প্রত্যাশার চেয়ে কমছে ফাইজারের কভিড প্রতিরোধী টিকা বিক্রি

প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৩

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে মহামারী শুরুর পর কভিড প্রতিরোধী টিকার জন্য আলোচনায় আসে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার ইনকরপোরেশন। মূলত জার্মানি জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানি বায়োএনটেকের সঙ্গে যৌথভাবে এ টিকা উদ্ভাবন করে ফাইজার। বিশ্বে প্রথম অনুমোদন পাওয়া টিকাও এটি। টিকা বিক্রির মাধ্যমে পরপর দুই বছর প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি মুনাফা করলেও সংক্রমণ কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি বদলে গেছে। এক পূর্বাভাসে ফাইজার বলছে, ‘‌চলতি বছর কভিড প্রতিরোধী টিকা বিক্রির পরিমাণ প্রত্যাশার চেয়েও অনেক কম হবে।’ খবর রয়টার্স।

ফাইজার ইনকরপোরেশনের প্রধান নির্বাহী আলবার্ট বোরলা বলেন, ‘‌ফাইজারের কভিড-সংক্রান্ত পণ্যগুলোর জন্য ২০২৩ সাল হবে রূপান্তরের বছর। ২০২৪ সাল নাগাদ আবার প্রবৃদ্ধিতে ফিরতে পারে কোম্পানিটি।’

এর আগে ২০২২ সালে ফাইজারের মোট বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ প্রথমবারের মতো ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়ায়। এ আয়ের মূল উৎসই ছিল কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকা ও প্যাক্সলোভিড নামের অ্যান্টিভাইরাল ট্রিটমেন্ট বিক্রি। মোট আয়ের মধ্যে ৫ হাজার ৬০০ কোটি ডলারই এসেছে কভিডসংশ্লিষ্ট খাত থেকে।

এক সম্মেলনে বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে আলবার্ট বোরলা বলেন, ‘‌আমরা জানি কীভাবে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হয়, সে অনুযায়ী পুঁজির অবস্থানও ঠিক করতে জানি। এজন্য গবেষণা ও উন্নয়ন কৌশল সৃষ্টি করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা আগের চেয়ে অনেক বাড়বে।’

ফাইজার গত বছর নতুন পাঁচটি পণ্য বাজারে এনেছিল। এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে আরো নতুন ১৪টি পণ্য বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে কোম্পানিটির। এর মধ্যে রয়েছে রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) ও এমআরএনএ ফ্লু প্রতিরোধী ভাইরাস।

সবশেষ দিন শেয়ারবাজারের লেনদেন শেষে দেখা গেছে, ফাইজারের শেয়ারদরে কিছুটা পতন হয়েছে। বিশ্লেষক অ্যান্ড্রিউ বম বলেন, ‘‌ফাইজার এখন কভিড প্রতিরোধী ওষুধের ওপর নির্ভরতা কমাতে চাইছে। কেননা এক ধরনের ওষুধের ওপর নির্ভর করে প্রবৃদ্ধি অর্জন করা যায় না।’

তবে কেবল যে কভিড টিকা বিক্রি কমে যাওয়ার কারণেই ফাইজার বিপদে পড়েছে তেমনটিও নয়। ২০২৫ সালের পর কিছু সর্বাধিক বিক্রীত ওষুধের ওপর থেকে মেধাস্বত্ব হারাতে হবে মার্কিন এ ওষুধ উৎপাদক প্রতিষ্ঠানকে। যার মধ্যে রয়েছে ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত আইব্রেস ও আর্থারাইটিস চিকিৎসার জেলজ্যাং। ফলে ২০২৫-৩০ এর মধ্যে বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার হারাতে হবে ফাইজারকে। 

পরিস্থিতি মোকাবেলায় গ্লোবাল ব্লাড থেরাপিউটিক ইনকরপোরেশন ও মাইগ্রেনের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বায়োহেভেনের শেয়ার কেনার পরিকল্পনা করছে ফাইজার। যেন ভবিষ্যতে পণ্যের সরবরাহে কোনো ঘাটতি তৈরি না হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, কভিড প্রতিরোধী টিকা বিক্রির মাধ্যমে বার্ষিক আয়ে যে উল্লম্ফন ফাইজার দেখেছিল তা বজায় রাখতে অন্যান্য কোম্পানি ও নতুন পণ্য কেনার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।

কভিডসংক্রান্ত পণ্য বাদ দিয়ে ২০২৩ সালে ফাইজারের আয়ে ৭-৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

আলবার্ট বোরলা বলেন, ‘‌ফাইজারের কভিড প্রতিরোধী টিকা কমিরনাটি সরাসরি সরকারের কাছে বিক্রির পরিবর্তে ২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে বাণিজ্যিক চ্যানেলের মাধ্যমে বিক্রি করবে। এ পদক্ষেপ বাস্তবায়নের পর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে টিকার দাম প্রায় চার গুণ হবে বলে প্রত্যাশা।

এছাড়া চীনে প্যাক্সলোভিডের চাহিদা নিয়েও আশাবাদ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ‘‌চীনের বাজারে এখনো সম্ভাবনা আছে। সেটি ধরতে পারলে লাভবান হবে ফাইজার।’


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫