অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা

ব্যবসা সম্প্রসারণ নিয়ে সতর্ক অবস্থানে চীনা বিনিয়োগকারীরা

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২

বণিক বার্তা ডেস্ক

রিয়েল এস্টেট খাতের মন্দা আরো গভীর হচ্ছে। অব্যাহত রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি কভিডজনিত বিধিনিষেধও। সব মিলিয়ে ধীর হয়ে পড়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বৈশ্বিক অর্থনীতিকেই মন্দার ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। অবস্থায় চীনা বিনিয়োগকারীরা ব্যবসা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করছেন। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে তারা একত্রীকরণ অধিগ্রহণ (এমঅ্যান্ডএ) চুক্তি এড়িয়ে চলছেন। যদিও কৌশলগত প্রাইভেট ইকুইটি সংস্থাগুলো দীর্ঘমেয়াদি রিটার্নের আশায় মূলধন বিনিয়োগ করে চলেছে। শিল্পসংশ্লিষ্টদের পর্যবেক্ষণে তথ্য উঠে এসেছে। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

ব্যাংকিং কোম্পানি বিডিএ পার্টনার্সের সাংহাইভিত্তিক অংশীদার অ্যান্থনি সিউ ইয়ানহং বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা আরো স্থিতিস্থাপক এবং অর্থনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত নয় এমন খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। এজন্য সামগ্রিকভাবে ব্যবসা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ধীরগতি দেখা যেতে পারে। তবে বিশেষ খাতগুলোয় এমঅ্যান্ডএ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

চীনা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এমন সতর্কতা বিশ্ব অর্থনীতির জন্যও তাত্পর্যপূর্ণ। কারণ ২০২২ সালের প্রথমার্ধে চীনের এমঅ্যান্ডএ চুক্তি পুরো এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে হওয়া মোট চুক্তির অর্ধেকেরও বেশি ছিল। পেশাদার পরিষেবা নেটওয়ার্ক পিডব্লিউসির সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলজুড়েই এমঅ্যান্ডএ চুক্তির সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মোট এমঅ্যান্ডএ চুক্তিতে অঞ্চলের অংশীদারত্ব বাড়ছে।

প্রবণতা প্রাইভেট ইকুইটি বা বিনিয়োগ তহবিলের মাধ্যমে চালিত হয়েছে। গত তিন বছরে চুক্তি দ্বিগুণ হয়ে প্রায় ৬০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। তহবিলের সঙ্গে যুক্ত এমঅ্যান্ডএ তিন গুণ বেড়ে সমগ্র চুক্তির ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে।

পিডব্লিউসি জানিয়েছে, ব্যবসা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে তার মধ্যে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, কভিডের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব এবং নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো উল্লেখযোগ্য। চীনে দীর্ঘদিন ধরেই কভিডজনিত বিধিনিষেধ অব্যাহত রয়েছে। জিরো কভিড নীতির অংশ হিসেবে শহরজুড়ে লকডাউনের পাশাপাশি দেশটিতে যাওয়া দর্শনার্থীদের কঠোর কোয়ারেন্টিন বিধির কারণে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ধীর হয়ে পড়েছে।

২০২১ সালে চীনের কভিড-পরবর্তী পুনরুদ্ধার স্থায়ী হয়নি। মহামারীর শুরু থেকেই লকডাউন এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাঘাতের কারণে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থনৈতিক অবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধও মন্দাভাবে ভূমিকা রেখেছে।

বিডিএ পার্টনার্সের অ্যান্থনি সিউ ইয়ানহং বলেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা এখনো চীনে লেনদেন করা কঠিন বলে মনে করছেন। বাজারের ওঠানামা চীনা অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলো পরিবর্তন করে না। দেশটির ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণী এখনো ব্যয় করতে ইচ্ছুক। তবে কম খরচে উৎপাদন থেকে শুরু করে উন্নত প্রযুক্তিচালিত অর্থনীতি বিভিন্ন সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিষয়গুলো এমঅ্যান্ডএ এবং চীনে বিনিয়োগ কার্যক্রমের চালক হিসেবে কাজ করে। সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি অন্ধকারে থাকায় বিনিয়োগকারীরা ব্যবসা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিতে সময় নিচ্ছেন।

হংকংভিত্তিক ওয়েলকিন ক্যাপিটালের ব্যবস্থাপনার ৫০ কোটি ডলারের সম্পদ রয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে সংস্থাটি জানিয়েছিল, চীনের ছোট থেকে মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠানগুলোয় বিনিয়োগ করা হচ্ছে। চীনের কভিড নীতির কারণে চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সেখানে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।

ব্যবস্থাপনা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বেইন অ্যান্ড কোম্পানির বৃহত্তর চীনের এমঅ্যান্ডএ অনুশীলনের প্রধান হাও জো বলেন, চলতি বছর এমঅ্যান্ডএ আরো স্থিতিস্থাপক হয়েছে। অর্থনীতিজুড়ে মন্দাভাবের পরিস্থিতিতেও হাই-টেক, স্বাস্থ্যসেবা ভোক্তা পণ্যের মতো খাতগুলোয় এমঅ্যান্ডএ চুক্তির সুযোগ তৈরি হয়েছে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫