তরুণদের জন্য কামরুল হাসানচর্চা অনিবার্য: রফিকুন নবী

প্রকাশ: ডিসেম্বর ০২, ২০২১

আমাদের দেশজ স্টাইলের যত কাজ আছে, লোকশিল্প বলি, আধুনিকতা বলি, সেগুলো নিয়ে কাজ করেছেন কামরুল হাসান। আমাদের কাঁথায়, মাটির পাত্রে, শীতলপাটি, মাটির পুতুলসহ লোকশিল্পের যেসব নকশা বা চিরকালীন উপাদান আছে সেসব নিয়ে তার ছবিতে আধুনিকতা মিশিয়ে হাজির করেছেন। এটাই কামরুল হাসানের নিজস্বতা। একদিকে যেমন দেশকে ধারণ করেছেন তার কাজের ভেতর দিয়ে, অন্যদিকে তার একাডেমিক শিক্ষা তথা ইউরোপীয়, আমেরিকা, পশ্চিম কিংবা প্রাচ্যে যে ট্রেন্ডগুলো চলে সেগুলোকে লোকশিল্পের সঙ্গে মিলিয়ে প্রাসঙ্গিকরূপে উপস্থাপন করেছেন। তার শিক্ষা কর্মের অদ্ভুত সম্পৃক্ততায় দেশকে উপস্থাপন করেছেন। তিনি ছিলেন প্রচণ্ড সময়সচেতন। ফলে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী শিল্পীর ভূমিকায় তাকে দেখতে পেয়েছি আমরা। তার প্রতিবাদী ভূমিকাটা পাকিস্তানিদের বিপক্ষে তো বটেই, আমাদের দেশেও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছিলেন। একাত্তরে ইয়াহিয়াকে নিয়ে যে কার্টুন তিনি এঁকেছিলেন, সেই কাজটা খুবই শক্তিশালী। তার আঁকার মাধ্যমে ইয়াহিয়া খানের ভয়াবহতা ফুটিয়ে তুলেছিলেন। এটি অসাধারণ একটি কাজ। কার্টুন দেশের মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য উজ্জীবক শিল্পকর্ম হিসেবে কাজ করেছে। তিনিই কামরুল হাসান। দেশের শ্রেষ্ঠ শিল্পীদের একজন তিনি। বাংলাদেশের চারুকলাচর্চার ক্ষেত্রে রুচি নির্মাণের দায়িত্ব তারা নিয়েছিলেন। বই-পুস্তক, প্রকাশনা শিল্পকলার ক্ষেত্রে সুরুচি নির্মাণে তার অবদান অসাধারণ।

আধুনিককালে তরুণ প্রজন্মের জন্য কামরুল হাসানচর্চা অনিবার্য। এখন কম্পিউটার এসেছে। সবকিছু ডিজিটাল হয়েছে। তরুণ প্রজন্ম অন্য মার্কে থাকে। অন্য রকম চর্চায় আছে তারা। কিন্তু রসবোধটা নিতে হবে শেকড় থেকে। সেই রসবোধ নেয়ার ধরন শিখিয়ে গেছেন কামরুল হাসান। এখনকার তরুণ প্রজন্ম আধুনিকতা নিয়ে কাজ করছে। ট্রেন্ডগুলো নিচ্ছে অত্যাধুনিক পরীক্ষাধর্মী। সেক্ষেত্রে যদি কেউ কামরুল হাসানকে ভোলানোর চেষ্টা করে, সেটা কিন্তু সম্ভব না। কারণ তার কম্পোজিশন, রঙ, উপস্থাপন, এক্সিকিউশন...এগুলো কিন্তু ব্যবহার করতেই হবে। প্রজন্ম যতই তরুণ্যদীপ্তে ডুবে থাকুক না কেন, জয়নুল আবেদিনের থেকে তাদের নিতে হবে, কামরুল হাসান, আমিনুল ইসলাম কিংবা মোহাম্মদ কিবরিয়াসহ এসব শিল্পীর কাছ থেকে কিছু না কিছু নিতে হবে। তাদের যে জোর করে নেয়াতে হবে, বিষয়টা এমন না। অবধারিতভাবে, অবলীলায় তাদের কাজ চলে আসবে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫