সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোয় রাস্ট ছবির শুটিং সেটে অভিনেতা অ্যালেক বাল্ডউইনের হাতে থাকা বন্দুকের গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন তরুণ সিনেমাটোগ্রাফার হ্যালেনা হাচিনস। অ্যালেক জানতেন বন্দুকে কোনো গুলি নেই। ১৯৯৩ সালে এমনই এক ট্র্যাজেডির সাক্ষী হয়েছিল হলিউড। ব্রুস লির ছেলে ২৮ বছর বয়সী ব্রান্ডন লি দ্য ক্রো ছবির একটি মৃত্যু দৃশ্যে অভিনয়ের সময় প্রপ গানে থাকা সত্যিকার গুলিতে নিহত হয়েছিলেন। লির শরীরে সত্যিকার গুলি লাগার পরও কেউ আসল ঘটনাটি বুঝতে পারেননি। সবাই ভাবছিলেন সব পরিকল্পনামতোই হচ্ছে। ক্যামেরাও রোল করছিল। কিন্তু লি যখন মাটিতে পড়ে যান তখন সবাই বুঝতে পারেন কী ঘটেছে।
হলিউডের একজন বিখ্যাত বৈমানিক স্টান্ট ছিলেন আর্ট শোল। তিনি দ্য রাইট স্টাফ, ইন্ডিয়ানা জোনস অ্যান্ড দ্য টেম্পল অব ডুম ছবিতে স্টান্টের কাজ করেছেন। টম ক্রুজের মিলিটারি অ্যাকশন ছবি টপ গানেও তিনি কাজ করছিলেন। কিন্তু এখানেই শেষ। আকাশে বিমানের স্টান্ট দৃশ্য ধারণ করার জন্য তিনি ছিলেন ক্যামেরা প্লেনে। কিন্তু হঠাৎ বিমানটি সাগরে আছড়ে পড়ে। তার রেডিও থেকে সর্বশেষ যা শোনা গিয়েছিল তা ছিল, ‘আমার বিমানে একটা বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে।’ শোল কিংবা বিমানটি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ভিন ডিজেলের স্টান্ট ডাবল হ্যারি ও’কনোর জীবন দেন শুটিং করতে গিয়েই। ২০০২ সালের অ্যাকশন ছবি ট্রিপল এক্সে তিনি ভিন ডিজেলের ডাবল হিসেবে স্টান্ট দৃশ্যে কাজ করছিলেন। প্যারাসেইলিংয়ের একটি দৃশ্যে ফার্স্ট টেকে সম্পন্ন করেন হ্যারি। দৃশ্যধারণ হচ্ছিল প্রাগে। আরেকটি দৃশ্যে প্যারাসেইলিং করার সময় প্যালাকি সেতুতে তার মাথা ঠুকে যায়। সেখানেই মৃত্যু হয় হ্যারির। ছবিটি হ্যারির নামে উৎসর্গ করা হয়েছিল।
ক্রিস্টোফার নোলানের দ্য ডার্ক নাইট ছবির সেটে এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান স্টান্টম্যান উইকলিফ। এ ঘটনায় ‘ব্যাটম্যানের অভিশাপ’-এর গুজবও ছড়িয়ে পড়েছিল। দৃশ্যটি ছিল চলন্ত গাড়ির জানালা দিয়ে বের হয়ে আসা। দৃশ্যটির অনুশীলনের সময় ঘটে দুর্ঘটনা, মোড় ঘুরতে গিয়ে গাড়ির চালক একটি গাছের গায়ে ধাক্কা দিয়ে বসেন। উইকলিফ মাথায় আঘাত পান এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।
তারকাখচিত অ্যাকশন ছবি দি এক্সপান্ডেবলস টুর সেটে ঘটেছিল মৃত্যুর ট্র্যাজেডি। বিস্ফোরণের একটি অ্যাকশন দৃশ্য ধারণ হচ্ছিল। দুজন স্টান্টম্যান বিস্ফোরণের একেবারে কাছে চলে গিয়েছিলেন। ফলে একজন স্টান্টম্যান নুয়ো সান মারাত্মক আহত হন আর কুন লিউ মারা যান। এ ঘটনার পর কুনের পরিবার ছবির প্রযোজকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। চার বছর মামলা চলার পর আদালত কুনের বাবা-মাকে ২ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে ছবির অভিনেতা জেট লি কুনের পরিবারকে ৮ লাখ ডলার সহায়তা দেন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া