পুরুষের তুলনায় বেশি ভুক্তভোগী নারীরা

প্রকাশ: অক্টোবর ৩১, ২০২২

ফিচার ডেস্ক

মাথাব্যথার প্রাথমিক কারণ মাইগ্রেন। গবেষণা বলছে, এক বছরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেডেক ক্লিনিকে চিকিৎসা নেয়া ৮৫৪ জন রোগীর ২৭ শতাংশ মাইগ্রেনে আক্রান্ত। বেশকিছু প্রশ্নের ভিত্তিতে গবেষণার তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়। তথ্য বলছে, মাইগ্রেনে আক্রান্তদের ৩৬ শতাংশের মাইগ্রেনের পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে। বাংলাদেশের মাইগ্রেনে আক্রান্তদের ৮১ শতাংশেরই মাইগ্রেন বেড়ে যাওয়ার পেছনে এক থেকে তিনটি বিষয় কাজ করে। বাংলাদেশীদের মধ্যে অন্যান্য আরো বেশকিছু বিষয়ের পাশাপাশি সূর্যের আলোতে থাকা এবং পথে চলাচলও একটি মূল বিষয় হিসেবে কাজ করে।

তাছাড়া ওই গবেষণায় আরো উঠে এসেছে ২৫ শতাংশ আক্রান্তের ক্রমাগত দৈনিক মাইগ্রেনের কারণে মাথাব্যথায় আক্রান্ত হয়। ২৬ শতাংশ প্রতি মাসে অন্তত পাঁচবার মাথাব্যথার শিকার হয় আর ১৫ শতাংশ আক্রান্ত হয় মাসে চারবার। আক্রান্তদের ৪৪ শতাংশের সহনীয় মাত্রার মাথাব্যথা থাকলেও ৫৬ শতাংশের মাথাব্যথা হয় তীব্র।

সাম্প্রতিক আরেক গবেষণা বলছে, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত ২৭ শতাংশ ছাত্রী মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছেন, ছাত্রদের তুলনায় যা তিন গুণেরও বেশি। দেশের ছয়টি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর পরিচালিত প্রিভ্যালেন্স অব মাইগ্রেন অ্যান্ড ইটস অ্যাসোসিয়েটেড ফ্যাক্টরস অ্যামং মেডিকেল স্টুডেন্টস অব বাংলাদেশ: ক্রস সেকশনাল স্টাডি শীর্ষক গবেষণা বলছে, দেশের মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাথাব্যথার প্রবণতা বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের ১৯ শতাংশের মধ্যে মাইগ্রেন বা মাথাব্যথার প্রবণতা দেখা গেছে। যার মধ্যে ২৭ শতাংশ নারী শতাংশ পুরুষ শিক্ষার্থী। নারীদের মাইগ্রেন বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে গবেষকরা বলছেন, হরমোন ঘুমস্বল্পতা এক্ষেত্রে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। রোগটিতে আক্রান্তদের ৯০ শতাংশ মাঝারি থেকে গুরুতর সমস্যায় ভুগছে।  গবেষণার জন্য খুলনা মেডিকেল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল, মুগদা মেডিকেল, জেড এইচ সিকদার, সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল এনাম মেডিকেল কলেজের হাজার ৩০০ শিক্ষার্থীর তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ১৭ থেকে ২৫ বছর বয়সী নারী পুরুষ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে গুণ পরিমাণগত গবেষণা পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

গবেষণায় অংশ নেয়া ১৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাথাব্যথার প্রবণতা দেখা গেছে। যাদের মধ্যে ২৪ শতাংশের বয়স ১৭ থেকে ১৯ বছর। নিয়মিত ব্যায়ামের অভাব, ধূমপান, অ্যালকোহল গ্রহণ খারাপ ঘুমের গুণমান মাথাব্যথার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। ভুক্তভোগীদের ৪২ শতাংশ মাঝারি এবং ৪৮ শতাংশ গুরুতর মাথাব্যথায় ভুগছে। তাদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ এক মাসের মধ্যে ১০ বারেরও বেশি আক্রমণের শিকার হয়েছে। একইভাবে আক্রান্তদের মধ্যে ৮৪ শতাংশের বমি ভাব হয়েছে, ফটোফোবিয়ায় ভুগেছে ৭২ শতাংশ এবং ৫৩ শতাংশ ভুক্তভোগী বমিও করেছে। তিন-চতুর্থাংশ সমস্যাগ্রস্ত একতরফা মাথাব্যথার শিকার হয়েছে, যাদের মধ্যে ৮৩ শতাংশের মাথার শিরায় ব্যথা অনুভব হয়।

মানসিক চাপের ফলে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী মাথাব্যথার সমস্যায় পড়েছেন। এতে ৫৫ শতাংশ ভুক্তভোগী পাওয়া গিয়েছে। অনিয়মিত ঘুম ৪৬ শতাংশ, অতিরিক্ত অধ্যয়নের ফলে ২৭ শতাংশ, শব্দের কারণে ৩৩ শতাংশ, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের কারণে ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী মাথাব্যথার মতো স্বাস্থ্যগত সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। মাইগ্রেন সম্পর্কিত অক্ষমতার মধ্যে শারীরিক ক্রিয়াকলাপের সমস্যায় পড়েছেন ২৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। এছাড়া রোদের আলোয় অস্বস্তি, ছাত্রীদের মাসিকের সমস্যা, ধূমপান, মদ্যপানসহ আরো বেশকিছু কারণ মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫