরিবারকে +৯৬৬৫৫৩০২৬৮১৪ +৯৬৬৫৩৮৬৪৩৫৩২ নম্বর দুটিতে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বণিক বার্তাকে বলেন, সৌদি আরবে ওই দুর্ঘটনার পর কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৮ বাংলাদেশীকে পাওয়া গেছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে তাদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশী হতাহতের ঘটনায় তাদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা গভীর শোক জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল রাতে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, দুর্ঘটনায় পড়া বাসটির ৪৭ যাত্রীর মধ্যে ৩৫ জন বাংলাদেশী নাগরিক ছিলেন। তাদের সবাই ওমরাহ পালন করতে মক্কায় যাচ্ছিলেন। জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের দুই কর্মকর্তা ঘটনার পরপরই এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন। একই সঙ্গে তারা নিহতদের শনাক্ত দেশে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ কনস্যুলেট। নিহতদের মরদেহ দ্রুত দেশে পাঠানোর জন্যও চেষ্টা চলছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫