এমএফএস প্রতিনিধিদের নিয়ে কর্মশালা

নারীবান্ধব এমএফএস পণ্য বাজারে আনার তাগিদ

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক

এতদিন মোবাইল ফাইন্যান্সিং সার্ভিস (এমএফএস) সেবার ক্ষেত্রে নারীদের আলাদা গুরুত্ব দেয়া হয়নি। কিন্তু খাতে নারী গ্রাহকের সংখ্যা অন্তত ৪৫ শতাংশ। খাতের পণ্যগুলো সাধারণত লিঙ্গভিত্তিক নয়। তবে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী যখন নারী, তখন তাদের নিয়েই অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হবে। এজন্য নারীকে প্রাধান্য দিয়ে এমএফএস পণ্য বাজারে আনতে হবে।

গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে এমএফএস সেবাদাতা ১২টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ ব্যাংক এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) যৌথভাবে আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক খুরশীদ আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আবুল ফয়েজ মোহাম্মদ কামালউদ্দীন, মাস্টার কার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংক পেমেন্ট সিস্টেমের পরিচালক বদিউজ্জামান দিদার।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ২০১১ সালে দেশে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) যাত্রা শুরু হয়। এক দশকে ১১ কোটির বেশি মোবাইল হিসাব এবং প্রায় ১২ লাখ এজেন্ট পয়েন্ট তৈরি হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেনের মাধ্যমে একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের সর্ববৃহৎ মোবাইল মানির বাজার। তবে দেশের এমএফএস খাতে লিঙ্গভিত্তিক কোনো সেবা নেই। অর্থাৎ খাতে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীদের নিয়ে আলাদা করে ভাবা হয়নি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধু লিঙ্গ নিরপেক্ষ পণ্য বা সেবা নিয়ে অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। নারীদের জন্য আলাদাভাবে চিন্তা করা প্রয়োজন। দেশের মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কে অবহিত এবং অভ্যস্ত দাবি করে বলা হয়, খাতে নারীবান্ধব পণ্য নিয়ে এলে সেটি গ্রহণযোগ্যতা পাবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক খুরশীদ আলম বলেন, এমএফএসের সাফল্য ডিজিটাল আর্থিক বাজারের সামান্য একটি অংশকে স্পর্শ করেছে মাত্র। মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস দেশের আর্থসামাজিক খাতে আরো বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে সে লক্ষ্যে অগ্রসর হওয়ার জন্য আমাদের সরকারের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, বাংলাদেশ ব্যাংকের কৌশলগত পরিকল্পনা এবং জাতীয় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি পরিকল্পনার মূল বক্তব্য কাউকে বাদ রেখে উন্নয়ন নয় কথাটি মাথায় রাখতে হবে। আমাদের দেখতে হবে, এমএফএস হিসাবধারীদের কত শতাংশ নারী নিয়মিত লেনদেন করেন। কী কারণে এবং কী ধরনের লেনদেন করেন। আর যারা লেনদেন করছেন না, তারা কেন করছেন না। ঠিক জায়গায় কাজ করার একটি বড় সুযোগ রয়েছে। নারীদের নিয়মিত লেনদেন করার জন্য বা সক্রিয় করার জন্য প্রডাক্ট ডিজাইন করা যেতে পারে। এছাড়া নতুন নারী গ্রাহক আকৃষ্ট করার জন্য প্রডাক্ট ডিজাইন করা যেতে পারে। এমএফএস রেগুলেশনে এমএফএস প্রোভাইডারকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। সেসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন নারীবান্ধব প্রডাক্ট তৈরি করা যেতে পারে।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংক পেমেন্ট সিস্টেমের পরিচালক বদিউজ্জামান দিদার বলেন, আর্থসামাজিক খাতে নারীর অংশগ্রহণ সমসাময়িক অর্থনীতি থেকে আমাদের প্রায় দুই দশক এগিয়ে রেখেছে। তবে একই সঙ্গে আমরা উপলব্ধি করতে পারছি, আমরা যেখানে পৌঁছতে চাচ্ছি, সে লক্ষ্যে এগোতে হলে আর্থিক খাতে নারীর সংশ্লিষ্টতা আরো অনেক বাড়াতে হবে। এখনো আর্থিক খাতে সর্বোচ্চ জেন্ডার গ্যাপের মধ্যে অন্যতম একটি দেশ বাংলাদেশ। এর মানে হলো সামাজিক কার্যক্রমে আমাদের নারীদের অংশগ্রহণ যেভাবে বেড়েছে এবং এর যে ফলাফল আমরা বর্তমানে ভোগ করছি, তা পূর্ণতা পায়নি। পূর্ণতা প্রাপ্তির জন্য নারীর আর্থিক অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। আর ঠিক এজন্যই ডিজিটাল আর্থিক সেবার অন্যতম শক্তিশালী উপাদান মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস বা এমএফএসকে নিয়ে আসা। আমরা জানি আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রথম ধাপ হচ্ছে একটি লেনদেনের হিসাব খোলা। বিগত প্রায় ১১ বছরে আপনারা এমএফএস প্রোভাইডাররা নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে যেভাবে লেনদেনের ডিজিটাল পদ্ধতিকে জনগণের হাতের মুঠোয় নিয়ে গিয়েছেন, তা এককথায় অভূতপূর্ব।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫