তৃতীয় মেয়াদে চীনের নেতৃত্বে শি জিনপিং

প্রকাশ: অক্টোবর ২৪, ২০২২

বণিক বার্তা ডেস্ক

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী শাসক মাও সে তুংয়ের পরই প্রভাবশালী নেতা হিসেবে তিনি নিজের আসন পাকাপোক্ত করলেন। গতকাল সিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটি পাঁচ বছরের মেয়াদের জন্য শিকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে। অধিবেশনটি অনুষ্ঠিত হয় বেইজিংয়ে গ্রেট হলে। খবর রয়টার্স।

পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় শি জিনপিংকে আন্তরিক শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়।

অভিনন্দন বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিঃসন্দেহে আপনার পুনর্নির্বাচন আপনার নেতৃত্ব, সাফল্য দৃষ্টিভঙ্গির ওপর চীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের আস্থার একটি উপযুক্ত স্বীকৃতি। সিসিপির ২০তম কংগ্রেসের সফল সমাপ্তির জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

শেখ হাসিনা বলেন, সিসিপির প্রথম শতবর্ষের লক্ষ্য ছিল ২০২০ সালের মধ্যে একটি মধ্যপন্থী সমৃদ্ধ সমাজ গঠন করা। লক্ষ্য নিয়েই প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০১২ সালে সিসিপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। বাংলাদেশ অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছে।

তিনি বলেন, উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক নীতি, জনগণকেন্দ্রিক উন্নয়ন দর্শন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের মাধ্যমে সর্বক্ষেত্রে একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ার পথে চীনকে একটি নতুন যাত্রায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা আপনার সংকল্প নির্দেশনার তারিফ করি। উন্নয়নশীল দেশগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষার প্রতি আপনার অব্যাহত সমর্থনের প্রশংসা করি। আমার বিশ্বাস, আপনি চ্যালেঞ্জিং সময়ে বিশ্বব্যাপী শান্তি স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আরো অবদান রাখবেন।

২০১৬ সালে শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সফরকে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারত্বে রূপান্তর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০১৯ সালে চীন সফরকালে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ফলপ্রসূ বৈঠকের কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি শি জিনপিংয়ের অব্যাহত সাফল্য সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের পাশাপাশি কিউবা, ভিয়েতনাম, লাওস, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা শি জিনপিংকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

নির্বাচিত হওয়ার পর শি জিনপিং গণমাধ্যমের উদ্দেশে বলেন, চীনকে আজ বিশ্বের প্রয়োজন। চীন বিশ্বকে ছাড়া উন্নতি করতে পারবে না, আবার বিশ্বেরও চীনকে প্রয়োজন।

২০তম কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় কমিটির ২৪ সদস্যের পলিট ব্যুরোর নাম ঘোষণা করা হয়। এর মধ্য থেকে সাত সদস্যের পলিট ব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্বাচিত সদস্যরা হলেন শি জিনপিং, লি কিয়াং, ঝাও লেইজি, ওয়াং হুনিং, কাই কি, ডিং জুয়েজিয়াং লি জি মিট। তবে ২৫ বছরের চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পার্টির পলিট ব্যুরোয় স্থান পাননি কোনো নারী। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, কমিটিতে শির ঘনিষ্ঠ কয়েকজন মিত্র রয়েছেন।

বিশ্বের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন, কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নায় বড় রকমের পালাবদল ঘটেছে। কেননা চীনের আগের সংবিধান অনুযায়ী দুবারের বেশি মেয়াদে কেউ চীনের প্রেসিডেন্ট হতে পারেন না। ২০১৮ সালে সংবিধান সংশোধন করা হয়।

গতকাল চীনা কমিউনিস্ট পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্যরা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। তার পরই তৃতীয়বারের জন্য কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শি জিনপিংয়ের নাম ঘোষণা করা হয়। তৃতীয়বারের মতো চীনা প্রেসিডেন্ট হওয়া শি জিনপিংয়ের জন্য শুধু সময়ের অপেক্ষামাত্র। আগামী মার্চেই আনুষ্ঠানিকভাবে শি জিনপিংকে তৃতীয়বারের জন্য চীনের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করার কথা রয়েছে। ৬৯ বছর বয়সী শি এখন চীনের তিনটি সর্বাধিক ক্ষমতাধর পদে আছেন। তিনি বর্তমানে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক, দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর চেয়ারম্যান প্রেসিডেন্ট।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫