দেশে শিশুমৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ নিউমোনিয়া

প্রকাশ: নভেম্বর ০৭, ২০২২

বণিক বার্তা ডেস্ক

শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ার প্রকোপ অনেক বেশি দেখা যায়। প্রাণও হারায় অনেক শিশু। ২০১৯ সালের নভেম্বরে প্রকাশিত ইউনিসেফের একটি গবেষণা বলছে, ২০১৮ সালে সারা বিশ্বে পাঁচ বছরের কম বয়সী আট লাখেরও বেশি শিশু নিউমোনিয়ায় মৃত্যুবরণ করে, অর্থাৎ প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে মৃত্যু হয় একটি শিশুর। দুই বছরের কম বয়সী যত শিশু মারা গেছে তাদের বেশির ভাগ জন্মের প্রথম মাসেই মৃত্যুবরণ করেছে। নিউমোনিয়া প্রতিরোধে আরো জরুরি পদক্ষেপ নেয়া না হলে আগামী এক দশকে লাখ ৪০ হাজার শিশু প্রাণ হারাতে পারে বলেও সতর্ক করে ইউনিসেফ।

২০১৮ সালে অন্য যেকোনো রোগের তুলনায় রোগে অনেক বেশি সংখ্যক শিশুর মৃত্যু হয়। ওই বছর পাঁচ বছরের কম বয়সী লাখ ৩৭ হাজার শিশু ডায়রিয়ার এবং লাখ ৭২ হাজার শিশু ম্যালেরিয়ায় মারা যায়। বাংলাদেশে ২০১৮ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী ১২ হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয় নিউমোনিয়ায়। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় একজনের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়। ২০১৮ সালে বাংলাদেশে মৃত্যুবরণ করা শিশুদের ১৩ শতাংশেরই মৃত্যু হয় নিউমোনিয়ায়।

বাংলাদেশ জনমিতি স্বাস্থ্য জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি এক হাজার জীবিত জন্ম নেয়া শিশুর মধ্যে ১২ শিশু মারা যেত নিউমোনিয়ায়। ২০২০ সালে সেটি ছিল প্রতি হাজারে আটজন। বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি এক হাজার জীবিত জন্ম নেয়া শিশুর মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা তিনে নামিয়ে আনার কথা।

২০১৯ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মৃত্যুহার প্রতি ১০০০ জীবিত জন্মগ্রহণ করা শিশুর মধ্যে ৪০।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশে শিশুমৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ এখন নিউমোনিয়া। বছরে যত শিশু (পাঁচ বছরের কম বয়সী) মারা যাচ্ছে, তাদের ১৮ শতাংশই মৃত্যুবরণ করে রোগে আক্রান্ত হয়ে।

রোগ থেকে শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে হলে শিশুর গোসলের সময় হালকা গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। শিশুকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত অন্য শিশুর থেকে দূরে রাখতে হবে। শিশুকে সবসময় পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেই সঙ্গে পরিষ্কার পোশাক পরাতে হবে। বাইরে থেকে এসে হাত-মুখ সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। খাওয়ার আগে অবশ্যই হাত ধুতে হবে। শিশুর ডায়াপার ঘন ঘন পরিবর্তন করতে হবে। শিশুর যাতে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা বা গরম না লাগে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পর্যাপ্ত তরল খাবার খাওয়াতে হবে শিশুকে। শিশুকে সবসময় হাওয়া বাতাস চলাচল করে এমন ঘরে রাখতে হবে।

নিউমোনিয়া রোগটি টিকা দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব এবং সঠিকভাবে নির্ণয় করা গেলে স্বল্প ব্যয়ের অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে সহজেই চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু এখনো কোটি কোটি শিশু নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিনের আওতার বাইরে রয়েছে এবং প্রতি তিনটি শিশুর একজন লক্ষণ দেখা দেয়া সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পায় না। মারাত্মক নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে অক্সিজেন সাপোর্টও প্রয়োজন হতে পারে। সেগুলো নিশ্চিত করতে পারলে শিশুকে চূড়ান্ত বিপদ থেকে রক্ষা করা সহজ হবে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫