এসভিবির পরিণতি হতে পারে আরো ১৯০ ব্যাংকের?

প্রকাশ: মার্চ ২৩, ২০২৩

বণিক বার্তা ডেস্ক

সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংকের ধসের কারণে বর্তমান বাজারে একটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। যদি যুক্তরাষ্ট্রের আরো ১৯০টি ব্যাংক একই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়ে, তাহলে পরিস্থিতি কেমন হবে সে-বিষয়ক চিত্র উঠে এসেছে সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চ নেটওয়ার্কের (এসএসআরএন) এক গবেষণায়।

গত মাসে পরিচালিত গবেষণায় দেখা যায়, ১৮৬টি ব্যাংকের অবীমাকৃত ঋণ বা সম্পদের কারণে তাদের বীমাকৃত আমানতকারীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়া এসব ব্যাংকও এসভিবি, এসবি ও সিলভারগেট ব্যাংকের মতো আমানত পরিচালনা করার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে পড়ে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বীমাকারী ব্যাংকের আমানত আড়াই লাখ ডলারের বেশি, ঝুঁকিতে থাকা এসব ব্যাংকের অনেক অবীমাকৃত আমানতকারী রয়েছে যাদের ক্ষেত্রে সেসব হারিয়ে ফেলার ভয়ে নিজেদের তহবিল সরিয়ে নেয়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। এসব ব্যাংকে বেশকিছু সুদহার সংবেদনশীল সম্পদ রয়েছে, যেমন সরকারি বন্ড। সুদহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ বন্ড খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।

গবেষণার তথ্য বলছে, যদি অর্ধেক অবীমাকৃত আমানতকারী নিজেদের অর্থ তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে ১৯০টি ব্যাংক অবীমাকৃত আমানতকারীদের প্রতিবন্ধকতার ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। তাতে সম্ভাব্য ৩০ হাজার কোটি ডলারের বীমাকৃত আমানতকারীও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে। সেখানে আরো বলা হয়েছে, অবীমাকৃত লেভারেজই মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া হওয়ার কোন পর্যায়ে নিয়ে যাবে তা বোঝার উপায়।

এসভিবিকে কেস স্টাডি হিসেবে নিলে বলা যায়, এ ব্যাংকের অসামঞ্জস্যপূর্ণ অবীমাকৃত শেয়ার ছিল। ব্যাংকগুলোর ১ শতাংশ মাত্র অবীমাকৃত লেভারেজ রয়েছে। লোকসান ও অবীমাকৃত লেভারেজই এসভিবির অবীমাকৃত আমানতকারীদের পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিয়েছে।

ব্যাংকগুলো মূলত কেন ভেঙে পড়ে এ বিষয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং সংকট নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এএইচএএম অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট। সেখানে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের এ খাতে ৪ হাজার ৭০০টি ব্যাংক পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০০৮-১২ সালের মধ্যে ৪৬৫টি ব্যাংক তাদের মোট সম্পদ হারিয়েছে, যার মোট মূল্য ৭০ হাজার কোটি ডলার। আর ২০১৮-২১ সালের মধ্যে আটটি ব্যাংক তাদের মোট সম্পদ হারিয়েছে ৬৭ হাজার ২০০ কোটি ডলার।

এসএসআরএনের গবেষণা বিশ্লেষণ করেছে, যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতি শক্ত করে, যেমন এখন ফেডারেল রিজার্ভ করছে, তখন দীর্ঘকালীন সম্পদ যেমন সরকারি বন্ড বা বন্ধকি সম্পদে তার একটা তাৎপর্যপূর্ণ নেতিবাচক প্রভাব থাকতে পারে। ফলে ব্যাংকগুলো লোকসানের মুখে পড়ে।  

সুদহার বাড়লে ব্যাংকের সম্পদের মূল্য কমে যায়, ফলে ব্যাংকগুলো দুটি চ্যানেলে ব্যর্থতার মুখে পড়ে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথমত যদি ব্যাংকের দায় তার সম্পদের পরিমাণের তুলনায় বেশি হয়ে যায়, তাহলে তা অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে যায়। দ্বিতীয়ত অবীমাকৃত আমানতকারীরা তাদের লোকসানের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে এবং নিজেদের তহবিল তুলে নেয় ও ব্যাংক থেকে সরে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক ব্যাংকের তহবিলের তাৎপর্যপূর্ণ উৎস অবীমাকৃত আমানতকারীরা, তারাই ব্যাংকগুলোর মোট দায়ের ৯ ট্রিলিয়ন পূরণ করে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫