এক মাসে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ অর্ধেকে নেমেছে

প্রকাশ: এপ্রিল ০৭, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই অস্থিরতা চলছে দেশের পুঁজিবাজারে। মাঝে নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপে বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু রমজানের শুরুতেই আবারো ছন্দ হারিয়েছে পুঁজিবাজার। তিনদিন ধরেই সূচক লেনদেনের পরিমাণ ক্রমশ কমছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত এক মাসে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ অর্ধেকে নেমে গেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট লেনদেন হয়েছিল লাখ ১৭ হাজার ৩৮১টি। যা কমে গতকাল ৯৮ হাজার ৪৪৫টিতে দাঁড়িয়েছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ডিএসইতে ২৫ কোটি ৬৯ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে গতকাল এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৪৪ লাখে। একইভাবে বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি দৈনিক লেনদেন ছিল ৯১৬ কোটি টাকা। যা সর্বশেষ গতকাল ৪৯০ কোটি টাকায় নেমেছে।

পুঁজিবাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও বণিক বার্তাকে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কিছুটা প্রভাব তো ছিলই। পাশাপাশি সম্প্রতি শ্রীলংকার অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণে দেশের বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও শঙ্কা তৈরি হয়েছে যে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে চাপে পড়তে পারে। যদিও আমাদের শ্রীলংকার অর্থনীতির মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। এছাড়া শেয়ারদর কমার নিম্নসীমা শতাংশ বেঁধে দেয়ার কারণেও অনেক শেয়ার লেনদেন হচ্ছে না। এতে বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমে গেছে। মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করার কারণেও অনেক সময় বিনিয়োগকারীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। শেয়ারের দর কমে গেলেই ঋণ সমন্বয়ের চাপ তৈরি হচ্ছে, যা বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির প্রবণতাও বেড়েছে। সাধারণ শীর্ষ মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার কেউ সহজে বিক্রি করতে চায় না। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ধরনের কোম্পানির শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বেড়েছে। সব মিলিয়েই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে।

গতকাল লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সে কিছুটা পয়েন্ট যোগ হয়। তবে শেয়ার বিক্রির চাপে এর পর থেকেই দ্রুত পয়েন্ট হারাতে শুরু করে সূচক। হাজার ৭০০ পয়েন্টে ওঠা সূচকটি এক পর্যায়ে ৩৩ পয়েন্ট হারায়। সাড়ে ১০টার পর থেকেই সূচকটি আবার ঊর্ধ্বমুখী হওয়া শুরু করে। ১১টায় ১৮ মিনিট পর্যন্ত ধারা ধরে রেখতে সক্ষম হয় সূচক। তবে শেয়ার বিক্রির চাপে ফের দ্রুত সূচকে অবনতি হয়। দিনশেষে সূচকটি প্রায় ৩২ পয়েন্ট হারিয়ে হাজার ৬৬২ পয়েন্টে অবস্থান নেয়। আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৬৯৪ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মা, বিএটিবিসি, পূবালী ব্যাংক ফরচুন সুজের শেয়ারের।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, রমজান ঈদকে কেন্দ্র করে বাজারে কিছুটা বিক্রির চাপ ছিল। তার ওপর শ্রীলংকার অর্থনৈতিক সংকট দেশের বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত করে তুলেছে। একজন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি বিনিয়োগ নিয়ে আমি আশাবাদী। দ্রুতই সংকট কেটে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫