পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল ইসলামাবাদের আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ইমরানের সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এছাড়া ইসলামাবাদে এলিট কমান্ডো ও সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াডসহ প্রায় ৪ হাজার নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়। খবর বিবিসি।
গতকাল ইসলামাবাদের আদালতে হাজির হন ইমরান খান। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতায় থাকাকালে তোষাখানার উপহার বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। যদিও এ-সংক্রান্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাবেক এ ক্রিকেটার। অন্যদিকে ইমরান খান আদালতের উদ্দেশে রওনা দেয়ার পর পরই লাহোরে ইমরান খানের বাসভবন জার্মান পার্কে অভিযান চালায় পুলিশ।
এর আগে শুনানিতে উপস্থিত না থাকায় গত সপ্তাহের শুরুর দিকে লাহোর পুলিশ ইমরান খানকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছিল। তার গ্রেফতার ঠেকাতে সমর্থকরা জার্মান পার্ক চত্বরে অবস্থান নেন। সেখানেও সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। লাহোর পুলিশ জানিয়েছে, ইমরান খানের কিছু সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও পেট্রল বোমা নিক্ষেপের জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গত শুক্রবার আদালত বলেন, ইমরান খানকে অবশ্যই আদালতে হাজির হতে হবে। এছাড়া তাকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়। তিনি আদালতে হাজির হবেন—এ আশ্বাসের পর তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা স্থগিত করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই গতকাল আদালতে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ইমরান খান বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে তিনি আইনের শাসনের প্রতি বিশ্বাস রেখে আদালতে উপস্থিত থাকবেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাকে গ্রেফতারের চেষ্টা আদালতের মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। আমাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য হলো যাতে আমি নির্বাচনী প্রচারে নেতৃত্ব দিতে না পারি।’
রয়টার্সকে ইমরান জানিয়েছেন, তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতৃত্ব দেয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। তার দলকে আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে বিরত রাখতে তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি গ্রেফতার হলে গঠিত কমিটিই দলের নেতৃত্ব দেবে। পিটিআইয়ের এ নেতা বলেন, ‘আমি কারাগারে থাকি বা না থাকি, তারা আমার দলের জয় ঠেকাতে পারবে না।’
আদালতে হাজির হওয়ার আগে রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এই নেতা বলেন, ‘আমার জীবন এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি হুমকির মুখে। ফলে গ্রেফতার হলে বা হত্যার চেষ্টা করা হলে দেশবাসীর প্রতিক্রিয়া নিয়ে আমি চিন্তিত।’ ইমরান খান বলেন, ‘আমি মনে করি এর প্রতিক্রিয়া খুব বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া হবে এবং গোটা পাকিস্তানেই এ প্রভাব দৃশ্যমান হবে।’