সানোফি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস

প্রকাশ: অক্টোবর ০৩, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফ্রেঞ্চ ফার্মাসিউটিক্যালস জায়ান্ট সানোফির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেডের ৫৪ দশমিক শতাংশ শেয়ার কেনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় কোটি ৯৩ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড ব্যয় হয়েছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৪৬৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার বিষয়টি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এর আগে সম্প্রতি সানোফি বাংলাদেশকে অধিগ্রহণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন পাওয়ার পর শেয়ার ক্রয় চুক্তি (এসপিএ) স্বাক্ষর করা হয়েছে। প্রথমে বছরের ২৪ জানুয়ারি সানোফিকে অধিগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।

প্রস্তাবিত অধিগ্রহণের মাধ্যমে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি পোর্টফোলিওতে নতুন পণ্য যোগ করবে, যা কোম্পানিটিকে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ উৎপাদক হিসেবে অবস্থান করে নিতে সহায়ক হবে। ১৯৫৮ সালে মে অ্যান্ড বেকার নামে বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করে সানোফি। শুরু থেকেই বাংলাদেশে বেশ সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছে সানোফি। ঢাকার অদূরে টঙ্গীতে রয়েছে তাদের একটি অত্যাধুনিক ওষুধ তৈরির কারখানা। তাছাড়া আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের বিভিন্ন ভ্যাকসিন, ইনসুলিন কেমোথেরাপির নানা ওষুধ বাংলাদেশে আমদানি করে সানোফি। হূদরোগ, ডায়াবেটিস, টিউমার চিকিৎসা, চর্মরোগ সিএনএসে সানোফির ওষুধ বহুলভাবে ব্যবহূত হয়। কোম্পানিটির বহুল প্রচলিত ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে লান্টাস, এপিড্রা, ফিমোক্সিল, ফ্লাজিল, এভিল এন্টারোজারমিন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

দীর্ঘ ছয় দশকের পথচলায় বেশ কয়েকবার নাম বদল করেছে বাংলাদেশে সানোফির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। ২০০৪ সালে তিনটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান অ্যাভেন্টিস বাংলাদেশ লিমিটেড, ফাইসন্স (বাংলাদেশ) লিমিটেড হোয়েস্ট বাংলাদেশ ম্যারিয়ন রোজেল লিমিটেড একীভূত হয়ে সানোফি-অ্যাভেন্টিস বাংলাদেশ নাম নেয়। এরপর ২০১৩ সালে কোম্পানিটির নাম বদলে সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেড রাখা হয়।

ব্যবসা গুটিয়ে বাংলাদেশ ছাড়ার ঘোষণা ২০১৯ সালের অক্টোবরেই দিয়েছিল ওষুধ খাতের বৈশ্বিক জায়ান্ট সানোফি। ওই সময় সানোফি বাংলাদেশ লিমিটেডে থাকা শেয়ার হস্তান্তরের জন্য ক্রেতা খোঁজার কথাও জানায় প্রতিষ্ঠানটি। ঘোষণার ১৪ মাস পর শেয়ার হস্তান্তরের জন্য বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

চুক্তির আওতায় বেক্সিমকো ফার্মা তাদের টঙ্গীর কারখানার কাছে ২৫ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত পিআইসি/এস অনুমোদনযোগ্য একটি সেফালোস্পিরিন অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির কারখানাসহ অন্যান্য ওষুধ তৈরির কারখানার মালিকানা পাবে। সানোফির ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশে বিপণনের ক্ষেত্রেও অগ্রাধিকার সুনিশ্চিত হবে চুক্তির মাধ্যমে। সানোফির সুষম ক্রমবর্ধমান পোর্টফোলিও বেক্সিমকোর বর্তমান পোর্টফোলিওকে আরো শক্তিশালী প্রসারিত করবে, যা ভবিষ্যতে কোম্পানির বিকাশ, সহজলভ্য ওষুধ অত্যাধুনিক চিকিৎসার প্রতিশ্রুতিকে জোরদার করবে।

৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে সানোফি বাংলাদেশের আয় হয়েছে ৩০৩ কোটি টাকা। সময়ে কোম্পানিটির কর-পূর্ববর্তী মুনাফা হয়েছে ২৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সানোফি বাংলাদেশের বর্তমানে প্রায় ৬৪০ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।

সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২০-২১ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের আয় দাঁড়িয়েছে হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল হাজার ৯১০ কোটি টাকা। সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ২৬৫ কোটি টাকা। তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩৬৯ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল ২৬২ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১০৭ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে টাকা ২৩ পয়সা। যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল টাকা ৮৪ পয়সা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার ২৪০ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন দর ছিল ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা সর্বোচ্চ দর ২৫১ টাকা ৮০ পয়সা।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫