গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। মূলত সেপ্টেম্বরে দেশটির মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বাড়ায় হতাশ হয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এর জেরে পয়েন্ট হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজার। অন্যদিকে এ সময়ে ইউরোপ ও এশিয়ার পুঁজিবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ বা ৪০৪ পয়েন্ট কমেছে। একই সময়ে দেশটির এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ বা ৮৭ পয়েন্ট ও নাসডাক সূচক ৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বা ৩২৮ পয়েন্ট হারিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এ অঞ্চলের কানাডা, আর্জেন্টিনা, পেরু, ব্রাজিল, মেক্সিকো, চিলি, ভেনিজুয়েলা ও কলম্বিয়ার পুঁজিবাজার পয়েন্ট হারিয়েছে।
ইউরোপের অন্যতম পুঁজিবাজার যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক গত শুক্রবার ৮ দশমিক ৫২ পয়েন্ট ও জার্মানির ব্লুচিপ সূচক ডিএএক্স ৮২ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বেড়েছে। একই সময়ে ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক বেড়েছে ৫২ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট। এছাড়া ডেনমার্ক, পোল্যান্ড, গ্রিস, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, হাঙ্গেরি, স্পেন, ইতালি, লুক্সেমবার্গ, বেলজিয়াম, পর্তুগাল, অস্ট্রিয়া, সুইডেন ও আয়ারল্যান্ডের পুঁজিবাজারে পয়েন্ট যোগ হয়েছে। অন্যদিকে এ সময়ে নেদারল্যান্ডস ও নরওয়ের পুঁজিবাজার ছিল নিম্নমুখী।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যাশার চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়েছে। এতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের কাছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার আরো বাড়ানো ছাড়া আর কোনো সুযোগ থাকছে না। বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে এলে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের বাড়ানোর গতি শ্লথ করতে পারে। বিদ্যমান এ পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের হতাশ করেছে। যার প্রভাব পড়েছে দেশটি পুঁজিবাজারে। বৈশ্বিকভাবে গাড়ির চাহিদা পড়ে যাওয়ার কারণে গত শুক্রবার সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলোন মাস্কের কোম্পানি টেসলা। এদিকে আর্থিক নীতিসংক্রান্ত কিছু বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের ইউ টার্ন নেয়ার পাশাপাশি দেশটির অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার প্রভাবে ইউরোপের পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
গত শুক্রবার ইউরোপের পাশাপাশি এশিয়ার পুঁজিবাজারেও ঊর্ধ্বমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে। এশিয়ার অন্যতম প্রধান পুঁজিবাজার জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক এদিন ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ বা ৮৫৩ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বেড়েছে। ভারতের বিএসই সেনসেক্স সূচক ১ দশমিক ২০ শতাংশ বা ৬৮৪ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট, ভিয়েতনামের হ্যাং সেং সূচক ১ দশমিক ২১ শতাংশ বা ১৯৮ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট ও চীনের সাংহাই সূচক ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ বা ৫৫ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বেড়েছে। এছাড়া এ সময়ে হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনের পুঁজিবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। অন্যদিকে পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলংকার পুঁজিবাজার পয়েন্ট হারিয়েছে।
গত শুক্রবার মধ্যপ্রাচ্যের পুঁজিবাজারে মিশ্র প্রবণতা দেখা গিয়েছে। এ সময় সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান ও লেবাননের পুঁজিবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। অন্যদিকে পয়েন্ট হারিয়েছে বাহরাইন, কুয়েত, সৌদি আরব, কাতার, ওমান ও মরক্কোর পুঁজিবাজার।