দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বপ্রথম ১৯৪৭ সালের জুলাইয়ে একাডেমিক বিভাগ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক চালু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে দেশে মোট ছয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়ানো হয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স, মাস্টার্স, এমফিল, পিএইচডি করার সুযোগ মিলবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ব্যাচেলর অব সোশ্যাল সায়েন্স (সম্মান), মাস্টার
অব সোশ্যাল সায়েন্স (এমএসএস), মাস্টার
অব ফিলোসফি (এমফিল) ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস (পিজিডিআইআর) এবং ১৮ মাসের প্রফেশনাল মাস্টার্স ইন ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস (পিএমআইআর) ডিগ্রি দেয়া হয়। ঢাবির এ বিভাগ বর্তমানে সেমিস্টার পদ্ধতির অধীনে চার বছরের স্নাতকে (সম্মান) কোর্সের অংশ হিসেবে দুটি বিদেশী ভাষাও পড়ানো হয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বাংলা, ইংরেজি ব্যতীত কোর্স হিসেবে আধুনিক ভাষার যেকোনো একটি গ্রহণ করতে হবে। বর্তমানে জাপানি ও ফরাসি এ দুটি ভাষা শেখানো হয়। এছাড়া চাইনিজ, জার্মান, স্প্যানিশ, কোরিয়ানসহ আরো বিদেশী ভাষা কোর্স হিসেবে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের এ বিভাগে স্নাতকে আসন সংখ্যা ৮০।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দ্বিতীয় বিভাগটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। জাবি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মীর মাসুদুল আলম জানান, কলা অনুষদের অধীন আন্তর্জাতিক সম্পর্কে বিএসএস, এমএসএম, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য সব বিভাগের শিক্ষার্থীরাই পড়তে পারবেন। অতিরিক্ত শর্ত হিসেবে ৮০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা, ইরেজিতে নির্ধারিত পাস নম্বরের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সম্পর্কিত আটটি প্রশ্নের অন্তত ছয়টি সঠিক উত্তর দিতে হবে। আসন সংখ্যা মোট ৬০টি, তবে কোটাসাপেক্ষে নির্ধারিত আসনের বাইরেও প্রতি বছর অতিরিক্ত ছয়-সাতজন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ২০১৪ সালে চালু হওয়া আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে বর্তমানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও এমফিল ডিগ্রি দেয়া হয়। আসন সংখ্যা ৪০। এ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী জানান, রাবির কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় ‘এ’ ইউনিটের অধীনে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এ বিভাগে ভর্তিতে নির্দিষ্ট কোনো শর্ত নেই।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সবচেয়ে বেশি আসন রয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। মোট আসন সংখ্যা ৯০। চবি আইআর বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন জানান, এখানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল এবং পিএইচডি ডিগ্রি দেয়া হয়।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল: বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ অনুষদে বিএসএস ইন ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস ও মাস্টার অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস (এমআইআর) ডিগ্রি প্রদান করা হয়। সাধারণত এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর ৪৫-৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি): বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। বশেমুরবিপ্রবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদাউস জানান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজিতে ৪০ শতাংশ নম্বর পেলেই এ বিভাগে ভর্তি হওয়া যায়। আসন সংখ্যা ৬০। এছাড়া একাডেমিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করলে শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে।