দাতব্য প্রতিষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের অনুদানের পরিমাণ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। ২০২১ সালে ৪৮ হাজার ৫০০ কোটি ডলার অনুদান পেয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এ অনুদানের পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ৪ শতাংশ বেশি। যদিও এ বাড়ার হার মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি। খবর এপি।
দাতব্য প্রতিষ্ঠানের তথ্য সরবরাহ করা গিভিং ইউএসএর প্রতিবেদন অনুসারে, দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোয় গত বছরের অনুদান ২০২০ সালে রেকর্ড সর্বোচ্চ ৪৬ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের চেয়ে বেশি। তবে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করলে তা দশমিক ৭ শতাংশ কম।
গিভিং ইউএসএ ফাউন্ডেশনের চেয়ার লরা ম্যাকডোনাল্ড বলেন, অনেক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান এখন চাপ অনুভব করছে। কারণ সবকিছুর দাম বৃদ্ধির তুলনায় অনুদানের পরিমাণ বাড়েনি। কভিড-১৯ মহামারীর তীব্র চাহিদার প্রতিক্রিয়া এবং জাতিগত ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠানের আহ্বানে ২০২০ সালে অনুদানের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়েছিল। তবে বর্তমানে পূর্ববর্তী সাধারণ নিদর্শনগুলো ফিরে এসেছে।
২০২১ সালে টানা চতুর্থ বছরে ব্যক্তিদের অনুদানের অনুপাত সামগ্রিক দানের ৭০ শতাংশের নিচে ছিল। প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে, ২০২১ সালে মূল্যস্ফীতির হিসেবে ব্যক্তিদের অনুদানের পরিমাণ মূলত সমতল ছিল। তাদের অনুদান আগের বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ৩২ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এটি এখনো ২০১৭ সালে সর্বোচ্চ পরিমাণ থেকে অনেক কম। সে বছর মার্কিনরা মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যের পর প্রায় ৩৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলার অনুদান দিয়েছিল।
একটি সাক্ষাত্কারে লরা ম্যাকডোনাল্ড বলেন, পরিবারের প্রত্যেক ব্যক্তি দাতব্য দানে অংশগ্রহণ করছে না, যেমনটা তারা এক বা দুই দশক আগে করত। কিছু বড় দাতা পারিবারিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অনুদান দেয়া শুরু করেছে। এজন্য একক ব্যক্তি বিভাগে অনুদানের হিস্যা কমেছে।
মহামারীতে বিপর্যয়ের মুখে পড়া শিল্প ও সংস্কৃতি গোষ্ঠীগুলোয় অনুদান ২০২১ সালে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৩৫০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। বিপরীতে শিক্ষা খাতে অনুদান ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ৭ হাজার ১০০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২০ সালে টিকাদান সম্পর্কিত অনুদানের কারণে শিক্ষা খাতে দান বেড়ে গিয়েছিল।
ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটির লিলি ফ্যামিলি স্কুল অব ফিলানথ্রপির ডিন আমির প্যাসিক বলেন, দান করার পরিবেশটি একাধিক উপায়ে বিকশিত হচ্ছে। শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে ফাউন্ডেশন ও করপোরেশনের মতো প্রাতিষ্ঠানিক অনুদানের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে।
তবে করপোরেট খাতের অনুদান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ২০২১ সালে এ খাতের অনুদান ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ১০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। যদিও এ সময়ে করপূর্ব করপোরেট মুনাফা ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ খাতের অনুদান এখনো করপূর্ব করপোরেট মুনাফার ১ শতাংশেরও কম প্রতিনিধিত্ব করে।
তবু অনুদান সাধারণত শক্তিশালী পর্যায়ে রয়েছে। অনুদান দেয়া নয়টি প্রধান খাতের মধ্যে আটটির দাম বেড়েছে কিংবা সমতল থেকেছে। কেবল শিক্ষা খাতে অনুদানের পরিমাণ কমেছে।