বিধিনিষেধ বাড়ল ১০ আগস্ট পর্যন্ত খুলছে দোকানপাট

প্রকাশ: আগস্ট ০৪, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশে চলমান লকডাউনের সময়সীমা আরো পাঁচদিন বাড়িয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগস্ট থেকে এক সপ্তাহ ব্যাপকভিত্তিক টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনার পর ১১ আগস্ট থেকে দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অফিস খুলবে। সীমিত পরিসরে যানবাহনও চলবে। তবে টিকা না নিয়ে কেউ দোকান খুলতে বা বাইরে বেরোতে পারবেন না। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বের কেউ টিকা না নিয়ে বাইরে চলাফেরা করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

গতকাল নভেল করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভা শেষে এসব তথ্য জানান বৈঠকের সভাপতি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

মোজাম্মেল হক বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আগামী এক সপ্তাহে এক কোটির বেশি মানুষকে টিকা দেবে। প্রত্যেক ওয়ার্ডে ন্যূনতম দুটি করে কেন্দ্রে টিকা দেয়া হবে। ফলে আশা করছি কষ্ট করে টিকা নেয়ার পেছনে দৌড়াতে হবে না। প্রায় ১৪ হাজার কেন্দ্রে একসঙ্গে সপ্তাহব্যাপী টিকা দেয়া হবে। সেখানে বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। শ্রমজীবী মানুষ, দোকানদার, বাসের হেলপারদের টিকা দেয়া হবে। টিকা না দিয়ে কেউ কোনো কর্মস্থলে আসতে পারবেন না। যার যার এলাকা থেকে টিকা নিতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, টিকা না নিয়ে কেউ দোকান খুলতে বা বাইরে বেরোতে পারবেন না। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যারা বাইরে চলাফেরা করবেন, তারা টিকা না নিয়ে চললে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। কেউ ভ্যাকসিন নিয়েছেন কিনা, সেই তথ্য ওয়েবসাইটে চলে যাবে, কেউ মিথ্যা বলতে পারবেন না। দোকানপাট খোলার আগে , , আগস্ট তিনদিন সুযোগ রাখলাম। সময়ের মধ্যে যাতে টিকা নিতে পারে সেই সুযোগ দিচ্ছি। ১১ আগস্ট থেকে যাতে দোকানপাট খুলতে পারে সভায় সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

দেশেই নভেল করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনা কতদিন চলবে কেউ জানে না। যত শিগগির সম্ভব নিজেরা বা অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করে যাতে টিকা তৈরি করতে পারি। সেটা হলে সবাইকে টিকা দিয়ে দেব। চেষ্টা করব যাতে চার-পাঁচ মাসের মধ্যে টিকা দেশে উৎপাদন করা যায়।

সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আগস্ট থেকে সাতদিনের জন্য বাংলাদেশ প্রত্যেকটি ইউনিয়ন-ওয়ার্ডে টিকা দেয়ার কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। সাতদিনে আমরা প্রায় এক কোটি টিকা দেব। এজন্য সভায় বিভিন্ন দপ্তরের সাহায্য চাওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে গ্রামের বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেব।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের হাতে সোয়া কোটি টিকা আছে। আরো এক কোটি টিকা শিগগির আমাদের হাতে এসে পৌঁছবে। অর্থাৎ টিকা কর্মসূচি বজায় থাকবে। এমনকি এনআইডির (জাতীয় পরিচয়পত্র) মাধ্যমে আমরা টিকা দেব। যাদের এনআইডি নেই, তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা দেয়া হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, এরই মধ্যে আমরা চীনের সিনোফার্মের সঙ্গে এবং বাংলাদেশের একটি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেই টিকা উৎপাদন করার কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমতিও পেয়েছি।

করোনা মহামারীর দেড় বছরে এখনই সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা পার করছে বাংলাদেশ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে আক্রান্ত মৃত্যুর রেকর্ডের পর রেকর্ড হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত জুলাই দেশে লকডাউন জারি করা হলেও বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা করে ঈদুল আজহার সময় নয়দিন তা শিথিল করা হয়েছিল। ঈদের ছুটির পর ২৩ জুলাই থেকে আবার লকডাউন শুরু হলেও এর মধ্যে দৈনিক সংক্রমণ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে।

সরকার আগে ঘোষণা দিয়েছিল, আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লকডাউনে শিল্প-কারখানা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সব ধরনের অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে। তবে শিল্প-কারখানা মালিকদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে রোববার থেকে রফতানিমুখী কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চলমান কঠোর লকডাউনের সময়সীমা আরো বাড়ানোর পক্ষেই মত দিয়েছিল।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫