ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

প্রযুক্তিনির্ভর গবেষণামুখী শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস

প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩

ফিচার প্রতিবেদক

দেশে শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ চলে যায়। আবার অনেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে অনেক খরচ কথা চিন্তা করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে না। ২০০৩ সালে উচ্চশিক্ষায় বিদেশমুখিতা কমাতে এবং দেশের মানুষের আর্থিক সাশ্রয়ের কথা চিন্তা করে যাত্রা শুরু করে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। দেশে বসেই আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা অর্জনের লক্ষ্যে কিছু বিদ্যানুরাগী শিল্পপতি প্রথিতযশা শিক্ষাবিদের উদ্যোগে ২০০৩ সালের অক্টোবর মাসে মাত্র ৭৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) পথচলা শুরু। ২০ বছরের পথচলায় খুব বেশি নয়, তবে শিক্ষার্থীদের বিদেশমুখিতা কমানোর যে স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল স্বল্প সময়েই বাস্তবায়িত হয়েছে সে স্বপ্ন। শুধু তা- নয়, এখানে পড়াশোনা করছেন বিভিন্ন দেশের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। স্বল্প সময়ে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষায় যেমন এগিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি, তেমনি প্রযুক্তিনির্ভর গবেষণায় পথ দেখিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিএলএসআই ল্যাব, এইমস ল্যাব এনার্জি রিসার্চ সেন্টার। এসব ল্যাব গবেষণাগারগুলো এনে দিয়েছে জাতিসংঘের  মোমেন্টাম  ফর চেইঞ্জ অ্যাওয়ার্ড, ইন্টার সোলার অ্যাওয়ার্ড এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড সহ আরোও অনেক অর্জন। খ্যাতি এনে দিয়েছে দেশ-বিদেশে।

ঢাকা সিটির বাড্ডায় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সবুজে ঘেরা সুবিশাল দৃষ্টিনন্দন এক ক্যাম্পাস। পাঠদান চলে দক্ষ অভিজ্ঞ শিক্ষকদের সমন্বয়ে। আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামগুলো পরিচালনা করা হয় শতভাগ পূর্ণকালীন শিক্ষকদের মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাভিত্তিক ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীকে ২৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত দেয়া হয় স্কলারশিপ। ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য রয়েছে এক সুবিশাল লাইব্রেরি। রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের মাল্টিমিডিয়া শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ১০০টি স্মার্ট শ্রেণীকক্ষ। ভবনের সামনেই আছে সুবিশাল দৃষ্টিনন্দন ২০ বিঘার এক সুবিশাল সবুজ মাঠ।  রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের অডিটোরিয়াম, যেখানে বিভিন্ন কনফারেন্স, সেমিনারসহ নানা ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হয়ে থাকে। এছাড়া রয়েছে একটি আধুনিক জিমনেসিয়াম, ক্যাফেটেরিয়া এবং নামাজ কক্ষ। হাতে-কলমে শিক্ষাদানের জন্য ইউআইইউতে সার্কিট ল্যাব, মেশিন অ্যান্ড পাওয়ার সিস্টেম ল্যাব, ডিজিটাল ডিজাইন ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাব, মাইক্রোপ্রসেসর ল্যাব, হাইড্রোলিক্স ল্যাব, সার্ভেয়িং ল্যাব, এসএম ল্যাব  ইলেকট্রনিকস ল্যাবসহ ৩০টি ল্যাব রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫টি ক্লাব ১৫টি ফোরামের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে সৃজনশীল মননশীল নানা কার্যক্রম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য একটি ল্যাব হলো ভেরি লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেশন বা সংক্ষেপে ভিএলএসআই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিএলএসআই ট্রেনিং একাডেমি অ্যান্ড আইসি ডিজাইন চালু হয় ২০১৬ সালে। উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন পেশাদার লোকজন তৈরির উদ্দেশ্য নিয়েই যাত্রা তাদের। ইন্ডাস্ট্রি গ্রেড সফটওয়্যার তথা ক্যাডেন্স ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি খাতে কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করার মতো দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়। চিপ ডিজাইনে কাজ করতে হলে ক্যাডেন্স, সিনোপসিস এবং মেন্টর গ্রাফিকস টুলস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি বর্তমান সময় প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা অনুযায়ী এখানে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় এবং প্রস্তুতিমূলক প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষার্থীরা ভিএলএসআইয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করার সামর্থ্য অর্জন করেন। বহির্বিশ্বের সঙ্গে দৌড়ে যাতে পিছিয়ে পড়তে না হয়, তাই বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের তৈরির প্রত্যয়ে কাজ করছে ইউআইইউ ভিএলএসআই ল্যাব।

২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে যাত্রা শুরু সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চের (সিইআর) এর উদ্দেশ্য জ্বালানি ব্যবস্থাপনা, নীতিমালা গঠন এবং এর যথাযোগ্য ব্যবহারের উপায় নিয়ে গবেষণা করা। জন্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। সিইআরের পরিচালক ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানের পাশাপাশি গবেষণা করেন নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে। একজন শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ (সিইআর) গবেষণাগারটি বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার গবেষণায় অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি তার শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মানের যোগ্যতাসম্পন্ন করে গড়ে তোলার জন্য বছরে একাধিক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের আয়োজন করে। ফলে শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ তৈরির সুযোগ পায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।

ইউনিভার্সিটিতে মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে স্কলারশিপ। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের ২৫ শতাংশ এবং গোল্ডেন প্রাপ্তদের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত টিউশন ফি মওকুফ করা হয়। ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সর্বোচ্চ ২৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত টিউশন ফি ছাড়ের ব্যবস্থা। প্রতি ট্রাইমিস্টার ফাইনাল রেজাল্টের ওপর ভিত্তি করে ১২ শতাংশ শিক্ষার্থীকে ২৫ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত টিউশন ফি ছাড় দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা।

এছাড়া শিক্ষার্থীরা চাইলে ক্রেডিট ট্রান্সফার করে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারেন। ইউআইইউয়ের সঙ্গে আমেরিকা, কানাডা, ইউকে, জাপান, পর্তুগাল, মালয়েশিয়া থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একাডেমিক কোলাবরেশন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে টেক্সাস এঅ্যান্ডএম বিশ্ববিদ্যালয় কিংসভিল, ইউএসএ; মিনেসোটা ক্রুকস্টন বিশ্ববিদ্যালয়- ইউএসএ, ব্র্যাডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ইউকে; নিউ ব্রান্সউইচ বিশ্ববিদ্যালয়, কানাডা; ওয়াকানাই হোসুসি গাকুয়েন বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান; পোর্তো বিশ্ববিদ্যালয়, পর্তুগাল; ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া পাহাং, মালয়েশিয়া; চৌধুরী বানসী লাল বিশ্ববিদ্যালয়, ভারত অন্যতম। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে রয়েছে স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম।

শুরু থেকেই ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ভিন্ন ধারায় দেশের উচ্চশিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ইউআইইউ ২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। দি ইমপ্যাক্ট র‍্যাংকিংস এসডিজি- ক্যাটাগরিতে বিশ্বের ৮০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। ইউআইইউয়ের বিজনেস স্কুল বিশ্বখ্যাত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এসিবিএসপি কর্তৃক স্বীকৃত। বাংলাদেশে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ইউআইইউ বিনা শর্তে ১০ বছরের জন্যে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এছাড়া বিবিএ ইন এআইএস ডিপার্টমেন্ট সিআইএমএ (সিমা) কর্তৃক স্বীকৃত। এছাড়া প্রকৌশল অনুষদ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইবি) কর্তৃক স্বীকৃত। 


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫