সান্তাহার রেলওয়ে জংশন

বুকিং সহকারীর বিরুদ্ধে টিকিট কালোবাজারির অভিযোগ

প্রকাশ: মে ২২, ২০২২

আরমান হোসেন রুমন, নওগাঁ

প্রতিদিন সকাল ৮টায় ঢাকাগামী ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় বগুড়ার সান্তাহার রেলওয়ে জংশনে। কয়েকটি বিক্রির পরই টিকিট নেই বলে ঘোষণা আসে কাউন্টারের বুকিং সহকারী মতিউর রহমানের পক্ষ থেকে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজশ করে তিনি বাকি টিকিট কালোবাজারে বিক্রি করেন। বাধ্য হয়ে কালোবাজার থেকেই বাড়তি টাকায় টিকিট কিনতে হয় যাত্রীকে। প্রকাশ্যে এমন অনিয়ম হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এজন্য ক্ষোভ জানিয়ে টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

যাত্রীদের অভিযোগ, টিকিটের জন্য যাত্রীদের লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখে বুকিং কক্ষের ভেতর চলে অনিয়ম। স্টেশন মাস্টারের উপস্থিতিতেই বিভিন্নজনের ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য ব্যবহার করে কেটে রাখা হয় টিকিট। পরে সেসব টিকিটই কালোবাজারে বিক্রি করা হয়। তাদের থেকে তিন গুণ দামে কিনতে হয় যাত্রীকে। এতে চরম বিপাকে পড়তে হয় ঢাকামুখী যাত্রীদের।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, পাশের নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলা বগুড়া জেলার আদমদীঘি দুপচাঁচিয়া উপজেলা থেকে আসা শতাধিক যাত্রী এসেছেন টিকিট কাটতে। ট্রেনের অগ্রিম টিকিট পেতে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাদের। কাউন্টারের সামনের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি ঢাকামুখী আন্তঃনগর ট্রেনের প্রথম শ্রেণীর অগ্রিম টিকিট চাইলে বুকিং সহকারী মতিউর রহমান এসির টিকিট নেই বলে জানান। যদিও স্টেশন মাস্টারের উপস্থিতিতে ওই মুহূর্তে প্রকাশ্যে একাধিক ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য ব্যবহার করে প্রথম শ্রেণীর সব টিকিট দ্বিতীয় শ্রেণীর বেশকিছু টিকিট অবৈধভাবে কেটে কাউন্টারের ভেতরই সংরক্ষণ করেন তিনি। এরপর সামনের লাইনে দাঁড়ানো ওই যাত্রী বাধ্য হয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীর শোভন চেয়ারের টিকিট কাটেন। কিছুক্ষণ পরই টিকিট শেষ হয়েছে বলে মাইকে ঘোষণা করা হয়।

কথা হয় টিকিট কাটতে লাইনে দাঁড়ানো আদমদীঘি উপজেলার দমদমা গ্রাম থেকে আসা গোলাম কিবরিয়া ছাতিয়ান গ্রাম থেকে আসা স্বাধীন হোসেনের সঙ্গে। তারা বলেন, বুকিং সহকারী প্রকাশ্যে কক্ষের ভেতরে বসে অতিরিক্ত টিকিট কেটে সংরক্ষণ করছিলেন। সেটা স্টেশন মাস্টারের সামনেই হচ্ছিল। দৃশ্য দেখে স্পষ্ট বোঝা যায়, বুকিং সহকারী স্টেশন মাস্টার টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এজন্য অসাধু এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণেল দাবি জানান তারা। একই ধরনের অভিযোগ করেন একাধিক যাত্রী।

বিষয়ে বুকিং সহকারী মতিউর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি কাউকে টিকিট রেখে টিকিট নেই বলিনি। ভেতরে অতিরিক্ত কোনো টিকিট কেটে কখনোই সংরক্ষণ করা হয় না। মাঝেমধ্যে কিছু কিছু দপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তা রেলওয়ের অফিস স্টাফদের প্রয়োজনীয় প্রথম শ্রেণীর টিকিট কক্ষে বসেই আমি কেটে রাখি। তাদের অনুরোধ ফেলে লাইনে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের সবসময় টিকিট দেয়া সম্ভব হয় না। তবে এর পরিমাণ খুবই সীমিত।

পঞ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে বিভাগীয় সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (উত্তর) নুরুল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত আছে এমন বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫