অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে জয়া আহসানের বিউটি সার্কাস

প্রকাশ: মে ২২, ২০২২

ফিচার প্রতিবেদক

সব বাধা পার করল জয়া আহসান অভিনীত সিনেমা বিউটি সার্কাস ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সরকারি অনুদান পাওয়া সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির অনুমতি পেয়েছে। মাহমুদ দিদার পরিচালিত সিনেমাটি গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ড থেকে বিনা কর্তনে ছাড়পত্র পেয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাহমুদ দিদার নিজেই।

ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, অভিবাদন আপনাদের যারা সমর্থন, সাহস, অর্থ, ভালোবাসা দিয়ে আমাকে ঋণী করেছেন। আমাদের চলচ্চিত্র বিউটি সার্কাসকে সেন্সর বোর্ড আনকাট ছাড়পত্র প্রশংসার সঙ্গে পার করেছে। এবার মুক্তির পালা। আশা করছি, কম সময়ের মধ্যে আমরা চলচ্চিত্রটি বড় পর্দায় নিয়ে আসতে পারব। আপনাদের জয় হোক।

আগামী সপ্তাহে সিনেমাটির মুক্তির তারিখ ঘোষণা করবেন বলেও জানান তিনি। সরকারের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা অনুদান পাওয়ার পরও অর্থ উপযুক্ত না হওয়ায় বিউটি সার্কাস নির্মাণে জটিলতায় পড়েন পরিচালক। এর পরই সহপ্রযোজক খুঁজতে থাকেন দিদার। তখন তার পাশে দাঁড়ায় ইমপ্রেস টেলিফিল্ম। পরে নির্মাণ সম্পন্ন করে এটি জমা দেয়া হয় সেন্সর বোর্ডে। সিনেমাটিতে বিউটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। এছাড়া আরো অভিনয় করেছেন ফেরদৌস, তৌকীর আহমেদ, এবিএম সুমন, শতাব্দী ওয়াদুদ, হুমায়ূন সাধু প্রমুখ।

সার্কাসকে কেন্দ্র করে এক নারীর টিকে থাকার গল্পে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। সার্কাস আক্রান্ত হওয়ার পরও গণমানুষের পক্ষ নিয়ে হুমকির মুখেও একজন নারীর আপন শক্তিতে টিকে থাকার গল্প ফুটে উঠবে এতে। চারদিক বিশাল আকৃতির প্যান্ডেলে মোড়ানো সার্কাস দল। এর মাঝে সার্কাসের সুন্দরী। এমন জয়াকে দেখা যাবে বিউটি সার্কাস সিনেমায়। ছবিতে তিনি একটি সার্কাসের মালিক। তার নাম বিউটি। এর আগে সিনেমার কিছু স্থিরচিত্র সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। জয়াকে প্রথম নজরে দেখলে চেনার উপায় নেই। পাক্কা সার্কাসের নাচনেওয়ালির মতো। তার পরনের পোশাকও বেশ বাহারি, সার্কাসে যেমন হয়। ১৫ দিন ধরে টানা একটি সার্কাস প্যান্ডেল বানিয়ে শুটিং হয়েছে ছবির।

ছবিটি প্রসঙ্গে জয়া বলেন, ছবিতে আমি সার্কাসের সুন্দরী হিসেবে অভিনয় করছি। ধরনের চরিত্র আমি এর আগে করিনি। আগে যাত্রার একটি মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। কিন্তু সার্কাসের একজন মেয়ের চরিত্র এটাই প্রথম। তিনি বলেন, আমি সাধারণত যেকোনো চরিত্রে অভিনয়ের আগে অনেক প্রস্তুতি নেই। কিন্তু এবার সে সুযোগ পাইনি। দ্রুত আমাকে চরিত্রের মধ্যে ঢুকতে হয়েছে। পরিচালক অন্য সবার সহযোগিতা পেয়েছি। শুটিংয়ের আগের দিন প্র্যাকটিস করেছি। সার্কাসের সবাই সহযোগিতা করেছেন। বিউটি সার্কাসের শুটিংয়ে বেশ ভয়ংকর কিছু দৃশ্যে শট দিতে হয়েছে। অনেকটা অনিরাপদও ছিল তা। তবু ঠিকঠাক চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে ঝুঁকি আমি নিয়েছি। ঘোড়া হাতিতে চড়ার অভিজ্ঞতাও হয়েছে।

নির্মাতা মাহামুদ দিদার বলেন, সার্কাসকে কেন্দ্র করে একজন নারীর যে টিকে থাকা তার গল্প বিউটি সার্কাস। সার্কাস পুড়িয়ে দেয়ার পরও হুমকির মুখেও একজন নারীর আপন শক্তিতে টিকে থাকার গল্প ফুটে উঠবে চলচ্চিত্রটিতে। এখানে পুরুষের ভূমিকাকে ইতিবাচক নেতিবাচক দুভাবেই উপস্থাপন করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রচলিত চলচ্চিত্রের ছক থেকে বেরিয়ে সমাজের নানা শ্রেণীর মোড়ল ক্ষমতাধরদের আসল চরিত্র দেখা যাবে সিনেমার নায়কদের মাধ্যমে।

বিউটি সার্কাস মুক্তি নিঃসন্দেহে জয়ার জন্য আনন্দের ঘটনা। মহামারী-পরবর্তী সিনেমা চাঙ্গা হওয়ার যে ইঙ্গিত দিচ্ছে সেই সময়ে ধরনের সিনেমা জয়াকে নিয়ে যাবে আরো উঁচুতে। যদিও তার সময় এখন ভালোই কাটছে। কলকাতার সিনেমা বিনিসুতোয়-এর জন্য মার্চে জয়া আহসান পেয়েছেন ফিল্মফেয়ার বাংলায় সেরা অভিনয়শিল্পীর সম্মাননা। সম্প্রতি একই চলচ্চিত্রের জন্য তাকে দেয়া হয়েছে আনন্দলোক সেরা অভিনেত্রীর সম্মাননা। অতনু ঘোষের সিনেমাটিতে শ্রাবণী চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া। কোয়েল মল্লিক, রুক্মিণী মৈত্র, গার্গী রায় চৌধুরী, মধুমিতা সরকারের মতো কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের পেছনে ফেলে তিনি পুরস্কার জিতেছেন। পশ্চিমবঙ্গের আইটিসি রয়্যাল বেঙ্গল মিলনায়তনে গত বুধবার দেয়া হয় পুরস্কার। পুরস্কার নেয়ার সময় জয়া বলেন, সিনেমাটি আসলে স্বপ্ন দেখতে শেখায়, ইচ্ছেমতো বাঁচার সমীকরণ জানিয়ে যায়। শ্রাবণীর পরতে পরতে স্বপ্নের সেই বুনন।

এছাড়া কবি জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে কলকাতায় তৈরি হয়েছে সিনেমা ঝরা পালক কবির চরিত্রে ব্রাত্য বসু আর কবিপত্নী লাবণ্য হয়েছেন জয়া আহসান। জীবনানন্দ দাশের লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থ ঝরা পালক তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই সিনেমার নামকরণ। সিনেমাকে ক্যানভাসের মতো ব্যবহার করে কবির জীবন তার ভাবনা, দুঃখ-যন্ত্রণা, আবেগ এবং তাকে ঘিরে থাকা মানুষজনের কাহিনী ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক। সিনেমাটি জুনে মুক্তি পাবে। জয়া বলেন, সিনেমায় আমি লাবণ্য। লাবণ্যই বনলতা, লাবণ্যই কবির সুরঞ্জনা। জীবনানন্দ লাবণ্য দাশের পারস্পরিক স্বভাব ছিল পুরোপুরি বিপরীত। চরিত্রটা পর্দায় দেখার জন্য আমিও মুখিয়ে আছি।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫