রংপুরের গঙ্গাচড়ায় এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে পাঁচজনের আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২-এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন গঙ্গাচড়া উপজেলার নরসিংহ মর্ণেয়া গ্রামের আবুজার রহমান (২৮), আলমগীর
হোসেন (২৭), নাজির
হোসেন (৩২), আব্দুল
করিম (২৯) ও আমিনুর রহমান (২৯)। এদের মধ্যে আলমগীর হোসেন পলাতক।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলার প্রধান অভিযুক্ত আবুজার রহমানের সঙ্গে ভুক্তভোগী কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় বিয়ের জন্য চাপ দিলে অস্বীকৃতি জানায় আবুজার। ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ১৪ মে কিশোরীর বাবা ও মা লালমনিরহাটে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যান। এ সময় ভুক্তভোগী ও তার ১২ বছর বয়সী ভাগ্নি বাড়িতে ছিল। এ সুযোগে অভিযুক্ত আবুজার সহযোগীদের নিয়ে সন্ধ্যায় তাকে বাড়ি থেকে ডেকে পাশের একটি ধইঞ্চা খেতে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা করেন। ওইদিন রাতে বাড়িতে ফিরে মেয়েকে না পেয়ে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ নেন বাবা-মা। পরদিন সকালে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে ধইঞ্চা খেত থেকে ওই কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা। প্রায় সাত বছর পর গতকাল এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন।
এদিকে ধর্ষণের দায়ে রংপুরে মিঠুন শেখ ওরফে সবুজ নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সকালে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-৩-এর বিচারক এম আলী আহমেদ এ রায় দেন।
মামলা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে আসামি মিঠুন শেখ তারাগঞ্জের সয়ার দামোদরপুর গ্রামের এক তরুণীকে সেলফোনে ডেকে নিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরপাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করেন। মিঠুন শেখ বদরগঞ্জের গোপালপুর শেখের হাট আদর্শ পাড়ার মোজাহার শেখ ওরফে মোজাহারুলের ছেলে। এ ঘটনায় ওই তরুণীর পিতা বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় ১১ ডিসেম্বর মামলা করেন। সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে বিচারক এ রায় দেন।