সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১০ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। ৬ উইকেটে ১৩২ রান নিয়ে সোমবার চতুর্থ দিন ব্যাটিংয়ে নেমে ১৮৬ রানে অল আউট বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৪০৮ রান তোলা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে মাত্র ১৩ রানের টার্গেট দিতে সমর্থ হয় অতিথিরা। তিন ওভারের মধ্যেই প্রয়োজনীয় রান তুলে নেয় স্বাগতিক দলটি।
২০ টেস্টের মুখোমুখিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১৪ বার হেরেছে বাংলাদেশ, আর জয় চারটি। যদিও এর মধ্যে দুটি জয় এসেছিল ২০০৯ সালে তাদের দ্বিতীয় সারির একটি দলের বিপক্ষে। এছাড়া ২০১৮ সালে হোম সিরিজে ঢাকায় ইনিংস ও ১৮৪ রানে আর চট্টগ্রামে ৬৪ রানে ক্যারিবিয়ানদের হারায় বাংলাদেশ।
সব মিলিয়ে এটা টেস্টে বাংলাদেশের ১০০তম হার। ১৩৪ টেস্টে বাংলাদেশ জিতেছে ১৬টি, ড্র করেছে ১৮টি।
টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর এখন সীমিত ওভারের সিরিজে ভালো করার আশা সাকিবদের। আগামী ২ জুলাই শুরু হবে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ। সাকিব মনে করেন, টি২০ সিরিজে জেতা সম্ভব তাদের। সোমবার ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই অনেক জায়গা আছে উন্নতির। তবে দলগতভাবে খেলতে পারলে আমাদের টি২০ সিরিজ জেতা সম্ভব।
গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে হয়েছে টি২০ বিশ্বকাপ, এ বছর অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় হবে আরেকটি টি২০ বিশ্বকাপ। এ টুর্নামেন্টের আগে খুব বেশি সময় হাতে নেই। সেদিক থেকে সাকিবদের জন্য আসন্ন সিরিজটি বেশ গুরুত্ববহ। তিনি বলেন, আমাদের যদি টি২০ বিশ্বকাপের কথা চিন্তা করেন, তাহলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এ সিরিজ। এরপর এশিয়া কাপ খেলব, তার পরই বিশ্বকাপ। সেদিক থেকে সময় নেই। খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি২০ খেলাটাও বড় চ্যালেঞ্জের হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা যদি এখানে ভালো করি, তবে এটা আমাদের শ্রীলংকায় (এশিয়া কাপ) ভালো করার আত্মবিশ্বাস জোগাবে। পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলংকা ও আফগানিস্তানের সঙ্গে খেলব বলে এশিয়া কাপ খুব কঠিন হবে।
তবে সাকিব আত্মবিশ্বাসী হলেও টি২০ সংস্করণে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স সন্তোষজনক নয়। বিশ্বকাপের পরপর পাকিস্তানের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হেরেছে মাহমুদউল্লাহর দল, আর আফগানিস্তানের সঙ্গে তারা ড্র করে ১-১-এ। এবার খেলা টি২০-তে দুবারের বিশ্বজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে।
এদিকে টেস্ট সিরিজে কেমার রোচ, আলজারি জোসেফ, জেডেন সিলস, কাইল মায়ার্স ও অ্যান্ডারসন ফিলিপ—এ পাঁচ পেস বোলার বাংলাদেশ ব্যাটারদের দাঁড়াতেই দেননি। তবে তাদের বল যে একেবারেই আনপ্লেয়াবল ছিল তা-ও বলা যাবে না। দ্বিতীয় ইনিংসে একেবারে শেষ মুহূর্তে নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটিংই বলে দেয়, উইকেটে টিকে থাকলে রান করা কঠিন ছিল না। ৫০ বলে ৬০ রান করার পথে ৬টি চার ও ২টি ছক্কা মেরেছেন এ ডানহাতি ব্যাটার।
ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে কেন বারবার ব্যাটিং ব্যর্থতা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। এখানে সর্বশেষ ১০ ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর ১৬১, ১৯২, ৪৩, ১৪৪, ১৪৯, ১৬৮, ১০৩, ২৪৫, ২৩৪ ও ১৮৬।
এ ১০ ইনিংসের আগে সর্বশেষ ইনিংসটিতে তিনশোর্ধ্ব সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টে মুশফিকুর রহিমের ১১৬ রানে ভর করে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩১৪ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৩ রানের টার্গেট দিতে সমর্থ হয় অতিথি দলটি।
লাল বলের এ ব্যর্থতা এবার সাদা বলের সিরিজে ঘুচিয়ে দিতে আশাবাদী সাকিব ও তার সতীর্থরা। আগামী ২ ও ৩ জুলাই ডমিনিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচ। ৭ জুলাই গায়ানায় তৃতীয় ও শেষ টি২০। এরপর ১০, ১৩ ও ১৬ জুলাই গায়ানায় তিনটি ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য, টি২০ দলকে মাহমুদউল্লাহ ও ওয়ানডেতে তামিম ইকবাল নেতৃত্ব দেবেন।