অ্যান্টিবায়োটিকের অতিব্যবহারের ফলে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়েছে উল্লেখ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, অ্যান্টিবায়োটিকের অপপ্রয়োগের ফলে বৈশ্বিক খাদ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের ফলে যে কেউ যেকোনো বয়সে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
বিশ্বব্যাপী ক্রমেই প্রকট হয়ে ওঠা এ সংকট এখন দেশে দেশে চিকিৎসা খাতসংশ্লিষ্টদের মাথাব্যথার বড় কারণ হয়ে উঠেছে। তবে এর মধ্যেও বিশ্বব্যাপী অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ-ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় এ ব্যবহার বৃদ্ধির প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।
ডব্লিউএইচও অন্য এক প্রতিবেদনে বলছে, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সে বেশি আক্রান্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চল। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা অঞ্চলও এটি। এএমআরে শুধু যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনগণের স্বাস্থ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনগণের ভালো থাকাকে প্রভাবিত করে তা-ই নয়, এর পরিসর আরো বেশি বিস্তৃত। সাম্প্রতিক ইতিহাস এবং বিভিন্ন গবেষণা বলছে, সুপার বাগগুলোর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা খুবই বাস্তবসম্মত, ফলে বিষয়টির কিছু গভীর বৈশ্বিক তাত্পর্য রয়েছে।
গত দুই দশকে বিশ্বব্যাপী পরিচালিত বিভিন্ন সমীক্ষা ও জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে গবেষণা চালিয়ে গ্লোবাল রিসার্চ অন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (জিআরএএম) প্রকল্পের বিশেষজ্ঞরা দেখতে পেয়েছেন, এ সময়ের মধ্যে বিশ্বব্যাপী শিশুদের (পাঁচ বছরের কম বয়সী) ওপর অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োগ বেড়েছে ৪৫ দশমিক ৯ শতাংশ। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বৃদ্ধির প্রবণতা উচ্চ আয়ের দেশগুলোর চেয়ে অনেক বেশি। এ দুই দশকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ৭৬ শতাংশ। এর মধ্যে আবার সবচেয়ে এগিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। এ অঞ্চলে দুই দশকে শিশুদের ওপর অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ বেড়েছে প্রায় ১১৬ শতাংশ। ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ জার্নালে এ গবেষণার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।