রুশ অর্থ স্থানান্তরে তুরস্কের বৈদেশিক রিজার্ভ বেড়েছে

প্রকাশ: আগস্ট ০৬, ২০২২

বণিক বার্তা ডেস্ক

ফেব্রুয়ারির পর তুরস্কের সরকারি রিজার্ভ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। মূলত রাশিয়া মালিকানাধীন নিউক্লিয়ার করপোরেশন রোসাটম তুরস্কে অবস্থিত সহযোগী প্রতিষ্ঠানে অর্থ পাঠানোর পর রিজার্ভ বেড়েছে। খবর ব্লুমবার্গ।

গত সপ্তাহে তুরস্কের রিজার্ভ প্রায় ৩০০ কোটি ডলার বেড়েছে। যার মধ্যে ১৬০ কোটি ডলার মূল্যের স্বর্ণ রয়েছে এবং বাকি রিজার্ভ বৈদেশিক মুদ্রা থেকে এসেছে। সম্প্রতি তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ হাজার ১১০ কোটি ডলার এবং স্বর্ণ হাজার ২০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে টেলিভিশনের কাছে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে দেশটির অর্থমন্ত্রী বলেন, রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ছে। এজন্য নাম উল্লেখ না করে তিনি অন্য দেশ থেকে আসা বড় অংকের অর্থকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। তুমুল প্রতিযোগিতার বাজারে তুরস্ক তাদের অর্থনীতিকে প্রাধান্য দিয়ে কীভাবে কাজ করছে সেটি তার নীতিনির্ধারণের মধ্যে ফুটে উঠেছে।

বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যখন বড় ব্যবধান বিরাজমান, তখন দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ বাড়ানোর বিষয়ে কাজ করছে। পাশাপাশি লিরার মানোন্নয়নেও কাজ করতে হবে। অর্থাৎ নীতিনির্ধারকদের মুদ্রার অঘোষিত লেনদেনের বিষয়টিও দেখতে হবে। যেটি রিজার্ভের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

মূলধন প্রবাহের সাপ্তাহিক ভাঙনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী জানা যায়, তুরস্কের মুদ্রা কর্তৃপক্ষ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ২০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, অন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা আন্তর্জাতিক সমঝোতার মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ আরো ১৮০ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা পেয়েছে। সহযোগী প্রতিষ্ঠানে অর্থ আসার বিষয়ে আঙ্কারার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সম্প্রতি নেবাতি জানান, বিদেশী প্রতিষ্ঠান থেকে আসা অর্থের কারণে আগামী কয়েক সপ্তাহে রিজার্ভের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। গত মাসে ব্লুমবার্গকে তুরস্কের কর্মকর্তারা জানান, ভূমধ্যসাগর উপকূলে হাজার কোটি ডলার মূল্যের আক্কুয়ু পারমাণবিক প্লান্টে হাজার ৫০০ কোটি ডলার স্থানান্তরের জন্য রাশিয়ার রোসাটম কাজ করছিল।

রাশিয়ান সংস্থাটি জানায়, তুরস্কের সহযোগী প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরিত অর্থের পরিমাণ খুবই কম। তুরস্কের কোনো ব্যাংক যদি অর্থ পেয়ে থাকে তাহলে তারা মুদ্রা কর্তৃপক্ষের তথাকথিত ডিপোট মেকানিজমের আওতায় যেকোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ডলার ধার দিতে পারবে। ২০১৯ সাল থেকে তুরস্কের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভের লিরা লেনদেনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা ধার করে আসছে। জুনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত সবশেষ তথ্যানুযায়ী, মেকানিজমের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত হাজার ৯০০ কোটি ডলার নেয়া হয়েছে। ধরনের অদল-বদল বাণিজ্যিক ঋণদাতাদের কিছু নতুন প্রাপ্ত তহবিল আর্থিক কর্তৃপক্ষের কাছে রাখার সুবিধা দেয়। যার বিনিময়ে ব্যাংকগুলোকে লিরা ধার দেয়া হয়ে থাকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য ২০১২ সাল থেকে চীন, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে মুদ্রা বিনিময় চুক্তি করেছে। ২০১৯ সালে তত্কালীন অর্থমন্ত্রী বেরাত আলবায়রাকের অধীনে লিরাকে সহায়তার জন্য অবৈধ লেনদেন শুরু হলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। গত বছরের শুরুতে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান জানিয়েছিলেন, লেনদেনের পরিমাণ ১৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫