বিক্ষোভের হুমকি সত্ত্বেও পশ্চিমা ভ্যাকসিন গ্রহণে অনীহা চীনের

প্রকাশ: ডিসেম্বর ০৫, ২০২২

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড-১৯ মোকাবেলায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। কভিডের হার যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে জনদুর্ভোগও। রকম পরিস্থিতিতে কার্যকর পশ্চিমা ভ্যাকসিন গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন চীনা নেতা। খবর দ্য স্ট্রেইট টাইমস।

চীনে বর্তমানে দৈনিক কভিড-১৯ শনাক্তের হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এসবের মধ্যেও দেশটির অনেক অঞ্চলে কভিড পরীক্ষা কোয়ারেন্টিন নীতিমালা শিথিল করা হয়েছে। শি জিনপিংয়ের জিরো কভিড নীতির ফলে তীব্র অর্থনৈতিক মন্দা জনসাধারণের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টির পরই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক এভ্রিল হাইনেস গত শনিবার জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বিক্ষোভে কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতা হারানোর হুমকি নেই। তবে বিক্ষোভকারীরা শি জিনপিংয়ের ব্যক্তিগত অবস্থানকে প্রভাবিত করতে পারে।

ক্যালিফোর্নিয়ায় আয়োজিত বার্ষিক রিগ্যান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোরামের বক্তব্যে এভ্রিল হেইনেস বলেছিলেন, ভাইরাসের সামাজিক অর্থনৈতিক প্রভাব সত্ত্বেও শি জিনপিং পশ্চিমাদের কাছ থেকে উন্নত মানের ভ্যাকসিন নিতে ইচ্ছুক নন। এর পরিবর্তে চীনা নেতা এমন একটি ভ্যাকসিনের ওপর নির্ভর করছেন, যা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে ততটা কার্যকর নয়।

চীন কোনো বিদেশী কভিড-১৯ ভ্যাকসিন এখনো অনুমোদন করেনি। অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদিত ভ্যাকসিনগুলোই তারা ব্যবহার করে আসছে। কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, চীনের এসব ভ্যাকসিন বিদেশী কিছু ভ্যাকসিনের মতো কার্যকর নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুহূর্তে ভাইরাস প্রতিরোধের নীতি শিথিল করা চীনের জন্য বড় ঝুঁকি নিয়ে আসতে পারে।

হোয়াইট হাউজ চলতি সপ্তাহের শুরুতে বলেছিল, ভ্যাকসিনের জন্য ওয়াশিংটনের কাছে অনুরোধ করেনি বেইজিং। এক মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, চীন পশ্চিমা ভ্যাকসিন অনুমোদন করবে, বর্তমানে এমন কোনো প্রত্যাশা নেই। আর পশ্চিমা ভ্যাকসিনগুলোকে গ্রিন সিগন্যাল দিলেও সেটা শিগগিরই দেবে বলে মনে হচ্ছে না। কেননা ভ্যাকসিন-সংক্রান্ত বিষয়টি চীনের জাতীয় গৌরবের বিষয়। বিদেশী ভ্যাকসিন অনুমোদন করার পথে গেলে চীনের ভ্যাকসিন অবমূল্যায়িত হবে।

গত সপ্তাহে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর পরই চীনের গুয়াংজু চংকিং শহরে কভিড বিধিনিষেধ হঠাৎ তুলে নেয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর শেনজন কর্তৃপক্ষ গত শনিবার ঘোষণা করেছে, শহরটির বিভিন্ন পার্ক অথবা গণপরিবহনগুলোতে ভ্রমণের জন্য জনসাধারণকে আর কভিড-১৯ টেস্টের নেগেটিভ রেজাল্ট উপস্থাপনের প্রয়োজন হবে না। শেনজেন কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসায় ভ্রমণকারীদের এখন আর কভিড টেস্টের প্রয়োজন হবে না। চেংডু তিয়ানজিংয়ের মতো বড় শহরগুলোর পথ অনুসরণ করে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সুপার মার্কেটের মতো জায়গায় প্রবেশের শর্ত হিসেবে কভিড নেগেটিভ রিপোর্ট দেখানোর নিয়ম বন্ধ করা হলে রাজধানী বেইজিংয়ের অনেক কভিড পরীক্ষণ বুথও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস চিহ্নিতকরণের পরীক্ষণ বুথ অপসারণ করায় বেইজিংয়ের বাসিন্দাদের উল্লাস করতে দেখা গিয়েছে। জিরো কভিড নীতির ফলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে এমন পদক্ষেপ নিতে হয় চীনা কর্তৃপক্ষকে। আর বিক্ষোভ মোকাবেলায় আপাতপ্রয়াসে শুধু বয়স্ক ব্যক্তিদের টিকা দেয়ার পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছে চীন।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫