সৈকত ও মরুভূমিকে ক্যানভাস বানিয়ে গিনেস বুকে নাম

প্রকাশ: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩

বণিক বার্তা অনলাইন

প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে সৈকতে আঁকাবুকি করা মানুষের স্বভাব। কারো জন্য এটি ধ্যান ও কারো জন্য বালিতে নিজের কথা লিখে রাখার উপায়। তবে ফিলিপিনো আর্টিস্ট নাথানিয়েল আলাপিদের আঁকাআঁকি গড়িয়েছে আরো বহুদূর। সৈকতের বালিতে চিত্রকর্ম এঁকে বর্তমানে তার নাম ওঠেছে গিনেস বুকে।

দুবাইয়ের ৭২ কিলোমিটার সমুদ্রতট ও বিস্তৃত মরুভূমি এখন যেন নাথানিয়েলের ক্যানভাস। ৪৫ বছর বয়সী এ তরুণ প্রায় প্রতিদিন সকালেই ছুটে যান সমুদ্র সৈকতে। আঁকতে থাকেন নানা রকম ক্যালিগ্রাফিক স্ট্রোক। তাও শুধু একটা গার্ডেন রেক দিয়ে। মুগ্ধতা ছড়ানো চিত্রকর্মগুলো গড়পরতা ২০ বর্গ মিটার জুড়ে থাকে। কোনো লেখা যুক্ত করে দিলে আকার দাঁড়ায় ১০০ বর্গ মিটার পর্যন্ত।

নাথানিয়েল আলাপিদে বালিতে আঁকা শুরু করেন ২০১৪ সালে। মৃত দাদির প্রতি শ্রদ্ধা হিসেবে বালিতে একটা গাছ এঁকেছিলেন তিনি। শিল্পকর্মটি তখনই পর্যটকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। যা দেখে তার প্রতি আগ্রহ দেখায় স্থানীয় হোটেল কর্তৃপক্ষ। তারাই নাথানিয়েলকে প্রথমবারের মতো ২০১৫ সালে চাকরি দেন। বালিতে ছবির আঁকার চাকরি।

ছবি: সিএনএন

তখন থেকে আরব আমিরাতের সৈকত জুড়ে একের পর এক চিত্রকর্ম এঁকে চলছেন নাথানিয়েল। এঁকেছেন প্রায় ১ হাজার ৯০০ চিত্রকর্ম। তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে বারবেরি ও অ্যাডিডাস। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে আরব আমিরাত নিয়ে নির্মিত ডকুমেন্টারির জন্যও এঁকেছেন। এমনকি খোদ আমিরাত সরকার তাকে দিয়েই সৈকতে কভিডবিরোধী প্রচারণা চালিয়েছে। সৈকতে বিশাল আকৃতিতে লিখেছেন #স্টে হোম। যা আকাশ থেকেও দৃশ্যমান ছিল।

২০২২ সালে বিশ্বের বৃহত্তম চিত্রকর্ম আঁকার রেকর্ড গড়েন নাথানিয়েল। চিত্রকর্মটি ছিল ২৩ হাজার বর্গমিটারের। যার প্রশংসায় মাতে আবুধাবি অ্যাভিয়েশন ক্লাব ও আমিরাতের শাসক। চিত্রকর্মটি আঁকার জন্য সময় লেগেছে ৩০ দিন ও উপাদান ছিল চার রঙের ১২ হাজার টন বালি লেগেছে। এই পরিমাণ বালি আনা হয়েছে আমিরাতের বিভিন্ন মরুভূমি থেকে।

ছবি: সিএনএন

চর্চা করে হাত পাকালেও নাথানিয়েলের কাছে বালিতে ছবি আঁকা বেশ কঠিন। তিনি বলেন, রেকর্ড গড়া চিত্রকর্ম নির্মাণের বিশতম দিনে বৃষ্টি নামে। শুরু হয় ঝড়ো বাতাস। প্রায় সবটুকুই ভেঙে যায়। খুব সম্ভবত এজন্যই শিল্পের এ ধরনটাকে আমি পছন্দ করি বেশি। এটা সাময়িক। আমার কাছে প্রার্থনার মতো। সকালে আমি কাজ করি, সন্ধ্যার দিকে এগুলো ধুয়ে যায় সমুদ্রের স্রোতে।

শিল্পের এ রূপটি নতুন একটা বিষয়কেও মনে করায়। সবকিছুই বিরামহীন পরিবর্তনশীলতার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। তিনি বলেন, বালির চিত্রকর্ম একইসঙ্গে সৌন্দর্য ও হারিয়ে ফেলাকে দেখায়। সৌন্দর্য হলো শিল্পের। হারিয়ে ফেলি যখন তা ধুয়ে যায়।

শিল্পকে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের বড় একটি মাধ্যম অভিহিত করে বলেন, বয়স্কদের চেয়ে বাচ্চারা চিত্রকর্মের প্রতি বেশি মনোযোগ দেয়। তার কারণ তারা পরিবেশ সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন। অন্যদিকে বড়রা জীবন নিয়েই ব্যস্ত। 

সিএনএন অবলম্বনে


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫