কভিড-১৯ মহামারী

দরিদ্র দেশগুলোর ঋণের বোঝা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে

প্রকাশ: অক্টোবর ১৩, ২০২১

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড-১৯ মহামারীতে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে বিশ্ব। থমকে যায় অর্থনীতির চাকা। বন্ধের ঝুঁকিতে পড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পাশে দাঁড়ায় সরকার। দেয়া হয় আর্থিক প্রণোদনা সহায়ক মুদ্রানীতি ব্যবস্থা। এমন সহায়তা দিতে সরকারগুলো ঋণ গ্রহণের দিকে ঝুঁকেছে। ফলে মহামারীটি দরিদ্র দেশগুলোর ঋণের বোঝা রেকর্ড উচ্চতায় ঠেলে দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেবট স্ট্যাটিসটিকস ২০২২ শীর্ষক প্রতিবেদনে তথ্য উঠে এসেছে। খবর রয়টার্স।

বিশ্বব্যাংক বলছে, মহামারীর কারণে বিশ্বের নিম্ন আয়ের দেশগুলোর ঋণের পরিমাণ ২০২০ সালে রেকর্ড ৮৬ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। ৭০টিরও বেশি নিম্ন আয়ের দেশগুলোর ঋণের পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালে বৃদ্ধির হার ছিল দশমিক শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিয়ে সতর্ক করেছে বৈশ্বিক ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি ঋণের পরিমাণ কমাতে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটনভিত্তিক ব্যাংকটি।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাস বলেন, নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ঋণের পরিমাণে নাটকীয় বৃদ্ধি দেখা গেছে। ভাইরাসটি ধনী দরিদ্র দেশগুলোর ব্যবধানকে আরো বিস্তৃত করেছে। পাশাপাশি এটি কয়েক বছরের অর্জিত অগ্রগতি মুছে পেছনে ঠেলে দিয়েছে। মহামারীর প্রভাবে কিছু দেশ এক দশক পর্যন্ত পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তিনি দেশগুলোর ওপর থেকে ঋণের চাপ কমাতে সহায়তা করার জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, এখানে একটি বিশেষ সমস্যা হলো দেউলিয়া হওয়ার মতো প্রক্রিয়ার অভাব। ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা হারালে ঘোষণার মাধ্যমে সহায়তা করা হয়। বর্তমান ব্যবস্থার অধীনে কোনো প্রতিষ্ঠান নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করতে পারে। তবে কোনো দেশ এমনটা করতে পারে না।

এদিকে চলতি বছর উন্নয়নশীল দেশে দশমিক শতাংশের তুলনায় উন্নত দেশে মাথাপিছু আয় গড়ে শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এমন বৈষম্য পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে তুলছে বলেও মনে করেন তিনি।

নতুন প্রতিবেদনের সঙ্গে একটি বিবৃতিতে মালপাস বলেন, ঋণ হ্রাস, দ্রুত পুনর্গঠন স্বচ্ছতাসহ ঋণ সমস্যার জন্য আমাদের একটি বিস্তৃত পদক্ষেপের প্রয়োজন। বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর অর্ধেকই বৈদেশিক ঋণের সংকটে কিংবা ঝুঁকিতে রয়েছে। দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং দারিদ্র্য কমাতে সহায়তা করার জন্য ঋণের সহনশীল মাত্রা প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মোট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ২০২০ সালে দশমিক শতাংশ বেড়ে লাখ ৭০ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছে। বৈদেশিক ঋণের এমন বৃদ্ধি দেশগুলোর মোট জাতীয় আয় (জিএনআই) এবং রফতানি প্রবৃদ্ধিকেও ছাড়িয়ে গেছে। চীন বাদ দিয়ে দেশগুলোর জিএনআইয়ের বিপরীতে বৈদেশিক ঋণের অনুপাত ২০২০ সালে শতাংশ পয়েন্ট বেড়ে ৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যেখানে রফতানি আয়ের বিপরীতে দেশগুলোর ঋণের অনুপাত ১৫৪ শতাংশে পৌঁছেছে। এর আগে ২০১৯ সালে হার ১২৬ শতাংশ ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহুমুখী ঋণদাতাদের থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় নিট প্রবাহ ১১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। এর ঋণের পরিমাণ এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এমন দাতাদের থেকে নেয়া নিম্ন আয়ের দেশগুলোর নিট ঋণ ২৫ শতাংশ বেড়ে হাজার ১০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। ঋণেরও পরিমাণও এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ কারমেন রেইনহার্ট বলেন, সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় অত্যন্ত ঋণগ্রস্ত দেশগুলোর মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জকে আরো ভয়াবহ করে তুলতে পারে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫