আন্তর্জাতিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছে তালেবান

প্রকাশ: জুন ২৩, ২০২২

বণিক বার্তা অনলাইন

ভয়াবহ ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি ও পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার জন্য আবেদন জানিয়েছে আফগানিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তালেবান। গতকাল বুধবার ভোরে দেশটির পাকতিকা প্রদেশে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এতে এক হাজারের বেশি নিহত এবং অন্তত দেড় হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। খবর বিবিসি।

 

খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে মাটির তৈরি ঘরের ধ্বংসস্তুপের নিচেও অসংখ্যা মানুষ চাপা পড়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

 

তালেবানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আব্দুল কাহার বালখি বলেছেন, আফগানিস্তান মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে এবং সরকার আর্থিকভাবে জনগণকে প্রয়োজনীয় পরিমাণে সহায়তা করতে অক্ষম। ত্রাণ সংস্থা, প্রতিবেশী দেশ এবং বিশ্ব শক্তিগুলোর কাছে সহায়তার আবেদন জানান তিনি। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, সাহায্যের পরিমাণ অনেক বড় আকারে বাড়ানো দরকার, কারণ এটি একটি বিধ্বংসী ভূমিকম্প যা কয়েক দশকের মধ্যে ধরে দেখা যায়নি।

 

দক্ষিণ-পূর্ব পাকতিকা প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘ জরুরী আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ভারী বৃষ্টি এবং সরঞ্জামের অভাবে ব্যহত হচ্ছে উদ্ধার তত্পরতা।

 

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, এই বিপর্যয়ের পর সংস্থাটি পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চিকিত্সক দল, ওষুধ, খাবার ও জরুরি আশ্রয়ের উপকরণ উপদ্রুত এলাকার পথে রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।

 

বেঁচে যাওয়া এবং উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের উত্পত্তিস্থলের কাছের গ্রামগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। সড়ক, মোবাইল ফোনের টাওয়ার ধ্বংস হয়ে গেছে।

 

দুই দশকের মধ্যে দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প তালেবানের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। গত বছর পশ্চিমা-সমর্থিত সরকারের পতনের পর ক্ষমতায় ফিরে আসে ইসলামী এই গোষ্ঠীটি। ভূমিকম্পটি খোস্ত শহর থেকে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানে এবং কম্পন টের পাওয়া গেছে পাকিস্তান ও ভারত পর্যন্ত।

 

সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে পাকতিকার জায়ান এবং বারমাল জেলায়। জায়ানের একটি গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। বেঁচে যাওয়াদের একজন সাবির বলেন, একটা গর্জন হল এবং আমার বিছানা কাঁপতে লাগলো। ছাদ পড়ে গেল। আমি আটকা পড়েছিলাম, কিন্তু আমি আকাশ দেখতে পাচ্ছিলাম। আমার কাঁধ স্থানচ্যুত হয়েছিল, আমার মাথায় আঘাত লাগে কিন্তু বের হতে পেরেছি। আমি নিশ্চিত যে আমার পরিবারের সাত বা নয় জন, যারা আমার মতো একই ঘরে ছিল, তারা মারা গেছে।

 

জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী আফগানিস্তানে গত এক দশকে ভূমিকম্পে সাত হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। প্রতিবছর গড়ে দেশটিতে এই দুর্যোগে ৫৬০ জনের মৃত্যু হয়।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫