বৈশ্বিক খাদ্যশস্যের বাজার

ইউক্রেন-রাশিয়ার বিকল্প হতে পারেনি ভারত

প্রকাশ: আগস্ট ১৩, ২০২২

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুদ্ধের আগে ইউক্রেন ছিল বিশ্বের অন্যতম প্রধান গম রফতানিকারক দেশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে বিশ্ববাজারে ইউক্রেনের গম সরবরাহে ভাটা পড়ে। এর বিকল্প হিসেবে সম্ভাবনাময় দেশ ছিল ভারত। তবে তাপপ্রবাহের কারণে চাষ কমে যায় দেশটির। ফলে চলতি বছরের মে মাসে রফতানি বন্ধ করে ভারত। এদিকে প্রকট হচ্ছে বৈশ্বিক খাদ্য সংকট। গম রফতানি আবার চালু করলেও চাল রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক খাদ্য চাহিদা মেটাতে ভারতের ক্ষমতা সীমিত।

সংকটকালে প্রধান গম রফতানিকারকের ভূমিকা ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অতিরিক্ত আয়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে ভারত নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে। তবে জলবায়ু ছিল ভারতের প্রতিকূলে। তাপপ্রবাহে চাষ নিম্নমুখী হয়। এছাড়া ছিল মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখিতার চাপ। ফলে ভারতের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতেই শেষ হচ্ছে উৎপাদন।

ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ সেনাবাহিনী আগ্রাসন চালায়। এর জের ধরে মার্চ থেকেই বিশ্ববাজারে পণ্যদ্রব্যের দাম অব্যাহতভাবে ঊর্ধ্বমুখী হয়। সে সময় এক পূর্বাভাসে বলা হয়, ভারতে শীতকালীন গম চাষ ১১ কোটি টনে পৌঁছবে, যা রেকর্ড সর্বোচ্চ। বার্ষিক দেশীয় চাহিদার থেকে তা ১০ শতাংশ বেশি। এছাড়া দুই কোটি টন মজুদ রাখা হয়। বিশ্ববাজারে ৫০০ কোটি ডলারের গম রফতানির বিষয়ে আশাবাদী ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, বিশ্বে গম সংকট তীব্র হয়েছে। এমন সময় বিশ্ববাসীর ক্ষুধা নিরসনে এগিয়ে এসেছেন ভারতীয় কৃষকরা।

তবে বাস্তব চিত্র নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের পরিপন্থী। উত্তর ভারতের তাপপ্রবাহের ফলে তাপমাত্রা পৌঁছায় ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এতে শস্যটির উৎপাদন এক কোটি থেকে কোটি ১০ লাখ টন কমে। আবার বিশ্ববাজার থেকে গমের চাহিদা হাতছানি দেয় রফতানিকারকদের। ফলে সরাসরি কৃষকদের থেকে গম কিনতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। অভাব দেখা যায় ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে। চলতি বছরের এপ্রিলে দেশটিতে গমের দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেশি ছিল। কোনো কোনো অঞ্চলে দাম বৃদ্ধির হার ছিল ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত। ভুল বোঝাবুঝি তথ্যের বৈপরীত্য দেখা যায় কৃষি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে, যার প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায় মে মাসে। একদিকে ভারতীয় কর্মকর্তারা বিদেশী চাহিদার মুখে গম রফতানির চুক্তি করে চলে। অন্যদিকে পৃথক মন্ত্রণালয় থেকে খাদ্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির খবর মেলে। আশঙ্কা করা হয়, ক্রমে তা ভয়াবহ রাজনৈতিক অস্থিরতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এর জের ধরে ১৩ মে সব ধরনের বাণিজ্যিক গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত সরকার।

ফলন কম এর ফলে দাম বৃদ্ধির কারণে ভারতীয় গম থেকে বঞ্চিত হয় আমদানিকারক দেশগুলো। তাই বিশেষজ্ঞদের মত, বিশ্ববাজারের চাহিদা মেটানোর জন্য ভারত প্রস্তুত নয়।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫