ভোজ্যতেল আমদানি

বাজেটে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা না থাকায় প্রভাব নেই বাজারে

প্রকাশ: জুন ১১, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

ভোজ্যতেল আমদানিতে কয়েক মাস আগে ভ্যাট প্রত্যাহার করেছিল সরকার। প্রস্তাবিত বাজেটে ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্কহার নিয়ে কোনো বিশেষ প্রস্তাব না থাকায় বাজারে এর প্রভাব পড়েনি। উল্টো একদিনের ব্যবধানে পাইকারিতে খোলা পাম অয়েলের দাম মণপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়েছে। সরকারিভাবে নতুন দাম নির্ধারণ করায় দাম কিছুটা কমলেও তা বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এক্ষেত্রে ১৫ দিন অন্তর ভোজ্যতেলের বাজারদর নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। 

দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ। সারা দেশের ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের বাজারদর নির্ধারিত হয় বাজারের ট্রেডিং পর্যায়ে দরের ওপর। কয়েকদিন ধরে পাইকারি পর্যায়ে ভোজ্যতেলের দাম মণপ্রতি (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) হাজার ২০০ থেকে হাজার ২৫০ টাকায় ওঠানামা করছিল। তবে গত বৃহস্পতিবার পাইকারি পর্যায়ে হঠাৎ পাম অয়েলের দাম মণপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়ে হাজার ৪০০ টাকায় উঠে যায়। যদিও সন্ধ্যায় সরকারিভাবে ভোজ্যতেলের মধ্যে পাম অয়েলের দাম কমানোর ফলে দাম কিছুটা কমে হাজার ৩৫০ থেকে হাজার ৩৬০ টাকায় শেষ হয়। সরকারিভাবে পাম অয়েলের দাম লিটারপ্রতি ১৪ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়া হলেও বাজারে এর প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

গত মে দেশে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণের পর জুন নতুন দর পুনর্নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। বৃহস্পতিবারের নতুন দরে খোলা পাম অয়েলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫৮ টাকা। যদিও মে খোলা পাম অয়েলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৭২ টাকা।

বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা বণিক বার্তাকে বলেন, এক মাসেরও বেশি সময় পর কোম্পানিগুলো ভোজ্যতেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করেছে। আমরা বিভিন্ন সময়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে ১৫ দিন অন্তর ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণে সরকারের সঙ্গে আমদানিকারক-ব্যবসায়ীদের বৈঠকের দাবি জানিয়েছিলাম। ফলে বর্তমান সময়ে বিশ্ববাজারে দাম কমলেও গত এক থেকে দেড় মাসের বাড়তি দামের ওপর ভিত্তি করে আগামী এক মাসের ভোজ্যতেল বিক্রির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভোক্তাদের পাশাপাশি পাইকারি ব্যবসায়ীরাও ভুক্তভোগী বলে দাবি করে তিনি বলেন, বাজেটে ভোজ্যতেল আমদানির ওপর শুল্ক করহারে কোনো নির্দেশনা না থাকায় দেশের বাজারে পাম অয়েলের দামে প্রভাব পড়েনি।

গত এক সপ্তাহ ধরে বিশ্ববাজারে পাম অয়েলের দাম ক্রমশ কমছে। সর্বশেষ কয়েক মাস আগেও টনপ্রতি অপরিশোধিত ভোজ্যতেলের দাম হাজার ৮০০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইন্দোনেশিয়া ভোজ্যতেল রফতানি চালু করার পর বিশ্ববাজারে পণ্যটির দাম কমতে কমতে হাজার ৮০০ ডলার থেকে হাজার ৪৫০ ডলারে নেমে এসেছে। সর্বশেষ গতকাল অপরিশোধিত পাম অয়েলের দাম টনপ্রতি হাজার ৪০৪ ডলার হয়েছে। অন্যদিকে অপরিশোধিত সয়াবিনের দামও প্রায় হাজার ডলার থেকে নামতে নামতে হাজার ৮২১ ডলারে স্থির হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জুন ভোজ্যতেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে। এর মধ্যে এক লিটার খোলা সয়াবিনের দাম মিলগেটে ১৮০ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে ১৮২ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে ১৮৫ টাকা। এছাড়া এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন মিলগেটে ১৯৫ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে ১৯৯ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য করা হয়েছে ২০৫ টাকা। এক লিটারের খোলা পাম অয়েলের (সুপার) দাম মিলগেটে ১৫৩ টাকা, পরিবেশক পর্যায়ে ১৫৫ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য করা হয়েছে ১৫৮ টাকা। এক্ষেত্রে সয়াবিনের দাম খোলা বোতলজাতের মধ্যে লিটারপ্রতি দাম থেকে টাকা বৃদ্ধি পায় এবং পাম অয়েলের দাম কমানো হয়েছে লিটারপ্রতি ১৪ টাকা। 

খাতুনগঞ্জের মেসার্স গাউছিয়া ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মো. হায়দার আলী বণিক বার্তাকে বলেন, দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের মধ্যে পাম অয়েলের দাম কমানো হলেও পাইকারি বাজারে এর প্রভাব পড়েনি। বাজেটে ভোজ্যতেল আমদানিতে বিশেষ কোনো প্রস্তাব না থাকায় দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া খুচরা পর্যায়ে সরকারিভাবে সয়াবিনের দাম বাড়ানো হলেও পাইকারি বাজারে এর প্রভাব পড়েনি। আগের দামেই কেনাবেচা হচ্ছে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫