জ্বালানি নিয়ে ওয়েবিনারে বক্তারা

সংকট নিরসনে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ানো আবশ্যক

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক

জ্বালানি সংকটের কারণ চাহিদা জোগানে ভারসাম্যের অভাব। যেহেতু প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনের মধ্য দিয়ে পরিবহন করা হয়, ফলে কেউ ইচ্ছা করলেই এর জোগান পরিবর্তন করে অন্য কোথাও পরিবহন করতে পারে না। কারণে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরে স্পট বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে। এছাড়া তেল কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগে অনীহাও সংকটের একটি কারণ। সংকট নিরসনে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ানো আবশ্যক। এরই মধ্যে ইউরোপের অনেক দেশ নবায়নযোগ্য সৌরশক্তি বায়ুশক্তির মাধ্যমে শক্তির চাহিদা পূরণ করছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্লাব ইকোনমিকস স্টাডি সেন্টারের (ইএসসি) উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত জ্বালানি সংকট এবং নীতিমালা শীর্ষক একটি ওয়েবিনারে কথা বলেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক . আহসান এইচ মনসুর।

এছাড়া ওয়েবিনারে বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক . খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সম্মানসূচক অধ্যাপক . বদরূল ইমাম। ওয়েবিনারে মডারেটরের দায়িত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান . এমএম আকাশ এবং একই বিভাগের অধ্যাপিকা . সায়মা হক বিদিশা। ওয়েবিনারটির গণমাধ্যম সহযোগী ছিল বণিক বার্তা।

. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম চলমান শক্তি সংকটের কারণ হিসেবে জোগান ব্যাহত হওয়াকে উল্লেখ করেন। যার কারণে জ্বালানির সহজলভ্যতা এবং দাম প্রভাবিত হয়েছে। পর্যাপ্ত জোগান না দেয়া গেলে জ্বালানির দাম কমার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ওপেকভুক্ত দেশগুলোর বাইরে যেসব জ্বালানিসমৃদ্ধ দেশ রয়েছে, তারা যদি জোগান বাড়াতে এগিয়ে না আসে, তাহলে জোগানও বৃদ্ধি পাবে না। ২০২৫ সালের আগে কন্ট্র্যাক্ট বাজারে জ্বালানি ক্রয়ের সম্ভাবনা নেই। কাজেই সময়ের জ্বালানির চাহিদা স্পট বাজার থেকে মেটাতে হবে। যেহেতু স্পট বাজারে জ্বালানির দাম তুলনামূলক বেশি, ফলে স্থানীয় বাজারেও জ্বালানি ক্রয়ের জন্য উচ্চমূল্য প্রদান করতে হচ্ছে। আর উচ্চমূল্য মেটাতে ক্রমাগত রিজার্ভের ওপর চাপ পড়ছে, যা সংকট পরিস্থিতিকে আরো ঘোলাটে করছে।

. বদরূল ইমাম উল্লেখ করেন, শক্তির সংকটের কারণ হিসেবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে উল্লেখ করা হলেও যুদ্ধ কেবল সংকটকে বেগবান করেছে। কারণ ২০১৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশের প্রধান জ্বালানি প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন কমেই চলেছে, যা ২০১৫ সালের আগ পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী ছিল। উৎপাদন কমার পাশাপাশি কমে যায় প্রাকৃতিক গ্যাসের রিজার্ভ। বিস্তৃত অনুসন্ধানের মাধ্যমে নতুন জ্বালানি উৎসের খোঁজ করা সময় গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু এর পরিবর্তে ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) আমদানি শুরু করে। যদিও শুরুতে আমদানি খরচ তুলনামূলক কম ছিল, তবে তা ক্রমেই বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি বছর এলএনজি ক্রয়ের জন্য ৪৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়।

. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশের একমাত্র নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র, যার ধারণক্ষমতা মাত্র ২৫০ মেগাওয়াট। এটি সমগ্র বিদ্যুৎ চাহিদার ১০ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। তৈরি পোশাক শিল্পের বিদ্যুৎ চাহিদা সৌরশক্তির মাধ্যমে মেটানো সম্ভব হলে হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা নবায়নযোগ্য শক্তির মাধ্যমে মেটানো সম্ভব হবে। জ্বালানি সঞ্চালনের সমস্যাও সংকটের বড় কারণ।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫