ব্যবসায়িক মনোবৃত্তির বাইরে জ্ঞানচর্চার পীঠস্থান আইআইইউসি

প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩

বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস খুব বেশিদিনের নয়। এক সময় দেশের প্রধান ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। ১৯৯২ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাসের পর বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মানেই হচ্ছে বিশ্বজনীন জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রস্থল। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের আগে আন্তর্জাতিক বসানোর খুব একটা প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। সব বিশ্ববিদ্যালয়ই পৃথিবীর সব প্রান্তের জ্ঞানের পর্যালোচনা, চর্চা উন্মোচন করে। আইআইইউসি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সত্ত্বেও ব্যবসায়িক মনোবৃত্তির বাইরে গিয়ে জ্ঞানচর্চায় নিবিড়ভাবে অন্বেষণ করছে।

আইআইইউসি শুধু শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী বাণিজ্যিক, প্রযুক্তি প্রকৌশল বিজ্ঞানই পড়ানো হয় না। ধারাবাহিকভাবে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে ধারাবাহিকভাবে কলা দর্শনের মতো মানব জ্ঞানের অপরাপর বিষয়গুলোকেও সংযুক্ত করছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান সময়ে আইআইইউসি দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে শুধু ইট-কাঠের কুঠুরিতে পাঠদানের পরিবর্তে সুপরিসর প্রাকৃতিক পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়েছে। ৫০ একরেরও বেশি পাহাড়বেষ্টিত আইআইইউসি ক্যাম্পাসের অবয়ব দেশের যেকোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়েও কোনো অংশে কম নয়।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও শুধু এখানে ভর্তি হতে প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হয় শিক্ষার্থীদের। সর্বশেষ দুটি সেমিস্টারে স্নাতক কোর্সে মেধা তালিকায় না থাকায় এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আইআইইউসিতে ভর্তি হতে পারেনি। ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে শুধু জ্ঞানভিত্তিক চর্চা নৈতিক মূল্যবোধকে প্রাধান্য দেয়ায় অভিভাবকদের পছন্দের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে আইআইইউসি। দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও আইআইইউসিতে ভর্তি হওয়ার নজির রয়েছে।

দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শিক্ষার্থী বাড়ানো ছাড়াও বাণিজ্যটাই প্রধান হিসেবে থাকলেও আইআইইউসি শুধু শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে আসা আয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো নির্মাণ, গবেষণা, নতুন নতুন পাঠ্যক্রম সংযুক্ত করা, বৈশ্বিক সর্বশেষ জ্ঞানকে শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ব্যয় করছে। যার ফলে দেশে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা যেকোনো বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সাজাতে নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে শতভাগ শিক্ষার্থীকে পরিবহন সুবিধা প্রদান ছাড়াও দেশে প্রথমবারের মতো শাটল ট্রেন সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে আইআইইউসি অনন্য নজির স্থাপন করবে।

বিশ্বব্যাপী শিক্ষা কখনই ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয় না। আমাদের দেশেও মোটা দাগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে চালু হয়নি। কিন্তু প্রকৃত চিত্র ভিন্ন। এখানে উচ্চশিক্ষা ব্যবসায়িক চিন্তায় আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। আইআইইউসি এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এখানকার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ হাজারেরও বেশি। এখান থেকে প্রাপ্ত আয় শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে, শিক্ষার উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী মূল্যবোধের পাঠদানের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম চর্চার বিষয়কেও একাডেমিকভাবে গুরুত্ব দিয়ে নতুন একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মাত্র দুই বছর আগে দায়িত্ব নেয়ার পর পরই বিশ্ববিদ্যালয়কে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নান্দনিক স্থাপত্য কাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ আনা হয়েছে।

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কালে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি না হলে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে না। তরুণ সমাজ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। আমরা শুধু ডিগ্রি প্রদানই নয়, দেশের শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের সমকক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করতে চায় আইআইইউসি। এজন্য গবেষণাকে সর্বোচ্চ পরিমাণ গুরুত্ব দিয়ে চর্চা করা হয়। সর্বাধুনিক ল্যাবরেটরি সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে এখানকার শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে জ্ঞান অন্বেষণে নিবিষ্ট রয়েছে। আধুনিকতার সঙ্গে সমকালীন সর্বশেষ জ্ঞানকে চর্চা-পর্যালোচনার মাধ্যমে দেশের উচ্চশিক্ষা খাতে আইআইইউসি অনন্য অবদান রাখতে সব ধরনের আয়োজনের সন্নিবেশ ঘটিয়েছে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫