সৌদি আরব ও মিসরের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৭৭০ কোটি ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। সম্প্রতি মিসরের রাজধানী কায়রোয় সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের এক সফরকালে এ চুক্তিগুলো হয়। খবর রয়টার্স।
স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলোর মধ্যে অবকাঠামো, লজিস্টিকস পরিষেবা, বন্দর ব্যবস্থাপনা, কৃষিখাদ্য, ওষুধ শিল্প, জীবাশ্ম জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং সাইবার নিরাপত্তার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মোট ১৪টি বিনিয়োগ চুক্তির মূল্য ছিল ২ হাজার ৯০০ কোটি সৌদি রিয়াল (৭৭০ কোটি ডলার)। শীর্ষস্থানীয় সৌদি ও মিসরের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এসব চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
এ বিষয়ে সৌদি আরবের বিনিয়োগ মন্ত্রণালয় জানায়, দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ ও পারস্পরিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোই এ চুক্তিগুলোর মূল উদ্দেশ্য।
মিসরের সরকারি তথ্য বলছে, ২০২০ সালের তুলনায় গত বছর দেশটির সঙ্গে সৌদির বাণিজ্য ৬২ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। এছাড়া সৌদিতে কর্মরত মিসরীয়দের প্রবাসী আয় দেশটির অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ২০২০-২১ অর্থবছরে সৌদি আরব থেকে উপার্জিত প্রবাসী আয় আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ শতাংশেরও বেশি বেড়ে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।
বর্তমানে অনিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতির হার, অবকাঠামোর জন্য ব্যাপক ব্যয় ও মুদ্রার দরপতনসহ বিভিন্ন ধরনের আর্থিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন মিসর। অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে নতুন ঋণের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনারত রয়েছে দেশটি। এর মধ্যে আগে থেকেই ব্যাপক ঋণগ্রস্ত হয়েছে মিসর। দেশটির মোট সরকারি ঋণের পরিমাণ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৯০ শতাংশের সমপরিমাণ। আরব বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ মিসর। দেশটি ১৬ হাজার কোটি ডলারের বাজেট ঘোষণা করেছে।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা, সৌদি ও মিসরের মধ্যে এ চুক্তিগুলোর মাধ্যমে দুই দেশেরই অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কও শক্তিশালী হবে।
এদিকে দুই দিনব্যাপী সফরে মিসর যান সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমান। পরবর্তী সময়ে জর্ডান ও তুরস্কেও সফরে যান ক্রাউন প্রিন্স। ২০১৮ সালে ইস্তানবুলের সৌদি আরবের দূতাবাসে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর এই প্রথম তুরস্কে গেলেন মোহাম্মাদ বিন সালমান। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সৌদি আরবে সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। সম্প্রতি রিয়াদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করছে জো বাইডেন প্রশাসন।