রেকর্ড উচ্চতায় রফতানি

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতিতে নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত

প্রকাশ: আগস্ট ০৬, ২০২২

বণিক বার্তা ডেস্ক

জ্বালানি তেলের মূল্য ক্রমবর্ধমান। জ্বালানির উচ্চ দামে রেকর্ড উচ্চতায় রফতানি। অন্যদিকে দুর্বল ভোক্তা চাহিদায় সংকুচিত হয়েছে আমদানি। ফলে জুনেও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি পর পর দুই প্রান্তিক সংকোচনের পর তৃতীয় প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধির আশা দেখাচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিকে। যদিও বছরের শেষ দিকে অর্থনীতি মন্দায় পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা অনেক অর্থনীতিবিদের।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুনে ব্যাপক হারে মার্কিন বাণিজ্য ঘাটতি সংকুচিত হয়েছে। ঘাটতির পরিমাণ গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। জ্বালানির উচ্চমূল্য এবং পণ্যের চালান বেড়ে যাওয়ায় রফতানি সর্বকালের সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে। যখন ভোক্তা চাহিদা দুর্বল হওয়ার কারণে আমদানি সংকুচিত হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ জানিয়েছে, জুনে পণ্য পরিষেবার আমদানি-রফতানির ব্যবধান দশমিক শতাংশ কমে ঋতুগত সামঞ্জস্যের পরে হাজার ৯৬০ কোটি ডলারে নেমেছে। এটি মে মাসের সংশোধিত ঘাটতি হাজার ৪৯০ কোটি ডলার থেকে কম। নিয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মতো বাণিজ্য ঘাটতি হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমেছে।

উল্লেখিত সময়ে মার্কিন পণ্য পরিষেবা রফতানি দশমিক শতাংশ বেড়ে ২৬ হাজার ১০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। মূলত জ্বালানি খাদ্যপণ্যের চালান বেড়ে যাওয়ায় রফতানি ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। সময়ে আমদানি দশমিক শতাংশ কমে ৩৪ হাজার কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এটি মার্কিন নাগরিকদের গাড়ি খাদ্যসামগ্রী কেনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পতনকে প্রতিফলিত করে।

অর্থনীতিতে সংকোচন এবং মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রের স্থিতিস্থাপক খাত হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রুশ জ্বালানির বিকল্প খুঁজছে। এতে মার্কিন জ্বালানি পণ্যের চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রাকৃতিক গ্যাস পেট্রোলিয়াম পণ্যসহ শিল্প সরবরাহ এবং উপকরণের রফতানি এক মাস আগের তুলনায় জুনে দশমিক শতাংশ বেড়েছে। ক্যাটাগরির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকা স্বর্ণ রফতানি ১০০ কোটি ডলার থেকে বেড়ে প্রায় ৫০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য জ্বালানি শিল্পের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে এক্সন মবিল করপোরেশন, শেভরন শেলের মুনাফা রেকর্ড ভেঙেছে।

এদিকে মে মাসে সামান্য বাড়ার পর জুনে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি সংকুচিত হয়েছে। অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় আগামী মাসগুলোয় প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। উচ্চমূল্যস্ফীতি ক্রয়ক্ষমতাকে প্রভাবিত করার পরও ভোক্তারা স্থিতিশীল গতিতে ব্যয় করে চলেছেন। যদিও কারণে ভোক্তা মনোভাবে ব্যাপক পতন হয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের ভোক্তা মনোভাব নিয়ে জুলাইয়ের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, জুনের চেয়ে জুলাইয়ে এটি আরো কমেছে। তাছাড়া শ্রমবাজার শীতল হওয়ারও কিছু লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যদিও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিয়োগ অব্যাহত রেখে কর্মী ঘাটতি দূর করার চেষ্টা করছে। তবে অনেক প্রতিষ্ঠানই মন্দার ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় নিয়ে কর্মী কাটছাঁট করছে। ফলে গত সপ্তাহে বেকার সুবিধা দাবির সংখ্যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ উচ্চতার কাছাকাছি পৌঁছেছে।

গত সপ্তাহে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ জানিয়েছিল, দ্বিতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। এর আগে প্রথম প্রান্তিকেও দেশটির অর্থনীতি দশমিক শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। সব মিলিয়ে চলতি বছরের প্রথমার্ধে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি দশমিক শতাংশ সংকুচিত হলো।

এপ্রিল-জুন সময়ে দেশটির রফতানি ১৮ শতাংশ এবং আমদানি দশমিক শতাংশ বেড়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মার্কিন প্রবৃদ্ধিতে বাণিজ্যের অবদান কমে যাবে। কারণ বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা গভীর হচ্ছে এবং চাহিদা নিম্নমুখী রয়েছে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫