বিতর্ক সৃষ্টি করে আলোচনায় আসার ইচ্ছা নেই

প্রকাশ: জুলাই ২৯, ২০২১

২০১৩ সালে ভালোবাসা জিন্দাবাদ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড় পর্দায় যাত্রা করেন আইরিন সুলতানা তার আগে আফসানা মিমির পরিচালনায় টিভি ধারাবাহিক পৌষ ফাগুনের পালা অভিনয় করেন। দেশ-বিদেশে বহু র‌্যাম্পমডেলিংয়ে অংশ নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন দ্য পেপার নামের একটি সিনেমায়। বণিক বার্তাকে বলছিলেন কাজ ব্যক্তিজীবনের নানা প্রসঙ্গে। সাক্ষাত্কার নিয়েছেন মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ

নতুন একটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। সিনেমার নাম কাগজ: দ্য পেপার?

অনেক গণমাধ্যম এভাবে লিখেছে। আসলে সিনেমার নাম কাগজ: দ্য পেপার না। সিনেমাটার নাম দ্য পেপার। বাংলায় হচ্ছে কাগজ। এটা সবাই ভুল করছে। সবাইকে অনুরোধ করব সিনেমার নাম এভাবেই লিখতে দ্য পেপার।

দ্য পেপার কী ধরনের সিনেমা?

এটাকে আমি কোন ধরনের বা কোন জনরার সিনেমা বলব? থ্রিল, রিভেঞ্জ জনরার সিনেমা বলতে পারবেন।

সিনেমার বিষয়বস্তু কী? আপনার চরিত্র সম্পর্কে যদি একটু বলতেন?

সিনেমার বিষয়বস্তু লেখকের ফিলোসফি। আমার চরিত্র কী, চরিত্রের নাম কীএসব এখন বলতে চাইছি না। সময় হলে সব জানতে পারবেন। এখন এটুকু বলতে পারি, সিনেমাটি রচনা পরিচালনা করছেন জুলফিকার জাহেদী। আমার সঙ্গে জুটি বাঁধবেন ইমন। এছাড়া শহীদুজ্জামান সেলিম, মাইমুনা ফেরদৌস মম, রিয়া বর্মণসহ অনেকেই অভিনয় করবেন।

হূদ মাঝারে তুমি চৈত্র দুপুর নামে দুটি সিনেমায় কাজ করছিলেন। সিনেমা দুটির খবর কী?

হূদ মাঝারে তুমি সিনেমাটা পরিচালনা করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান বাবু ভাই। সিনেমার কাজ শেষ। আশা করি মহামারীর প্রাদুর্ভাব কমলে এবং জনজীবন স্বাভাবিক হলেই মুক্তি দেয়া হবে। চৈত্র দুপুর সিনেমাটা পরিচালনা করছেন জেসমিন নদী। সিনেমার অর্ধেকের মতো কাজ হয়ে গেছে। গত মাসে শুটিং হওয়ার কথা ছিল। লকডাউন শুরু হওয়ায় কাজ বন্ধ আছে।

২০১৩ সালে আপনার প্রথম সিনেমা ভালোবাসা জিন্দাবাদ মুক্তি পায়। তখন মনে হচ্ছিল বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকরা বেশ দাপুটে একজন অভিনেত্রী পেতে যাচ্ছে। সিনেমাটা বেশ সাড়াও ফেলেছিল। এরপর আপনি কেমন যেন অনিয়মিত হয়ে গেলেন?

আমি অনিয়মিত হয়ে যাইনি। সে সময় আমার কাছে নতুন ছবির প্রস্তাব নিয়ে কেউ আসেননি। পরিচালক, প্রযোজকরা যদি আমাকে নিয়ে চিন্তা না করেন, তাহলে তো আমি কিছু করতে পারি না। এটার দায়ভার আমার একার না। আমি তো আর পরিচালক, প্রযোজক না যে নিজের সিদ্ধান্তে ধারাবাহিকতা মেইনটেইন করতে পারব। আমাকে নিয়ে কেউ চিন্তা করেনি, নতুন কোনো প্রজেক্ট আমার কাছে আসেনি। ফলে নিয়মিত কাজ করা হয়ে ওঠেনি।

তাহলে কি বলা যায়, পরিচালক-প্রযোজকরা আপনাকে পড়তে পারেননি?

হ্যাঁ, অবশ্যই বলা যায়। না হলে আমার কাছে অনেক কাজের প্রস্তাব আসত।

সিনেমায় এখন একটা পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। যারা ভালো কাজ করছেন তাদের ব্যস্ততা বেড়েই চলছে। আপনি যেহেতু সিনেমায় ফিরলেন, সময়টা কীভাবে কাজে লাগাতে চান?

আমি পরিকল্পনা করলে তো হবে না। এই যে নতুন একটা ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হলাম, যার কারণে আপনি আমাকে কল করলেন সিনেমার পরিকল্পনা তো আমার না। সিনেমার ক্রিয়েটর জুলফিকার জায়েদি, তিনি আমাকে নিয়ে করেছেন, রকম একটা চরিত্রে আমাকে ভেবেছেনএজন্যই তো কাজটা করা হচ্ছে। আমি তো কোনো চিন্তা সৃষ্টি করতে পারব না। ডিরেক্টরদের এটা ভাবতে হবে। আমি মুখে মুখে বলে রাখলাম এটা করব, সেটা করব, অথচ ডিরেক্টররা আমাকে নিয়ে ভাবলেন না, তাহলে কাজ হবে কী করে? ভালো কোনো চরিত্রে আমাকে যদি ডাকা হয় তাহলে অবশ্যই নিয়মিত হতে পারব। সুতরাং আমার পরিকল্পনা একটাই, যে চরিত্রের জন্য আমাকে নেয়া হচ্ছে, আমি যেন সেই চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে পারি।

সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে শিল্পীরা নিজেকে আলোচনায় রাখার জন্য নানা কর্মকাণ্ড করেন। আলোচনার ভিত্তিতে পরিচালক-প্রযোজকরাও সেই শিল্পীর প্রতি আগ্রহী হন। আপনি কি মনে করেন বিতর্ক সৃষ্টি না করার কারণে পরিচালকরা আপনাকে নিয়ে কম ভাবেন?

হা-হা-হা (হাসি), বিতর্ক কেন সৃষ্টি করতে যাব? আমি বিশ্বাস করি আরোপিত কোনো কিছুই সুখকর না। শো অফ জিনিসটা আমার একেবারেই পছন্দ না। আমি যে রকম রকমই। একটা ক্যারেক্টার প্লে করার জন্য আমার রিয়েল লাইফে অভিনয়ের দরকার নেই। বন্ধু, পরিবার, সমাজ নিয়েই আমার ব্যক্তিগত জীবন। আমার লক্ষ্য কাজের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছানো। কাজ দেখে মানুষ যদি আলোচনা করে, তর্ক-বিতর্ক করে, সেটাই হবে আমার পাওয়া। কিন্তু ব্যক্তিজীবনে অভিনয় করে বা বিতর্ক সৃষ্টি করে আলোচনায় আসার কোনো ইচ্ছা প্রয়োজন আমার নেই। আমি চাই আমার কাজ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হোক, ব্যক্তিজীবন নিয়ে নয়।

আপনি দেশ-বিদেশের র‌্যাম্পে বহু শো করেছেন? চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ক্ষেত্রে র‌্যাম্প মডেলিংয়ের অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছে?

র‌্যাম্পে তো বিভিন্ন ডিজাইনারের ডিজাইন করা ড্রেস পরে মানুষের কাছে যাওয়া। অবশ্যই ক্ষেত্র থেকে কাজ করার একটা সাহসিকতা তৈরি হয়েছে। ক্যামেরা ফ্রেন্ডলি হয়েছি। ক্যামেরা ভীতি দূর হয়েছে। এছাড়া আমি বুঝতে শিখেছি আমাকে কীভাবে সুন্দর লাগে। র‌্যাম্প থেকে শেখার অনেক কিছু আছে, যা চলচ্চিত্রে কাজ করতে গিয়ে কাজে লেগেছে।

আপনার প্রিয় পোশাক?

মডেল হিসেবে নানা ধরনের পোশাক পরতে হয়। তার মধ্যে শাড়ি আমার প্রিয়। কিন্তু শাড়ি খুবই কম পরা হয়।

প্রসাধনীর ক্ষেত্রে প্রিয় কোনো ব্র্যান্ড আছে?

আমার প্রসাধনী একেকটা একেক ব্র্যান্ডের। এর মধ্যে ম্যাক, ক্রায়োলন, লিক, ডব্লিউ সেভেন ব্র্যান্ডগুলোর প্রসাধনী বেশি কেনা হয়।

 শৈশবের কোনো শখের কথা মনে পড়ে?

নানা ধরনের কলম সংগ্রহের ভীষণ শখ ছিল আমার। নতুন ধরনের কলম পেলেই সংগ্রহে রাখতাম। অনেক অনেক কলম থাকত আমার কাছে। এছাড়া গাছের প্রতি অসম্ভব ভালো লাগা কাজ করত। বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ কিনে বা সংগ্রহ করে ছাদে বাগান করা হতো। আর নায়ক-নায়িকাদের নিয়ে যে ভিউকার্ড ছাপা হতো, এগুলো খুব যত্ন করে সংগ্রহ করতাম।    


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫