সংবাদ সম্মেলনে নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান

দখলদারদের তথ্য মোছার কথা সত্য নয়

প্রকাশ: জানুয়ারি ২৬, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ৪৮ নদ-নদীর দখল, দূষণ নাব্যতা নিয়ে পাঁচ বছর ধরে সমীক্ষা চালিয়ে যে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে, তা থেকে কোনো তথ্য মুছে ফেলা হয়নি বলে দাবি করেছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী। গতকাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, যে প্রতিবেদনের কথা বলা হচ্ছে সেটি এখনো চূড়ান্তই হয়নি। ফলে সেটি থেকে তথ্য মুছে ফেলার কথা সত্য নয়।

৩৭ হাজার দখলদারের তথ্য মুছে দিয়েছে নদী রক্ষা কমিশন শিরোনামে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেন, ওই প্রকল্প সমীক্ষার যে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে, তা চূড়ান্ত হয়নি। তাহলে মুছে দেয়ার কথা আসছে কেন?

মনজুর আহমেদ বলেন, ৪৮ নদ-নদীর সমীক্ষা তিন বছরের প্রজেক্ট ছিল। তবে সময় বাড়িয়ে পাঁচ বছর সময় নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে সমীক্ষার প্রতিবেদন চেয়ারম্যান বরাবর জমা দেয়া হয়েছে। আপনারা নিশ্চিত থাকুন। ৪৮ নদ-নদীর সমীক্ষার যে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে, জেলা প্রশাসক যাচাই-বাছাই করার পর চূড়ান্ত সঠিক প্রতিবেদন দেয়া হবে।

সমীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য মুছে ফেলার অভিযোগ অস্বীকার করলেও দীর্ঘদিন ধরে চলা সমীক্ষায় ত্রুটি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়েছে, সমীক্ষা সঠিক হয়নি এবং কিছু ত্রুটি ধরা পড়ছে। তাই যাচাই-বাছাই করার জন্য তালিকাগুলো জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে আমাদের নিজস্ব সার্ভারে দেবেন।

কী ধরনের ত্রুটি ধরা পড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আড়িয়ল খাঁ নদীর তিন ভাগের এক ভাগ সমীক্ষা না করে প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দেয়া হয়েছে। রকম আরো নদীর ক্ষেত্রেও হয়েছে। আবার অনেক স্থানে দেখা গেছে, দখলদার হলো সাইফুল ইসলাম, কিন্তু নাম দেয়া হয়েছে গোলাপ নামের একজনের। এখানে অন্য উদ্দেশ্য আছে। এক প্রশ্নের জবাবে মনজুর আহমেদ বলেন, ৩৯টি বড় ধরনের ত্রুটি পাওয়া গেছে। আর সমীক্ষা পানি আইনের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে, তা ঠিক হয়নি।

কিছু দখলদার ক্ষমতা দেখিয়ে সমীক্ষা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করতে চাচ্ছে বলেও সময় মন্তব্য করেন চেয়ারম্যান। তিনি এটাও জানান, এসব দখলদারকে কমিশন কার্যালয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যদিও এসব প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম প্রকাশ করতে অপারগতা জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, জীববৈচিত্র্য রক্ষা, নদীভাঙন রোধসহ দখলদারদের তালিকা তৈরিতে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। ৪৮টি নদী জরিপের প্রকল্পটি ২০১৭ সালে গ্রহণ করা হয় এবং ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়। প্রকল্পটির বাজেট ছিল প্রায় ৩৪ কোটি টাকা। সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানানো হয়, ওই সমীক্ষায় ৪৮টি নদ-নদী দখলে ৩৭ হাজার ৩৯৬ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে আসে। কিন্তু কমিশন দখলদারদের তালিকা প্রকাশ করছে না। সংস্থাটির ডাটাবেজ ওয়েবসাইটে অবৈধ স্থাপনার তালিকা প্রকাশ করা হলেও পরে তা সরিয়ে নেয়া হয়।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫