সিলেট বিভাগে বন্যা

পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে পানিবাহিত রোগ

প্রকাশ: জুন ২৮, ২০২২

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, সিলেট

বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে সিলেট বিভাগে। গতকাল পর্যন্ত সিলেটের সুরমা কুশিয়ারা নদীর তিনটি পয়েন্টে পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে সিলেটসহ সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। সিলেট নগরীর নিচু এলাকায় এখনো বন্যার পানি রয়েছে। বিভাগের বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়া-চর্ম রোগসহ পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। পর্যন্ত পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় হাজার মানুষ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাসপাতালগুলোয় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী বেশি আসছেন।

সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বানের পানিতে পর্যন্ত সিলেট জেলায় হাজার ১৮৯ জন, সুনামগঞ্জে ৩৮১, হবিগঞ্জে ৮০৪ মৌলভীবাজার জেলায় ৫৬১ জন পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। রোববার সকাল ৮টার পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৭৩ জনই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। তাদের মধ্যে সিলেট জেলায় ৪৭ জন, সুনামগঞ্জে ১১৩, হবিগঞ্জে ৭২ মৌলভীবাজার জেলায় ৪১ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া চর্ম রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় তিনজন, হবিগঞ্জে ২১ মৌলভীবাজারে ২৬ জন। চোখের প্রদাহ হয়েছে ১০ জনের। আঘাত পেয়েছেন ১১ জন। শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে ২০ জনের মধ্যে। এছাড়া অন্য রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭।

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ হোসেন জানান, চলমান বন্যায় ১১টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১০টিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র একই সঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্রও। পানি নামার পর পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। সব জায়গা থেকে কমবেশি ডায়রিয়া রোগী আসছেন।

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন শিশির। তিনি জানান, পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের বিভাগীয় সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. নূরে আলম শামীম বলেন, বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকাগুলোয় ৪৩০টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। আক্রান্ত রোগীদের তাত্ক্ষণিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ আমাদের কাছে আছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ সিলেটের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় পানিবাহিত রোগের পাশাপাশি চোখের প্রদাহ দেখা দিতে পারে। এজন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। জেলা উপজেলা সদরে প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য উপকরণ পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানান, গতকাল পর্যন্ত সিলেটের ৫৩০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪৫ হাজার ৭৯৬ বন্যার্ত ব্যক্তি অবস্থান করছে। ২১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৬৫ ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তিনি জানান, স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫