দেশে পদ্মা ও মেঘনা নামে দুটি বিভাগ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব আপাতত স্থগিত করেছে সরকারের প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার)। বিভাগ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ স্থগিতের পেছনে ব্যয়সাশ্রয় নীতির কথা বলা হচ্ছে। নিকারের আহ্বায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পদ্মা ও মেঘনা প্রশাসনিক বিভাগ প্রতিষ্ঠা করতে ম্যাসিভ ফান্ড ইনভেস্টমেন্ট আছে। সরকার যেহেতু এ মুহূর্তে অত বড় ফান্ডিং সম্পন্ন কাজকর্ম একটু কম করছে, সেজন্য এটা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে আরেকটু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে। একটা বিভাগ করতে গেলে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি লাগে। সব ডিপার্টমেন্টকে যদি আমরা একসঙ্গে কাউন্ট করি, তাহলে অনেক টাকা লাগবে। বিভাগ দুটি প্রতিষ্ঠায় ঠিক কত টাকা লাগবে তাও প্রাক্কলন করতে বলা হয়েছে।
নিকারের গতকালের সভায় পদ্মা ও মেঘনা প্রশাসনিক বিভাগের প্রস্তাব ছাড়াও আরো চারটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়। এগুলো হলো কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের থানাটি স্থানান্তর করে ঝাউদিয়া পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া এবং একইভাবে ঝাউদিয়া পুলিশ ক্যাম্পটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে স্থানান্তর, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় একটি ‘সি’ শ্রেণীর পৌরসভা গঠন, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ও বোয়াই ইউনিয়নের একটা অংশকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে সংযোজন করে মাদারগঞ্জ উপজেলার সীমানা পুনর্নির্ধারণ এবং ময়মনসিংহের নান্দাইল পৌরসভার সীমানা সম্প্রসারণ। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, উপস্থাপন করা চারটি প্রস্তাবই অনুমোদন হয়েছে।
একই সময় গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সচিব সভার বিষয়ে ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, সচিব কমিটির মিটিংয়ে ১২-১৩টি বিষয় আলোচনা হয়েছে। মূল বিষয় ছিল দেশের খাদ্যনিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা যায়। এটা প্রথমে ছিল। খাদ্য মজুদে আমরা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছি। ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ১৬ লাখ টনের বেশি খাবার আমাদের মজুদ আছে। আরো আলোচনা করা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ এবং বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্য আমদানি নিশ্চিত করা এবং কোনো অবস্থায়ই যেন খাদ্যের মজুদ ১৫ লাখ টনের নিচে না নামে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, খাদ্য, সার ও জ্বালানিকে গুরুত্ব দেয়ার বিষয়ে তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিদেশী ফল, প্রসাধনি, দামি কাপড়সহ বিভিন্ন বিলাসপণ্যে খরচ কমাতেও বলা হয়েছে। পাশাপাশি খাদ্যোৎপাদন বাড়াতে পতিত সব জমি ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন সরকারপ্রধান। সেই সঙ্গে সুশাসনের জন্য জনগণের ও রাষ্ট্রের চাহিদার সমন্বয় করে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্মার্ট গভর্ন্যান্সের দিকে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বৈঠকে। সিটিজেন চার্টার, এনআইএস, তথ্য অধিকার আইন যেন ভালোভাবে বাস্তবায়ন করা হয়, সেসব বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে।