নাব্য সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে নদীতীরের অনেক ঘাট

প্রকাশ: মার্চ ২৯, ২০২৩

আতিকুর রহমান আতিক, গাইবান্ধা

নাব্য সংকটে ব্রহ্মপুত্র নৌ-চ্যানেলের অনেক জায়গাতেই বন্ধ হয়ে গেছে নদীতীরের ঘাট। তাতে ক্ষতিতে পড়েছে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। আয়-রোজগারও কমেছে মাঝিমল্লাসহ নানা পেশার মানুষের। 

জামালপুর জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ,  কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী, রৌমারী, রাজীবপুর ও উলিপুরের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বালাসী নৌঘাট। কিন্তু শীতের শুরু থেকে পানি কমে গিয়ে শত শত বালুচর জেগে ওঠায় বন্ধ হয়ে গেছে বেশকিছু নৌপথ। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ফুলছড়ি উপজেলার অভ্যন্তরীণ নৌপথ ফুলছড়ি-বালাসী, তিস্তামুখঘাট-বাহাদুরাবাদ, গজারিয়া-গলনা, সিংড়িয়া-ঝানঝাইর, গুনভরি-কালাসোনা, গজারিয়া-ফুলছড়িতে নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

আন্তঃজেলা নৌ-রুট ফুলছড়িঘাট-গুঠাইল, সৈয়দপুর-রাজীবপুর, তিস্তামুখঘাট-আমতলী ও তিস্তামুখঘাট-সারিয়াকান্দি রুটে নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। নাব‍্য সংকটে অনেক পথ ঘুরে ঘুরে নৌকা চলাচল করতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তি বেড়েছে পণ্য ও যাত্রী পারাপারে। অন্য পথে ঝুঁকি নিয়ে নৌকা চলাচল করলেও বিড়ম্বনায় পড়ছে যাত্রীরা। ফলে তেল খরচ ও সময়, দুটোই লাগছে বেশি। প্রায় একই অবস্থা দেখা দিয়েছে যমুনা নদীতেও। এভাবে বিভিন্ন রুটে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। 

ব্রহ্মপুত্র নদের সংশ্লিষ্ট অংশে ড্রেজিং করা হলেও নাব্য উন্নতির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নৌপথে যাতায়াতকারী যাত্রী ও নৌকার মাঝিরা।

ফুলছড়িঘাটের নৌকার মাঝি হারেছ মিয়া জানান, তিস্তামুখঘাট ও বালাসীঘাট একসময়ের বিখ্যাত নৌবন্দর। ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে ছিল অনেক ছোটবড় নদ-নদীর সংযোগ। ফলে খুব সহজেই নানা এলাকার মালবাহী নৌযান এসে ভিড়ত এসব ঘাটে। নাব‍্য সংকটের কারণে সেসব মিলনমেলা আর নেই। ব্রহ্মপুত্র মরে যাওয়ায় এসব ঘাটের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। 

বালাসীঘাটের চা দোকানি মো. ছবা মিয়া বলেন, ‘‌আমি ১৭ বছর ধরে এ ঘাটে চা বিক্রি করে সংসার চালাই। কিন্তু প্রায় পাঁচ মাস এখান থেকে ঘাট দূরে যাওয়ায় আমাদের বেচাবিক্রি নাই। যাত্রীরাও অনেক কষ্ট করছেন।’

নদীর তলদেশে পলি জমায় কমে গেছে নদীর ধারণক্ষমতা। সেই সঙ্গে চরাঞ্চলে উৎপাদিত বাদাম, ভুট্টা, পাট, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহনে ভোগান্তির শেষ নেই। বালাসীঘাট এলাকার আজাদ মিয়া ও ফুলছড়িঘাটের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, তিস্তামুখঘাট থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে নৌকায় প্রতিদিন হাজার হাজার কৃষিপণ্যসহ মালপত্র আনা-নেয়া করা হতো। কিন্তু নদীতে পানি না থাকার কারণে এখন সড়কপথে অনেক বেশি খরচ দিয়ে সেই মালপত্র আনা-নেয়া করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর উপসহকারী প্রকৌশলী এরশাদ বলেন, ‘‌নদীতে নাব‍্য সংকট নেই,  লঞ্চ স্বাভাবিকভাবেই চলছে। পরবর্তী বছরে কী সিদ্ধান্ত আসে বলা মুশকিল। এ বিষয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কথা বলতে পারবে।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫